চট্টগ্রামে গুদামের আগুন একদিন পরও পুরোপুরি নেভানো যায়নি

চট্টগ্রামে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের গুদামে গত সোমবার (৪ মার্চ) লাগা আগুন গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত পর্যন্তও পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
এর আগে সোমবার বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে গুদামটিতে আগুন লাগে। এদিন রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়েও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। গতকাল রাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছিলেন তারা।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আগুন অর্ধেক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে কত সময় লাগবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।'
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কমিটিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানকে প্রধান করা হয়েছে।
এ কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখছে। তাদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
চিনির বাজারে অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব পড়বে না: এস আলম গ্রুপ
মঙ্গলবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের পরিস্থিতি দেখতে ঘটনাস্থলে যান এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আগুনে গুদামের ক্ষয়ক্ষতি হলেও কারখানার কোনো ক্ষতি হয়নি। ফলে দুয়েকদিনের উৎপাদন শুরু করা যাবে।'
গ্রুপটির পক্ষ থেকে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগুনে প্রায় এক লাখক টন অপরিশোধিত চিনি পুড়ে গেছে।
এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আসছে রমজান মাসে চিনির বাজারে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন অনেকেই।
তবে এস আলম গ্রুপ বলছে, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি আরও তিন-চারটি গুদাম রয়েছে। আগুনে সেগুলোয় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এসব গুদামে ছয় লাখ থেকে ৭ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি মজুদ রয়েছে। তাই চিনির বাজারে দীর্ঘমেয়াদি সংকটের কোনো ভয় নেই।
গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান বলেন, 'বাজারে সরবরাহের জন্য যথেষ্ট চিনি আমাদের কাছে মজুদ রয়েছে। আগামী কয়েক দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।'
চট্টগ্র্রামে আগুনে পুড়ল ১৮টি বসতঘর
এদিকে গতকাল ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগরে আগুন লেগে ১৮টি বসত ঘর ও দুটি গরু মারা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদুল হক সুমন ও কর্ণফুলী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শোয়েব হোসেন মুন্সি জানান, গোয়ালঘরে লাগানো মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া এসব ঘরবাড়িতে প্রায় ৪০-৫০টি পরিবার বাস করত।