রপ্তানির ভুয়া এলসি দাখিল করে অর্থপাচার, ৯ চালান আটক

ভুয়া এলসি (ঋণপত্র) দাখিল করে অর্থপাচারের অভিযোগে নয় কনটেইনার পণ্য আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এসব কনটেইনারের ঘোষিত মূল্য তিন কোটি টাকা।
গত ৩১ জানুয়ারি উত্তর পতেঙ্গার এসএপিএল (ওসিএল) কনটেইনার ডিপোতে অভিযান চালিয়ে ৪০ ফুট দীর্ঘ এসব কনটেইনার আটক করা হয় বলে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) টিবিএসকে জানিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার।
তিনি বলেন, কনটেইনার থেকে জব্দ করা পণ্যের ওজন ১১৮ টন। টি-শার্ট ও নারীদর পোশাক রপ্তানির ঘোষণা থাকলেও শিশুদের পোশাক, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিন্স, শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত অনেক পণ্য পাওয়া গেছে।
এ চালানগুলো মালয়েশিয়া, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ত্রিনিদাদ, টোবাগোয় নেওয়ার কথা ছিল। সার্বিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি উত্তর পতেঙ্গার এসএপিএল (ওসিএল) কনটেইনার ডিপোতে এ অভিযান পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের একটি দল। অভিযানে ঢাকার সাবিহি সাইকি ফ্যাশন নামক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ১৫টি বিল অব এক্সপোর্ট সংক্রান্ত দলিল পর্যালোচনায় জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। ফলে চালানগুলো রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়।
এসব দলিল যাচাই করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। এর জবাবে ব্যাংকটির প্রধান শাখা থেকে জানানো হয়, সাবিহি সাইকি ফ্যাশন তাদের গ্রাহক নয় এবং বিল অব এক্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলো এ ব্যাংকের অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা।
এরপর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন, ভুয়া ইএক্সপি এবং এলসি কিংবা সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছিল। যেহেতু জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি হয়েছে, সে কারণে এ চালানগুলোর বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা বৈধপথে দেশে প্রত্যাবাসনের সুযোগ না থাকায় এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সাবিহি সাইকি ফ্যাশন শুল্ক গোয়েন্দাকে জানায়, তারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছে।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার বলেন, 'চালানগুলোর কায়িক পরীক্ষার জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইম্যাক্স শিপার্স লিমিটেডকে চিঠি দিলেও তারা সহযোগিতা করেনি। ১৫টি চালানের মধ্যে নয়টি ডিপোতে পাওয়া যায়। বাকিগুলো বিদেশে চলে গেছে।'