মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও অসহনীয় গরম কেন?

রবিবার (০৯ জুন) দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে হেঁটে হেঁটে বাংলামোটরের দিকে যাচ্ছিলেন বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সায়মুন হক। তাকে দেখে বেশ বিমর্ষ লাগছিল। হাতে থাকা রুমাল দিয়ে বার বার মুখমণ্ডলের ঘাম মুছছিলেন। গায়ের জামাটিও ঘামে বেশ ভিজে গেছে।
কথা হলে সায়মুন হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বর্ষাকাল শুরু হলেও বৃষ্টি নেই। মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও ঘামছি অনবরত। প্রখর রোদের মধ্যেও এতটা গরম অনুভূত হয় না, যতটা এখন হচ্ছে।''
সবশেষে তিনি প্রশ্ন করেন, ''মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও এমন অসহনীয় গরম কেন?''
শুধু সায়মুন হকই নন, গত কয়েকদিন ধরে মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও অসহনীয় গরম অনুভূত হওয়ায় অনেকেরই এ প্রশ্ন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকায় আজ রবিবার দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭২ শতাংশ। সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হলেও ঢাকা, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে গত দুই তিনদিনে বৃষ্টি হয়নি। হলেও অতি সামান্য। মৌসুমি বায়ুর কারণে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে সারাবিশ্ব চরম আবহাওয়ার সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। সারা দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টি না হলে এবং আর্দ্রতা না কমলে অসহনীয় তাপমাত্রা কমবে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের গড় তাপমাত্রা থেকে বর্তমান বিশ্বের তাপমাত্রা ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ২০২৩ সালের মে মাসে এটি ছিল ০.৬ ডিগ্রি বেশি। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সারাবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের তাপমাত্রাও বেশি।'
তিনি জানান, আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বাতাসের কারণে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এই আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, ''আর্দ্রতা বেশি থাকা এবং গরম বাতাসের কারণে তাপমাত্রা কম থাকা বা মেঘলা আবহাওয়ার পরও গরমের অনুভূতি বেশি হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে জলীয়বাষ্প প্রবেশ করছে, যা গরমের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।"