আকাশ মেঘলা থাকলেও অস্বস্তিতে ভোগাতে পারে ঈদের আবহাওয়া

গত কয়েকদিন ধরে কিছু জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে এবারের ঈদে আবহাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা থাকতে পারে। এবারের ঈদুল ফিতরে বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
তবে এই মেঘলা আবহাওয়া দিন ও রাতে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। এবার যদি রমজান ২৯ দিনের হয়, তাহলে পবিত্র ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ উদযাপিত হবে। আর রমজান ৩০ দিনের হয়, তাহলে ঈদ হবে ১ এপ্রিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোর ও সিরাজগঞ্জ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাকি অংশ এবং মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাঙ্গামাটি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় যশোরে, ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯.৮, সাতক্ষীরা ও মোংলায় ৩৯.৫ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৩৯.৭ ডিগ্রি, পাবনায় ৩৯.৮ ডিগ্রি ও বাঘাবাড়ীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'শনিবারে তাপমাত্রা কিছু এলাকায় কমে আসছে। তবে কিছু এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। ঈদে দেশের তাপমাত্রা বর্তমানের চেয়ে কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।'
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বর্তমানে দেশের কিছু কিছু এলাকায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা থাকলেও ঈদের দিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে।
চলতি মাসে এর আগে একদফা তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এরপর গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আকাশ মেঘলা হয়ে পড়ে। রাজধানী ঢাকায় কিছুটা বৃষ্টি হয়। বেশি বৃষ্টি হয় উত্তর-পূর্বের সিলেট ও এর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে। এরপর থেকে তাপমাত্রা খানিকটা কমতে শুরু করে।
তবে গত সোমবার থেকে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই প্রবণতা শনিবার থেকে কমে আসছে, এমনটাই বলছেন আবহাওয়াবিদেরা।
ঈদ ৩১ মার্চ বা ১ এপ্রিল যেদিনই হোক না কেন, তপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম।
শাহীনুল টিবিএসকে বলেন, '৩১ মার্চ ঈদ হলে সেদিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকবে। এ সময় আর্দ্রতা বেশি থাকায় শরীরের ঘাম কম শুকাবে এবং অস্বস্তি বাড়িয়ে দেবে। ফলে ঈদের দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে অস্বস্তিতে ভুগতে হতে পারে। রাতে এই অস্বস্তি বেশি অনুভূত হতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'তবে বর্তমান এই সময় কালবৈশাখীর মৌসুম হওয়ায় তার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদিও কালবৈশাখীর সতর্কবার্তা ৬ ঘণ্টার আগে দেওয়া সম্ভব নয়। বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও বিচ্ছিন্নভাবে কালবৈশাখী ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।'
ঈদের দিন বেশি করে পানি পান, ছায়া ও বাতাস প্রবহমান এলাকায় থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
শাহীনুল বলেন, শনিবারের পর থেকে তাপমাত্রা একটু কমতে পারে। ঈদের দিনে তাই একেবারে অসহনীয় গরম হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এলাকাভেদে তাপমাত্রার হেরফের হতে পারে। তবে ঈদের দিন তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। এই ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের যেসব অঞ্চল থেকে বায়ুপ্রবাহ বাংলাদেশে প্রবেশ করে, সেখানকার তপ্ত হাওয়া। এর হেরফেরে তাপমাত্রা এখন যা ধারণা করা হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি হতে পারে।
ঈদের দিন (৩১ মার্চ অথবা ১ এপ্রিল) দেশের দক্ষিণ-পূর্বের চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক স্থানে সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারের কিছু স্থানে এই বৃষ্টি হতে পারে। তবে এর পরিমাণ খুব সামান্য হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।