‘নো করিডর, নো পোর্ট’: ২৭-২৮ জুন রোডমার্চ করবেন বামপন্থীরা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টিনেন্টাল টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়া এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে যা বলেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা।
এরই জেরে আগামী ২৭-২৮ জুন চট্টগ্রাম থেকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় রোডমার্চ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, রাখাইনকে করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টিনেন্টাল টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে এবং এ নিয়ে বিরোধিতাকারীদের নিয়ে ভাষণে যা বলা হয়েছে এবং যে সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন ঘোষণা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ বিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সব বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি আহ্বান জানায় বাম জোট।
জোটের নেতারা বলেন, বেশিরভাগ দল ও জনগণের মতকে উপেক্ষা করে বিশেষ দল-গোষ্ঠীর স্বার্থে এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ড. ইউনূস নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে যেসব কথার অবতারণা করেছেন, তা কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ গ্রহণ করতে পারে না উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান জোটের নেতারা।
তাদের ভাষ্য, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণকারী আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা প্রকারান্তরে 'মব সন্ত্রাসকে' উসকে দিচ্ছে। সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কোনো পদে থেকে এ ধরনের উসকানি জনগণ গ্রহণ করবে না; বরং প্রত্যাখ্যান করবে।
চট্টগ্রাম বন্দর প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক। এই বন্দর বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার অর্থ দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানার পথ পরিষ্কার করা। দেশের বামপন্থী গণতান্ত্রিক দল ও দেশপ্রেমিক দলসমূহ সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আগামী ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম 'রোডমার্চ' কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
মাসুদ রানা বলেন, বন্দর, করিডর এই বিষয়গুলোর সাথে দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা, পাশ্ববর্তী দেশের সাথে সম্পর্কের বিষয় যুক্ত। ফলে এই বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন। অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কোনো আলোচনা করেনি।
তিনি বলেন, এই সরকারের মূল ম্যান্ডেট বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। অথচ বিচার কাজ এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। সংস্কারের রোডম্যাপ স্পষ্ট নয়। নির্বাচন বেশিরভাগ দল ডিসেম্বরে চাইলেও সরকার এপ্রিলের প্রথমার্ধে করার কথা বলছে। অভ্যুত্থানকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকার নানাভাবে দূরত্ব তৈরি করেছে।