অপহৃতদের উদ্ধারে গিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধ’, টেকনাফে তিন ডাকাত নিহত

কক্সবাজরের টেকনাফে খামার থেকে নীরহ তিন কৃষি শ্রমিককে অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে একজনকে হত্যা করে পাহাড়ে অবস্থান নেয় ডাকাতদল। এরপর থেকেই বাকি দু'জনকে উদ্ধার ও ডাকাতদের ধরতে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে বুধবার ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা রঙিখালির পাহাড়ে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' তিন ডাকাত নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ কর্মকর্তাসহ পুলিশের ৫ সদস্য। এ তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
নিহতরা হলেন- সৈয়দ আলম, নুরুল আলম ও সৈয়দ হোসেন। তারা উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা এবং পাহাড়ি ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি ওসির।
প্রদীপ কুমার দাশ জানান, হ্নীলার রঙিখালির পাহাড়ে ডাকাতদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে বুধবার ভোররাতে ডাকাতের আস্তানায় পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এসময় ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি থামলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে তিন জনককে গুলিবিদ্ধ উদ্ধার করে টেকনাফে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়েছেন। ডাকাতদের আস্তানা থেকে দেশি-বিদেশি ১৮টি অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও জানান, আহত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যেদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ২৯ এপ্রিল ধানক্ষেত থেকে রঙ্গীখালীর আক্তার উল্লাহ, শাহ মোহাম্মদ শাহেদ ও মোহাম্মদ ইদ্রিস নামে তিন কৃষককে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্র ডাকাতদল। এদের মাঝে আক্তারকে দু'দিনপর গুলি করে হত্যা পাহাড়ের পাদদেশে ফেলে দেয় রোহিঙ্গা ডাকাতরা।
নিহত আক্তারের পরিবারের দাবি, তাকে অপহরণ করে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে রোহিঙ্গা ডাকাতরা। মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় শুক্রবার ভোরে তাকে হত্যার পর লাশ টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উনছিপ্রাং পুটিবনিয়া নামক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে রাখা হয়েছে পরিবারের কাছে এমন খবরও পৌঁছে দিয়েছে ডাকাতরা।
দাবি করা টাকা না দেওয়ায় অপহৃত বাকি দুইজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাদের উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। তবে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন মারা গেলেও অপহৃত বাকি দুজন কৃষি শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রমতে, চলতি বছরের পাঁচ মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩৬ জন নিহত হয়েছে। তার মধ্যে ২২ জন সক্রিয় ডাকাত বলে জানায় ওই সূত্র।