কর্পোরেট কর হার হ্রাস করুন: এনবিআরকে অ্যামটব

আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর হার কমানো, ন্যূনতম টার্নওভার কর প্রত্যাহার ও সিমের ওপর আরোপিত ২০০ টাকা কর বিলুপ্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অফ বাংলাদেশ (এএমটিওবি বা অ্যামটব)।
রবিবার (১২ মার্চ) আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এই প্রস্তাব দেন সংগঠনটির মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফরহাদ (অব.)।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর সদস্য মোঃ মাসুদ সাদিক।
এসএম ফরহাদ বলেন, মোবাইল সেবাদাতাদের প্রবৃদ্ধি যত বাড়বে গ্রাহকেরা তত উৎকৃষ্ট মানের সেবা পাবে এবং সরকার বেশি বেশি করে রাজস্ব পাবে।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রস্তাব হলো ন্যূনতম কর অপসারণ বা হ্রাস। মোবাইল অপারেটরদের বার্ষিক সর্বমোট রাজস্ব প্রাপ্তির ২% ন্যূনতম কর হিসেবে প্রদান করতে হয় যা আয়কর আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ব্যবসায় লোকসান সত্ত্বেও ন্যূনতম কর প্রদান করার অর্থ হলো, মূলধন হতে কর পরিশোধ করা যা ব্যবসা সম্প্রসারণের পক্ষে প্রতিবন্ধক।'
শিল্প টিকিয়ে রাখার পক্ষে ও সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করার লক্ষ্যে ন্যূনতম কর অপসারণ বা হ্রাসের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, 'করপোরেট করের উচ্চ হার হ্রাস করা প্রয়োজন। দেশে সাধারণ করপোরেট ট্যাক্স হার অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৭.৫ % এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০% থেকে ২২.৫ %।অথচ জরুরি সেবা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ মোবাইল খাতের জন্য উচ্চহারে কর্পোরেট কর দিতে হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে করের হার ৪০% ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৪৫%।'
তিনি বলেন, করারোপের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণীভুক্ত না করে বরং অন্যান্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করা এবং সেই হারে কর হ্রাস করার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে যে কয়টি খাত সরকারকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব প্রদান করে মোবাইল খাত তার অন্যতম। আমাদের মনে রাখা দরকার যে, মোবাইল খাতের শীর্ষ তিন অপারেটরই বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের অবদান অপরিসীম। মানুষের টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট প্রাপ্তির প্রধান উৎস থেকে শুরু করে ব্যাংকিং, মোবাইল মানি, রাইড শেয়ারিং, ই- কমার্স, শিক্ষা, কিংবা ই-কুরিয়ারসহ সকল খাতই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মোবাইলের উপর নির্ভরশীল। তারপরেও দেখা যায় যে, সরকার এই খাতে প্রতিবছর নতুন করে করারোপ করছে। মোবাইল খাতের কর ব্যবস্থাকে যৌক্তিকভাবে বিবেচনা করে এই খাতের প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা না হলে তার প্রভাব আর সকল খাতের উপর পড়বে।'
সভায় এসএম ফরহাদ টেলিকম সংক্রান্ত আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক এবং সম্পূরক শুল্ক সংক্রান্ত ১৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।