বরাদ্দের চাল নিয়েও বিতরণ করলেন না চেয়ারম্যান

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেঁটে খাওয়া দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ। এসব অসহায় মানুষদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
তবে অসহায় মানুষদের মাঝে সরকারি সেই খাদ্যসমগ্রী বিতরণই করলেন না সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান।
স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগের পর ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতে দৃষ্টিতে আসে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেনের। তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানকে চাল বিতরণের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এরপর শুক্রবার ভোররাতে ইউপি সদস্যদের কাছে ত্রাণের চালগুলো হস্তান্তর করেন চেয়ারম্যান।
স্থানীয় অসহায় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান সরকারের ত্রাণের সহযোগিতা পেয়েও সেগুলো অসহায় মানুষদের মাঝে বিতর ণকরেননি। এদিকে, খেটে খাওয়া মানুষগুলোর সীমাহীন দুর্দিন চলছে।
তবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে সরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, 'আমি আগে ৫০০ কেজি চাল পেয়েছিলাম, সেগুলো ১০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করেছি। এরপর গত ৭ এপ্রিল দুই টন এবং ৮ এপ্রিল এক টন চাল পেয়েছি। সেগুলো আজ (শুক্রবার) সকালেই উনিয়নের ৩০০ ভ্যানচালকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।'
জানা গেছে, শুক্রবার ভোররাতে ইউনিয়ন পরিষদের ৯ সদস্য ও সংরক্ষিত তিন নারী সদস্যের মধ্যে তিন টন চাল বিতরণ করা হয়। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ২০-২৯ জন ভ্যানচালকের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সরুলিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পরিতোষ জানান, শুক্রবার ভোররাতে আমরা ইউপি সদস্যরা খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ শুরু করেছি।
আরও আগে বিতরণের কথা থাকলেও করা হয়নি কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চেয়ারম্যান দেয়নি, তাই আমরা বিলি করতে পারিনি।'
চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান উত্তরে বলেন, 'আমি দুইদিন আগে পেয়েছি। যার কারণে বিতরণে দেরি হয়েছে।'
তবে চেয়ারম্যান মিথ্যে বলছেন জানিয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, দুই টন চাল চেয়ারম্যান পেয়েছেন গত দুই তারিখে। তার আগে পেয়েছেন ৫০০ কেজি চাল। তিনি এতদিন সেগুলো বিতরণ করেননি। এখন মিথ্যে বলছেন।
তিনি আরও বলেন, অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ না করায় চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া সরেজমিনে গিয়েও বিতরণের সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করেছি।