মতিঝিলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

কর্তৃপক্ষের কারখানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিল, কমলাপুর ও আরামবাগ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক শ্রমিকেরা।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে কয়েকশ শ্রমিক রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
মতিঝিল ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার এসএম বজলুর রশিদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আন্দোলনরত শ্রমিকদের মতে, অলিও অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি কারখানা কোনরকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে এবং শ্রমিকদের বকেয়া মজুরিও পরিশোধ করেনি।"
"তবে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে যে তারা কারখানাটি দক্ষিণখানে স্থানান্তর করছে। এজন্য ১ নভেম্বর থেকে কারখানাটি বন্ধ।"

এদিকে শ্রমিকদের রাস্তা অবরোধের কারণে ওই এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকুরীজীবী ও শিক্ষার্থীরা।
এসএম বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, শ্রমিকেরা মতিঝিল এলাকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে রেখেছে।
"সকাল থেকে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী ও অন্যান্য যাত্রীরা। আমরা এখনও আন্দোলনরত শ্রমিকদের সরানোর চেষ্টা করছি; এছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।"
কারখানাটিতে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক কর্মরত। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, এখনও তাদের গত মাসের মজুরি দেওয়া হয়নি।

আন্দোলনরত শ্রমিকদের একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "তারা যদি কারখানা স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে আমরা প্রতিবাদ করার কে? কিন্তু তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কারখানা সরানোর আগে মজুরি পরিশোধ করা হবে এবং আমাদের এক মাসের নোটিশও দেওয়া হবে, কিন্তু এসবের কিছুই তারা করেনি। আমরা মঙ্গলবার সকাল ৮টায় কাজে যোগ দিতে এসে দেখি কারখানাটি তালাবদ্ধ এবং তারা একটি নোটিশও ঝুলিয়েছে। এখন আমাদের মজুরি দেবে কে!"
অপারেটার হিসেবে কাজ করা মোসা আলো বলেন, এখানে কাজ করে ৯,২০০ টাকা বেতন পেতাম।এখন সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া তো পরের কথা আমাদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে যাবে।
"আমরা যদি অন্তত গত মাসের স্যালারি পেতাম তাহলে কিছুটা সময় নিয়ে অন্য একটা কাজের খোঁজ করে যেতে পারতাম।"
একই প্রতিষ্ঠানের সুমন মোল্লা টিবিএসকে বলেন, আমরা বড় অনিশ্চয়তায় পরে গেছি। কোন উপায় না পেয়ে রাস্তায় নেমেছি।
অন্যদিকে এনভয় গ্রুপের পরিচালক শেহরিন সালাম ঐশী বলেছেন, "আমরা কারখানাটি কাপাসিয়াতে স্থানান্তর করছি কারণ শহরে কারখানা চালানোর মতো যে কমপ্লায়েন্স রয়েছে, সে শর্ত আমরা পূরণ করতে পারিনি। তাই আমরা সরে যাচ্ছি।"
"কারখানাটি শহরের বাইরে হওয়ায় আমরা সেখানে শ্রমিকদের সবাইকে নিয়োগ দিতে পারবোনা। তবে সবাইকেই বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা হয়েছে", যোগ করেন তিনি।