সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে দেশের সেবা করবে: প্রধানমন্ত্রী

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা পেশাগত দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠা নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে দেশের সেবা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, "আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সেনাবাহিনীর সকল সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা ও পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সমন্বয়ে আন্তরিকতার সাথে দেশের সেবায় কাজ করে যাবেন।"
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে সাভার সেনানিবাসে সিএমপি সেন্টার এন্ড স্কুলে সদরদপ্তর ৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড, ১৫ ও ৪০ ইষ্ট বেঙ্গল (মেকানাইজড) এবং ৯ ও ১১ বীর (মেকানাইজড) এর পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এ দেশ আমাদের। তাই আমরা এই মাতৃভূমিকে এমনভাবে গড়ে তুলবো, যাতে বিশ্বের কেউ বাংলাদেশকে অবমূল্যায়ন করতে না পারে। আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে হাঁটবো।"
আসন্ন ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট এড়াতে প্রধানমন্ত্রী প্রতি ইঞ্চি জমি ব্যবহার, অর্থ সঞ্চয় এবং আন্তরিকতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, "আমাদের উচিত প্রতি ইঞ্চি জমি খাদ্য উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা, অর্থ সঞ্চয় করা এবং কঠোর পরিশ্রম করা। আমি আশা করি, সবাই বিষয়গুলো মেনে চলবেন।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের লক্ষ্য প্রতি ইঞ্চি জমি ব্যবহার করা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তিনি খাদ্য উৎপাদনের জন্য জমিতে চাষাবাদ করার নির্দেশ দেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে উন্নত দেশগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ এতে দেশগুলোতে খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশও একই অবস্থানে রয়েছে। সেই ধাক্কা ইতোমধ্যে এখানে পৌঁছেছে। আমরা সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।"
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে চাল বিতরণের জন্য এক কোটি মানুষকে কার্ড দিয়েছে।
তার সরকার ৩৫ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
"যাদের কাজ করার সামর্থ্য নেই, তাদের পরিবারের আকার বিবেচনা করে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৪০ কেজি চাল বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
"তবে বাংলাদেশকে সেই দুর্ভিক্ষের শিকার হতে হবে না। এর জন্য আমাদের নিজেদের জমিতে খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। আমাদের সঞ্চয় করতে হবে এবং পরিশ্রম করতে হবে," বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ পতাকা উত্তোলন করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেকানাইজড ব্রিগেড ও রেজিমেন্টের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ব্রিগেড ও রেজিমেন্টের সদস্যদের দ্বারা প্রদর্শিত একটি সুশৃঙ্খল ও সুন্দর কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে আয়োজন করায় তিনি সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।