ফরিদপুরে আগাম মুড়ি কাটা পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক
দেশে যখন পেঁয়াজের দাম নিয়ে জনপরিসরে আলোচনা, তখন ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকরা আগাম মুড়ি কাটা জাতের পেঁয়াজ ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। এই পেঁয়াজ এখনো বেশিরভাগ জায়গায় তেমন একটা পরিপুষ্ট হয়নি। তবে বেশি দামের আশায় কৃষকরা নির্ধারিত সময়ের আগেই জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে বাজারে আনতে শুরু করেছেন।
আগাম এ পেঁয়াজ গত কদিন ফরিদপুরের বিভিন্ন হাটে পাইকারি প্রতিকেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) ফরিদপুর সদর, সালাথ, সদরপুর ও নগরকান্দার বিভিন্ন বাজারে এ পেঁয়াজ দেখতে পাওয়া যায়, যা কৃষকরা ক্ষেত থেকে তুলে এনে বিক্রি করছেন।
কৃষক ও পেঁয়াজের আড়তদাররা জানিয়েছে, আগামী এক/দুই সপ্তাহের মধ্যে মুড়ি কাটা জাতের পেঁয়াজ পুরোপুরিভাবে বাজারে আসতে শুরু হলে দাম কমে যাবে।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার মমিনখার এলাকার কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বাজার আসতে আরও কিছুদিন দেরি হতো, কিন্তু বাজারদর বেশি থাকায় আমরা এখন দ্রুত এ ফসল তুলে ফেলছি। তিনি বলেন, পেঁয়াজ অনেকটাই পরিপক্ক, আর তাই সংগ্রহ করা হচ্ছে। অবশ্য, আরো দুই-এক সপ্তাহ ক্ষেত্রে থাকলে বেশি ভালো হতো।
একই এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, এখন দাম অনেকটা ভালো যে কারণে আমরা দ্রুত পেঁয়াজ কেটে বাজারে নিচ্ছি।
এদিকে ফরিদপুর হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজারের আল মদিনা ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেন হাওলাদার জানান, আমরা ৪,৪০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা মন দরে মুড়ি কাটা পেঁয়াজ কৃষকের কাছ থেকে কিনেছি। ভোক্তা পর্যায়ে যা আমরা বিক্রি করেছি ১২০ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন, আমরা কোন সিন্ডিকেট করে এখানে পেঁয়াজের দাম বাড়াইনি। কৃষকের কাছ থেকে বেশি দরে কেনার কারণেই আমরা বেশি দরে বিক্রি করছি।
ফরিদপুরে এবার ৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। আর হালি পেঁয়াজের বীজতলায় চারা আবাদ করা হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ ফরিদপুরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজ আবহাওয়া খারাপের আগেই উঠানো শুরু হয়েছিল, যেগুলো আগে লাগিয়েছিল কৃষক। এখন ভালো দাম পাওয়ায় যে পেঁয়াজ একটু পোক্ত হয়েছে, সেগুলো তারা উঠিয়ে ফেলছেন। এই পেঁয়াজ রাখার কোন সুযোগ নেই, অতি দ্রুত বিক্রি করে ফেলতে হয়। যে কারণে কৃষকরা দেরীও করছেন না। তিনি বলেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজ আরো এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত মাঠ থেকে উঠানোর কাজে ব্যস্ত থাকবে কৃষক।
