Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
August 06, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, AUGUST 06, 2025
করতোয়া: যেভাবে খুন হলো এক নদী

বাংলাদেশ

খোরশেদ আলম
24 March, 2023, 04:00 pm
Last modified: 24 March, 2023, 04:13 pm

Related News

  • নদী দখল ও দূষণকারী কারখানা পেল 'গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড'
  • পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন নয়: প্রধান উপদেষ্টা
  • টিএমএসএস-এর অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নদীর জমি উদ্ধার করল বগুড়া জেলা প্রশাসন
  • করতোয়া নদীর ১৬.৯৭ একর জায়গা দখল করেছে টিএমএসএস; উচ্ছেদ অভিযান শুরু: ডিসি
  • ‘নদীগুলো হারিয়ে গেলে ভবিষ্যতে কবরের জমিও পাওয়া কঠিন হবে’: উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান

করতোয়া: যেভাবে খুন হলো এক নদী

খুলসি থেকে বগুড়ার দিকে পথ ধরলে বোঝা যাবে না কোনটা নদী আর কোনটা ধানক্ষেত। যতদূর চোখ যায় সবুজ ধান গাছ। একটু চক্ষু স্থির করলে উঁচু নিচু ঢেউ দেখে বুঝে নিতে হবে করতোয়ার অস্তিত্ব।
খোরশেদ আলম
24 March, 2023, 04:00 pm
Last modified: 24 March, 2023, 04:13 pm
ছবি- টিবিএস

এক সময়ের খরস্রোতা নদী করতোয়া। যে নদীতে চলতো বড় বড় নৌ-যান, সেখানে এখন আর ডিঙি নৌকাও চলে না। সময়ের বিবর্তনে এ নদী পরিণত হয়েছে মরা খালে। শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে আবার বর্ষায় ছোট্ট বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হন গ্রামের মানুষ।

দৃশ্যটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের খুলসি এলাকার। এই এলাকা দিয়েই বগুড়ার দিকে প্রবেশ করে করতোয়া। আশির দশকে এখানেই স্লুইস গেট নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারপর থেকেই বিপন্ন হতে থাকে করতোয়ার অস্তিত্ব। প্রবাহ না থাকায় করতোয়াকে ঘিরে শুরু হয় দখল-দূষণের উৎসব।

গোবিন্দগঞ্জের খুলসি থেকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার দুবলাগাড়ী পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার করতোয়া এখন পরিণত হয়েছে ভাগারে। ইচ্ছে মতো নদীর বুক দখল করে প্রভাবশালীরা গড়েছেন বিভিন্ন স্থাপনা। দখল-দূষণে পিছিয়ে নেই সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও।   

নদীর পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে গোবিন্দগঞ্জের খুলসিতে কথা হয় স্থানীয় মসজিদের ইমাম জহুরুল ইসলামের (৬৬) সাথে। তার বয়স যখন ২৫ তখনও করতোয়ার ভরা যৌবন দেখেছেন। বর্ষায় মাছ ধরেছেন। কলা গাছের ভেলায় নদী পার হয়েছেন। ফুসে ওঠা করতোয়ার উপচে পড়া ঢেউ আছড়ে পড়েছে আশেপাশের গ্রামে।

বেঁচে থাকতেই সেই নদীর কঙ্কাল দেখতে হবে ভাবতে পারেননি বলে আক্ষেপ করে জহুরুল বলেন, 'একটা নদী একটা সম্পদ। নদী কতোভাবে মানুষের উপকার করে সেটা বুঝলে আমরা এই করতোয়ার সর্বনাশ হতে দিতাম না।'

ছবি- টিবিএস

'স্লুইস গেট দেওয়ার পর থেকে নদীটা মরে গেলো। তারপর যার যার মতো অনেকে দখল করলো। এখন আবাদের পানি টাকা দিয়ে কেনা লাগে। মাছও পাওয়া যায় না।' 

যেভাবে শুরু করতোয়ার শবযাত্রা

নদী গবেষকেরা জানান, প্রায় ২০০ বছর আগে করতোয়া নদীতে বড় ধরনের বন্যা দেখা দেয়। তখন গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। কাটাখালির দিকে সৃষ্টি হয় নতুন প্রবাহ। দুইভাগে ভাগে বিভক্ত হয় করতোয়া। কাটাখালি হয়ে একটি প্রবাহ গিয়ে মিশে যায় বাঙালি নদীতে। আরেকটি করতোয়ার মূল ধারা।

দুটি ধারায় বিভক্ত হওয়ায় করতোয়ার পানি প্রবাহ অর্ধেকে নেমে আসে। পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় মূল করতোয়ার তলদেশে পলি জমে ভরাট হতে থাকে।

এমন পরিস্থিতিতে বর্ষায় করতোয়ার মূল ধারা প্রবাহিত পানির চাপ নিতে না পারায় বিভিন্ন এলাকায় চলে ভাঙনের তাণ্ডব। পরে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে খুলসি এলাকায় স্লুইস গেট নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাটাখালির প্রবাহ গতি পেলেও এখান থেকেই শুরু করতোয়ার মূল স্রোতধারার শবযাত্রা। তারপরেরটি করতোয়ার কঙ্কাল খুবলে খুবলে খাওয়ার গল্প।

খুলসি থেকে বগুড়ার দিকে পথ ধরলে বোঝা যাবে না কোনটা নদী আর কোনটা ধানক্ষেত। কারণ যতদূর চোখ যায় সবুজ ধান গাছ। একটু চক্ষু স্থির করলে উঁচু নিচু ঢেউ দেখে বুঝে নিতে হবে করতোয়ার অস্তিত্ব।

ছবি- টিবিএস

গোবিন্দগঞ্জ থেকে বগুড়ার শিবগঞ্জ পর্যন্ত অনেক এলাকায় করতোয়ার মরা খালটি স্থানীয়রা ব্যবহার করছেন ময়লার ভাগার হিসেবে। শিবগঞ্জ পার হওয়ার পর বগুড়া সদরে এসে দেখা যায় করতোয়ার বুকে নানা স্থাপনা।

দখল-দূষণে সয়লাব

নদী বিশ্লেষক, গবেষক, পরিবেশ বিজ্ঞানীদের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বগুড়া অঞ্চলে ১২১ কিলোমিটারজুড়ে করতোয়ার মত্যু আসলে বিভিন্ন কারণে হয়েছে। এরমধ্যে দখল-দূষণ প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি প্রতিবেদনেই।

শুধুমাত্র বগুড়া জেলা অংশে করতোয়া দখল-দূষণের সাথে জড়িত বলে কখনো ৩০ কখনো ৩৬ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে ২০১৮-২০১৯ সালের দিকে করা সরকারি প্রতিবেদনে। এই প্রতিবেদন ধরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানও পরিচালনা করা হয়।

এরপর জাতীয় নদী কমিশন ২০১৯ সালে বগুড়ার করতোয়া, যমুনা ও বাঙ্গালী নদী সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে করতোয়া দখল দূষণের জন্য দায়ী করে টিএমএসএস ও বিসিএলের বিরুদ্ধে ওই বছরই একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

তালিকাভুক্ত দখলকারীদের অনেককে উচ্ছেদ করা হলেও দুই দখলদার টিএমএসএস ও বিসিএল থেকে যায় বহাল তবিয়তে। এই দুই দখলদারই শেষ পেরেকটা হানে করতোয়ার বুকে।

এবার ব্যবসায়ীক স্বার্থে শুরু হয় করতোয়া নদীর দখল। করোতায়া নদীর তিন দিক ঘিরে (উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব) একটি ইকো পার্ক গড়ে তোলে বগুড়ার বেসরকারি সংগঠন ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)।

এই ইকোপার্ক গড়তে প্রতিষ্ঠানটি করোতোয়া নদীর অন্তত ৫ একর অর্থাৎ ১৫ বিঘা জমি দখল করে বলে জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে উঠে আসে। একইসাথে নদী দখল করে এর গতিপথ পাল্টে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে টিএমএমএসের বিরুদ্ধে।

ছবি- টিবিএস

এ তো গেলো কয়েক বছর আগের কথা। নতুন খবর হলো, এবার একেবারে নদীর তলদেশে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে টিএমএসএসের বিরুদ্ধে। ইকো পার্কের সাথে বালা কৈগাড়ি ঈদগাহমাঠ এলাকায় নদীর উপর এই সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে।

ঈদগাহ মাঠের পাশে দাড়িয়ে নদীতে এভাবে রাস্তা নির্মাণের দৃশ্য দেখছিলেন এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ছাদেক আলী (৫৫)। তিনি বলেন, 'চোখের সামনে এই নদী ধ্বংস হয়ে গেলো। পার্কের নামে নদী গিলে খাওয়া হলো। এখন আবার নদীর উপর রাস্তা নির্মাণ করছে। হোসনে আরা কখন কী করে বোঝা মুশকিল। সে দেখায় এক জিনিস করে আরেক জিনিস। সরকারি লোকজন তার পকেটে। ভয়ে মানুষও মুখ খোলে না।'  

গত ২২ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর উপর রাস্তা নির্মাণ করতে ১৫ জন শ্রমিক কয়েকদিন ধরে মাটি কাটার কাজ করছেন। ট্রাকে করে প্রতিদিন এই নদীতে ক্রমাগতভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সবশেষ ১৮ মার্চ একই জায়গায় মাটি কাটার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন।

এ যাত্রায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় টিএমএসএস। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মুচলেকায় দাবি করেন, 'জায়গাটি টিএমএসএসের নিজস্ব। তারা সেই জমিতে মাটি দিয়ে ভরাট করছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ওই জমিগুলো চাষের আওতায় আনতে নিজস্ব জমি থেকে মাটি কাটার অনুমতি দেন।'

তবে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন বলেন, নদীতে কোনোভাবে বাঁধ বা প্রতিবন্ধকতা দিয়ে গতিপ্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। সেখানে কারো নিজস্ব জমি থাকলেও তিনি এটা করতে পারবেন না।'

২০২১ সালে মমইন ইকোপার্ক এলাকার কানন বালা ঘাট সংলগ্ন করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে টিএমএসএসের চারটি বোমা মেশিনসহ অন্যান্য সামগ্র ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ওই সময় কাউকে আটক করা যায়নি।

এ ছাড়া খোদ ডিসি অফিসের কার্যত ভিত ঘেঁষে পূর্ব দিকে নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। ধর্মীয় স্থাপনার নামেও চলছে করতোয়া দখল।

যে করোতোয়াকে এভাবে আয়োজন করে খুন করা হচ্ছে তা বাংলাদেশের অভিন্ন ৫৪ নদীর মধ্যে একটি। ঐতিহাসিক এই নদীর উৎপত্তি ভারতের হিমালয় পাদদেশে। আড়াই হাজার বছর আগের পুন্ড্রনগরও গড়ে উঠেছে করতোয়ার কোলেই। এই নদীকে কেন্দ্র করেই উত্তরের হাজার হাজার মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করেছে। উত্তরের বিভিন্ন জেলায় এই নদী দখলের চিত্র থাকলেও বগুড়ায় তার আকার বিস্তর। দখল আর দূষণে বিস্তৃর্ণ এই করতোয়া-ই এখন মৃতপ্রায়।

নদী না, যেন ময়লার ভাগাড়!

ছবি- টিবিএস

দখল তো গেলোই। দূষণের গল্পটা খুব প্রকট। করতোয়া দূষণের যেন প্রতিযোগিতা চলছে। বাসাবাড়ি, বাজার-ঘাট, সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, পৌরসভার বর্জ্য সরাসরি পড়ছে করতোয়ার বুকে। এমনকি শৌচাগার-ড্রেন, নালার সংযোগ দেওয়া হয়েছে নদীতে। সেই সাথে মেডিকেলের বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে করতোয়ার ভাগ্যে যা হবার তাই হচ্ছে। গবেষণার বরাত দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, বর্ষার ৩ মাস ব্যতীত করতোয়ার বিষাক্ত পানিতে জলজ প্রাণী বেঁচে থাকা দায়।

বগুড়ার ফতেহ আলী ও রাজা বাজারের বর্জ্য-আবর্জনা অনেকেই সরাসরি নদীতে ফেলেন। বিশেষ করে গরু-ছাগল জবাই করে এর বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে দূষণ ক্রমাগত ভয়াবহ হচ্ছে।

জানতে চাইলে রাজা বাজার আড়ৎদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, 'বগুড়া অনেক বড় শহর। এখানে বাজারে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য ও আবর্জনা জমা হয়। এসব ফেলার জন্য পৌরসভা থেকে কোনো ডাস্টবিন নেই। ফলে অনেকে নদীতে ফেলছে।'

করতোয়া নদী ঘেঁষেই বগুড়া জেলা কারাগার। এই কারাগারের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে ড্রেনের মাধ্যমে। জানতে চাইলে জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'এই বর্জ্য শুধু কারাগারের নয়, পুরো শহরের। বিকল্পভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় এমন সংকট তৈরি হয়েছে।'

অবশ্য করতোয়া দূষণের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা। তিনি জানান, করতোয়া দূষণ রোধে শহরের অনেক এলাকায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডাস্টবিন দিলে চুরি হয়ে যায়। আর দূষিত পানি শোধনাগারের জন্য ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। করতোয়া দখল-দূষণমুক্ত করতে সরকারের শক্ত পদক্ষেপ আশা করেন বাদশা।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোও বলছে, টিএমএসএসের বিরুদ্ধে অবৈধ স্থাপনা, নদীর গতিপথ পাল্টে দেওয়া, বর্জ্য ফেলে ভরাট ও কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে নদীদূষণ, নদীতে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার যন্ত্র বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের তথ্যও আছে।  

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বগুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলছেন, 'এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার জেলা প্রশাসনের সভায় কথা হয়েছে। বিভিন্নভাবে জেলা প্রশাসন অভিযানও চালায়। তবে খুচরো দখলদারদের বিরুদ্ধে। টিএমএসএসের মতো বড় দখলদারদের ধারে-কাছেই যায় না।'

অভিযান চললেও হয়নি সমাধান

ছবি- টিবিএস

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নদীর দখল-দূষণ দিয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সার্বক্ষণিক সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার ২০১৯ সালে বগুড়ার করতোয়া, যমুনা ও বাঙ্গালী নদী সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনে করতোয়া দখলকারীদের বিরুদ্ধে বগুড়া জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বগুড়া জেলা প্রশাসকের (পদাধিকার বলে জেলা নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক) কাছে পাঠানো এই চিঠিতে উল্লেখ করে, নদীর জায়গায় অবৈধভাবে দখলে নিয়ে টিএমএসএস ভবন বা স্থাপনা তৈরি অব্যাহত রেখেছে।

নদীর জায়গায় এভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রিট পিটিশনের সংশ্লিষ্ট রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবৈধ দখল থেকে নদীকে রক্ষা করতে সিআরপিসি আইনের ১৩৩ ধারা প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের জমি অবৈধভাবে দখলের দায়ে টিএমএসএসসহ অন্যান্য সব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় ফৌজদারী মামলাও রুজু করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সদরের নওদাপাড়া মৌজায় মমইন (ইকো পার্ক) পার্কের ময়লা-আবর্জনা করতোয়া নদীতে ড্যাম্পিং করা হচ্ছে। এবং অবৈধভাবে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর ভূগর্ভ ভেঙে তীর বসে যাচ্ছে। অবিলম্বে নদীতে ময়লা-আবর্জনা ড্যাম্পিং বন্ধ করতে হবে।

চিঠির আরেকটি অংশে উল্লেখ রয়েছে, মমইন এক্সটেনশন বিনোদন পার্ক করতোয়ায় বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম আইল্যান্ড তৈরি করেছে। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। জরুরি ভিত্তিতে এটি উচ্ছেদ করতে হবে। টিএমএসএস রাষ্ট্রের বা নদীর জায়গা অবৈধ দখলে জড়িত থাকার ফলে জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থি কাজের জন্য ফৌজদারী আইনে মামলা রুজু করতে হবে।

তবে যত অভিযোগ আর তদন্ত প্রতিবেদন-ই থাকুক না কেন, এসব মানতে নারাজ টিএমএসএস। তাদের দাবি, জেলা প্রশাসনের জরিপে উঠে আসা ৪ দশমিক ৯০ একর জমি সরকারের কাছ থেকে ১৯৯৫ সালে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নেওয়া হয়েছে। টিএমএসএস নদী দখল করে না। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।

টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরাকে সরাসরি ফোনে পাওয়া যায়নি। তার সঙ্গে কথা বলতে হলে আগে তার ব্যক্তিগত সচিব ফেরদৌসের সাথে কথা বলতে হয়। তার সাথেও যোগাযোগ করা যায়নি।

নদী আইন কী বলে

২০১৩ সালের জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইনে নদী দখল করলে শাস্তির বিধান কী তা উল্লেখ নেই। এ কারণে এই আইন  সংশোধন করে খসড়া জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন ২০২০ প্রণয়ন করা হয়। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইনের লঙ্ঘন করলে অনুর্ধ এক বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। এছাড়া এই আইনে ফৌজদারি বিভিন্ন আইনের ধারা অনুযায়ীও শাস্তির বিধান রয়েছে।

নদীর জমি অবৈধভাবে দখল করলে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। নদীর প্লাবন ভূমি আইন লঙ্ঘন করে ইজারা বা সাব- ইজারা দেয়া হলে, নদ-নদীর জরিপ, পানি প্রবাহে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্ষতিসাধন ইত্যাদি করার চেষ্টা করলে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশনা

করতোয়া নদীর সীমানা নির্ধারণ, দখল ও দূষণ বন্ধকরণ এবং নদীর প্রবাহ বিঘ্নকারী স্থাপনা অপসারণের দাবিতে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতি (বেলা)।

প্রাথমিক শুনানি শেষে বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে সব ধরনের বর্জ্য ফেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

জানতে চাইলে বগুড়ার বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'অবৈধভাবে কেউ নদী দখল-দূষণ করলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী দখল দূষণের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছি।'

 

Related Topics

টপ নিউজ

করতোয়া নদী / নদী দূষণ / করতোয়া / নদী দখল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ, বাসা খোঁজা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১
  • মাহফুজ আলম হয়তো ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি ডিলিট করবেন: সালাহউদ্দিন
  • ৫ আগস্ট সকালেও দিল্লি আঁচ করতে পারেনি ভারতে আশ্রয় নেবেন শেখ হাসিনা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

Related News

  • নদী দখল ও দূষণকারী কারখানা পেল 'গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড'
  • পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন নয়: প্রধান উপদেষ্টা
  • টিএমএসএস-এর অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নদীর জমি উদ্ধার করল বগুড়া জেলা প্রশাসন
  • করতোয়া নদীর ১৬.৯৭ একর জায়গা দখল করেছে টিএমএসএস; উচ্ছেদ অভিযান শুরু: ডিসি
  • ‘নদীগুলো হারিয়ে গেলে ভবিষ্যতে কবরের জমিও পাওয়া কঠিন হবে’: উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল

2
বাংলাদেশ

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ, বাসা খোঁজা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য

3
বাংলাদেশ

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১

4
বাংলাদেশ

মাহফুজ আলম হয়তো ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি ডিলিট করবেন: সালাহউদ্দিন

5
বাংলাদেশ

৫ আগস্ট সকালেও দিল্লি আঁচ করতে পারেনি ভারতে আশ্রয় নেবেন শেখ হাসিনা

6
বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net