টিএমএসএস-এর অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নদীর জমি উদ্ধার করল বগুড়া জেলা প্রশাসন

স্থানীয় এনজিও ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) অবৈধ দখলে থাকার অভিযোগ ওঠা করতোয়া নদীর তীরবর্তী প্রায় ১৭ একর জমি উদ্ধারের জন্য ধারাবাহিক উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে বগুড়া জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন বলছে, টিএমএসএস অবৈধভাবে করতোয়া নদীর গতিপথ পরবির্তন, সরকারি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ এবং পরিবেশ দূষণ করেছে।
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন টিএমএসএসের কাছ থেকে অবৈধভাবে দখলে থাকা প্রায় ১০ একর জমি উদ্ধার হয়েছে।
এই উদ্ধার অভিযানের প্রতিবাদে গতকাল টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ তাদের মম-ইন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে তারা দাবি করে, তাদের কোনো স্থাপনা সরকারি জমিতে নেই। তারা জমিটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে।
তবে বগুড়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) হোসনা আফরোজা জানান টিএমএসএসের এই দাবি অস্বীকার করে লিজের নথিপত্রকে 'ফ্যাব্রিকেটেদ' [জাল] বলে উল্লেখ করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড উভয়ের সরকারি সীমানা নির্ধারণ ও জরিপ নিশ্চিত করেছে, নদীর উল্লেখযোগ্য অংশ ধীরে ধীরে মাটি দিয়ে ভরাট করে দখল করেছে টিএমএসএস।
টিএমএসএসের চিহ্নিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ছাত্রাবাস, একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও একটি শহীদ মিনার। আর একটি অংশে বিসিএল গ্লাস কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন বলছে, করতোয়া নদীর অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য ফেব্রুয়ারি মাসে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু টিএমএসএস স্থাপনা না সরিয়ে নিম্ন আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা [ইনজাংশন] জারি করে নিয়ে আসে। তারপর প্রশাসন সরকার আদালতে জবাব দেয়।
ডিসি হোসনা আফরোজ বলেন, 'এর আগে তারা জজ কোর্টে একটা মামলা করেছিল। কিন্তু এটা যেহেতু নদীর জমি, সুতরাং নদীর জমি কেউ লিজ দিতে পারে না। আমরা সেই মামলায় হাইকোর্টে একটি আপিল করি এবং সেখানেও কোনো ইনজাংশন নেই।'
২০২৩ সালে করতোয়া নদীর ওপারে অবৈধভাবে একটি মাটির রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করার জন্য একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত টিএমএসএসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। একই বছরের মে মাসে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড অবৈধ দখলের অভিযোগে টিএমএসএসের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা করেন।