গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর খাঁ-পাড়া এলাকায় আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এ কারণে ঐ মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
খবর পেয়ে বেলা এগারোটার দিকে পুলিশ গিয়ে ৩ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড, দুই রাউন্ড কাঁদানো গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে, এই ঘটনায় কোনো শ্রমিক হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর খাঁ-পাড়া এলাকায় সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের কারখানার দেড় হাজার শ্রমিক বুধবার সকাল ৮টার দিকে কাজে যোগ দেন। পরে তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গত মার্চ মাসের বকেয়াসহ ২০ দিনের বেতন পরিশোধের দাবি জানান। এ সময় কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের তারিখ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে না পারায় শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে শ্রমিকেরা স্লোগান দিয়ে কারখানা থেকে মহানগরীর টঙ্গীর এশিয়া পাম্প বাসস্ট্যান্ড নামক এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে কারখানায় ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শ্রমিকরা মহাসড়ক ছাড়তে রাজি না হলে সকাল এগারোটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভে যোগ দেওয়া কারখানা শ্রমিক আনোয়ার বলেন, 'মালিকপক্ষ আমাদের বকেয়া ২০ দিনের বেতন পরিশোধ করেননি। কারখানার মালিক আমাদের মাসিক বেতন সময়মতো পরিশোধ করেন না। এর আগেও আমরা টানা পাঁচদিন সড়কে অবরোধ করেছিলাম। আজ আবারো এসেছিলাম। পুলিশ আমাদের সরিয়ে দিতে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও পানি ছুড়েছে।'
এ ব্যাপারে যোগাযোগের জন্য কারখানা মালিক বাহা উদ্দিন চৌধুরী বাকেরের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, সাড়া পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, 'এ কারখানার শ্রমিকরা প্রায়ই নানা দাবিতে মহাসড়কে অবরোধ করেন। মালিকপক্ষ তাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগও নেয় না। এরই ধারাবাহিকতায় আজও শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিলে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আমরা শ্রমিকদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের অনুরোধ রাখেনি। পরে জনদুর্ভোগ লাঘবের জন্য শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।'
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।