Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
June 27, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JUNE 27, 2025
অভিবাসী না কি শরণার্থী: বাংলাদেশের মালদইয়া সম্প্রদায় আসলে কারা?

ফিচার

তামারা ইয়াসমীন তমা
24 June, 2022, 01:10 pm
Last modified: 24 June, 2022, 02:13 pm

Related News

  • উদ্বাস্তু: প্রিয়জন ও ভিটেমাটিকে নীরবে বিদায় জানিয়ে যাওয়া 
  • শরণার্থীদের বোঝা সবচেয়ে বেশি বহন করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর: গুতেরেস
  • হার্ডওয়্যারের দোকানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের গুজবে যেভাবে উত্তাল হলো লস অ্যাঞ্জেলেস
  • ২০২৪ সালে প্রবাসে রেকর্ড ৪,৮১৩ অভিবাসীর মৃত্যু, গড় বয়স ৩৮ বছর: গবেষণা
  • অবৈধভাবে থাকলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে: ভারতীয়দের সতর্ক করল মার্কিন দূতাবাস

অভিবাসী না কি শরণার্থী: বাংলাদেশের মালদইয়া সম্প্রদায় আসলে কারা?

মুক্তিযুদ্ধের সময় মালদইয়াদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গুপ্তচর হয়ে বাঙালিদের গণহত্যায় অংশ নেওয়ায় অভিযোগ মিলে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে বাস করলেও স্থানীয় বাঙালিদের কাছে মালদইয়ারা আজও বহিরাগত। শুধু দেশভাগ কিংবা সাম্প্রদায়িক কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা এদেশে আসে এমনও নয়। মালদইয়াদের অভিবাসনের ইতিহাস আরও পুরোনো।
তামারা ইয়াসমীন তমা
24 June, 2022, 01:10 pm
Last modified: 24 June, 2022, 02:13 pm
দিনাজপুরের মালদইয়াপাড়া। ছবি: বিপুল সরকার সানি

সাল ১৯৭১। যুদ্ধের উত্তাল সময়। পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে শরণার্থী ও উদ্বাস্তুদের ভিড়। ভিটেমাটি, জমিজমা সবই এপাড়ে। হিন্দু পরিবারগুলোর যারা কিছুটা অবস্থাপন্ন এবং চেনাজানার পরিধি ভালো তাদের অনেকেই ওপাড়ের মুসলমানদের সঙ্গে সম্পত্তি বিনিময় করলেন। এমনই এক পরিবারের সঙ্গে ২০০ বিঘা জমি বিনিময় করে ভারতের মালদহ থেকে দিনাজপুর সদরের মহাদেবপুরে চলে আসেন সাগর মোহাম্মদ। শুধু মোহাম্মদ একাই নন, একইভাবে তার আরও তিন ভাই বিরলের মালঝাড়, কানাইবাড়ি ও বোচাপুরের ঈশানপুরে এসে বাস করতে শুরু করেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় বাংলার বিস্তৃত অঞ্চলে বিভাজন নিয়ে আসে রেডক্লিফ লাইন। কোথাও ধানখেত কোথাও বাঁশঝাড় কোথাও শালবন আবার কোথাও বা বিস্তৃত জলাশয় ভেদ করে চলে এই সীমান্ত রেখা। কাঁটাতারের দুপাড়েই ভিড় বাড়ে শরণার্থীদের। এরপর আসে ৫০ আর ৬৪-র দাঙ্গা। এপাড়ের আগুন ওপাড়েও উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও কলকাতা থেকে অসংখ্য মুসলিম পরিবার এপাড়ের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় চলে আসে। বিংশ শতাব্দীর অস্থির সময়ের পরবর্তী দশকগুলোতেও অব্যাহত থাকে এই স্রোত।

দিনাজপুরের মহাদেবপুর গ্রামটিতে এখন প্রায় ৫০০ পরিবারের বসবাস। বংশানুক্রমে এই পরিবারগুলোর অধিকাংশই ভারতের মালদহ থেকে আগত। মালদহ থেকে আসায় স্থানীয়দের কাছে তারা মালদইয়া নামেই পরিচিত।

বিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে আগত মুসলিম অভিবাসীদের মধ্যে অন্যতম এই মালদইয়া সম্প্রদায়। একসময় অকর্ষিত জমি উর্বর করে তোলার পর সেই জমি পুনরায় বিক্রি করাই ছিল তাদের প্রধান পেশা। দেশভাগের পর অল্পসময়েই তারা সমৃদ্ধিও লাভ করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মালদইয়াদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গুপ্তচর হয়ে বাঙালি গণহত্যায় অংশ নেওয়ায় অভিযোগ মিলে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে বাস করলেও স্থানীয় বাঙালিদের কাছে মালদইয়ারা আজও বহিরাগত। শুধু দেশভাগ কিংবা সাম্প্রদায়িক কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা এদেশে আসে এমনও নয়। মালদইয়াদের অভিবাসনের ইতিহাস আরও পুরোনো।

যাযাবর এক কৃষক গোষ্ঠী

আবহমান কাল থেকেই বাংলার গাঙ্গেয় ডেল্টা অঞ্চল নদীক্ষয়, ভাঙন ও বন্যাপ্রবণ। ভারতের মালদহ জেলার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অংশে গঙ্গা তীরবর্তী পলিমাটির ভূমি দিয়ারা। এ অঞ্চলের মানুষ পলি জমা উর্বর জমিগুলোতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তবে নদীতীরের এই অঞ্চলগুলোতে স্থায়ী বসতি স্থাপনের সুযোগ ছিল না। প্রতিবর্ষায় জমি তলিয়ে গেলেই চলে যেতে হতো নতুন কোনো জায়গায়। দিয়ার অঞ্চলের এই পরিযায়ী কৃষকরা দিয়ারিয়া বা ভাটিয়া নামে পরিচিত। 

দেশভাগের আগেই ১৯২০ ও ৩০ এর দশকে উত্তরবঙ্গে দিয়ারিয়াদের আগমন বাড়তে থাকে। কম ঘনবসতির অঞ্চলে আশেপাশের জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ শুরু করে তারা। মালদহ থেকে আসায় স্থানীয়দের কাছে তারা মালদইয়া বা চাঁপাইয়া (মালদার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আগত) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

ছবি: বিপুল সরকার সানি

দ্রুত স্থানান্তরের প্রয়োজন পড়ত বলেই কৃষিনির্ভর মালদইয়ারা খুব তাড়াতাড়ি এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতে পারত। একারণেই তাদের অধিকাংশ বাড়ি হতো বাঁশের তৈরি। খুব সহজেই বাঁশ খুলে নিয়ে গিয়ে নতুন জায়গায় ঘর বাঁধা যেত। বাঙালি সুন্নি মুসলিমদের মতো নির্দিষ্ট স্থানে প্রিয়জনের কবর সংরক্ষণের রীতিও তাদের ছিল না। স্থায়ী ধর্মীয় স্থাপনা প্রতিষ্ঠাতেও ছিল অনাগ্রহ।

'বেঙ্গল ডায়াসপোরা: রিথিংকিং মুসলিম মাইগ্রেশন' শীর্ষক গবেষণা গ্রন্থে উঠে এসে মালদইয়াদের জীবনকাহিনি। ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্লেয়ার আলেক্সান্ডার, ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের দক্ষিণ এশীয় ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক জয়া চ্যাটার্জিসহ নৃবিজ্ঞানী অণু জালের মতো প্রথিতযশা অ্যাকাডেমিক গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় এক দশক আগে বাংলার মুসলিম অভিবাসীদের তথ্যগুলো সংগৃহীত হয়। বইটিতে এমনই এক ভূমিহারা মালদইয়া পরিবারের সদস্য বিবি রুহা ও তার ছেলে গাজীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বর্ণনা থেকে মালদইয়াদের ভাসমান জীবন আরও পরিষ্কার হবে। 

পরিবারটি চাঁপাইয়ে ভূমি হারিয়ে প্রথমে মুর্শিদাবাদ আসে। সেখান থেকে গঙ্গারামপুর ও এরপর কালীগঞ্জ হয়ে পরিশেষে দিনাজপুরে এসে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করে।

বিবি রুহা নিজের স্মৃতি থেকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "১৯৪৭ সালের পর আমরা ভারতীয়রা এখানে আসি। আমাদের আদিনিবাস চাঁপাইয়ে। সেখানে নদীভাঙনে ভূমি হারাই। তখন একজন জানায় এদিকে জঙ্গল আছে, সেগুলো পরিষ্কার করে দাবি করলে আমাদের হয়ে যাবে।" বিবি রুহার ধারণা ভুল ছিল না। দিনাজপুরের ঈশ্বরগ্রামে স্থানীয় বনাঞ্চল কৃষি উপযোগী করে তোলার পর পাকিস্তান সরকার পরিবারটির জন্য খাস জমির বন্দোবস্ত করে।

তবে সবাই যে কৃষিকাজ বা ভূমিহীন হয়ে এখানে আসেন তা নয়। আবার মালদইয়াদের সবাই দিয়ারি অঞ্চলের ছিলেন এমনটাও খুব সম্ভবত বলা যাবে না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে মালদইয়ারা এই অঞ্চলে আসে।

পাকিস্তান আমলে পুনর্বাসন প্রকল্পের সুবিধাভোগী

দেশভাগের পর বাঙালি ও অবাঙালি উভয় ধরনের শরণার্থী ও অভিবাসীই পূর্ব পাকিস্তানে আসতে থাকে। ভারতীয় মুসলিম এই অভিবাসীরা মুজাহির নামে পরিচিত ছিল। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান এই মুজাহিরদের রাষ্ট্রের আধুনিক নাগরিকে পরিণত করার পরিকল্পনা করে।

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত অনিন্দিতা ঘোষালের 'দ্য ইনভিজিবল রিফিউজিস: মুসলিম রিটার্নিস ইন ইস্ট পাকিস্তান' প্রবন্ধে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম অভিবাসীদের তথ্য মিলে। বাঙালি ও অবাঙালি উভয় ধরনের শরণার্থী এলেও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর ভাষার সঙ্গে মিল থাকায় বিহারীদের মতো উর্দুভাষী অভিবাসীরা পুনর্বাসনের সর্বোচ্চ সুবিধা লাভ করে।

শিক্ষিত অভিবাসীরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে এদেশে আসা মালদইয়ারাও এর সুবিধা পান। কেউ কেউ ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করে। অনেকে সরকারি সহায়তায় কারখানা চালুর জমি ও অর্থও পান।

এদিকে অভিবাসীদের মধ্যে আগত অনেকে ছিল কৃষক বা শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। সহায়হীন এসব মানুষের অধিকাংশ সীমান্তবর্তী গ্রাম বা মফস্বলগুলোতে আশ্রয় নেয়।

এদের অনেকে আগে থেকেই ভূমিহীন ছিল বা অনেকে নিজেদের ক্ষুদ্র জমিতে কিংবা অন্যদের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করত। পাকিস্তান হওয়ার পর রাতারাতি দেশান্তরী হওয়ার মতো সঞ্চিত অর্থ বা সীমান্তের ওপাড়ে যাওয়ার পরিচিত মানুষ তাদের ছিল না। তাছাড়া অনেক সময় স্থানীয় মহাজনদের কাছে ঋণ থাকার কারণেও তাদের চলে আসার উপায় থাকত না। এই মানুষগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে দাঙ্গা বা বিভিন্ন সংঘাতে প্রাণ সংকটে কিংবা ঋণগ্রস্ত হয়ে ভিটেমাটি সহায়সম্বল সব হারিয়ে এদেশে একরকম বাধ্য হয়েই আসতেন। তাদের নিয়ে খুব বেশি গবেষণা, তথ্য বা নথি কোনোটাই মিলে না।

তৎকালীন পত্রিকাগুলোর প্রতিবেদনে এর খানিকটা নজির মিলে। যেমন ১৯৫০ সালে দাঙ্গা পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকা লিখে, 'সার্বিকভাবে দেখলে হাজার হাজার শরণার্থীর আগমনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি গুরুতর।'

ছবি: বিপুল সরকার সানি

মালদইয়া বা চাঁপাইয়া যারা দিয়ারি অঞ্চল থেকে এসেছিল, তারা জঙ্গল বা বিরানভূমি নিজেদের চাষ উপযোগী করে তুললে সেগুলো ঐতিহ্যগতভাবে নিজেদের বলেই মনে করতেন। মুজাহিরদের নিয়ে পরিকল্পনার কারণে অনেকেই কৃষিকাজে নিয়োজিত হয়ে খাসজমির বন্দোবস্তও পেয়ে যান।

তবে স্থানীয়রা শুরু থেকেই এ ধরনের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে ছিল। স্রেফ ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে তাদের মধ্যে একাত্মতা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। নিজেদের ভূমি ও প্রাচুর্য ভাগাভাগি করে নেওয়ার আগ্রহও তাদের ছিল না। ফলে এই মালদইয়াসহ অন্যান্য অভিবাসীরা স্থানীয়দের কাছে বহিরাগত হয়েই রইল।

পাকিস্তানি গুপ্তচর?

৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে মালদইয়াদের অনেকে গুপ্তচরের কাজ করে বলে অভিযোগ আছে। ঠাকুরগাঁওয়ের খুনিয়াদীঘিতে গণহত্যার সঙ্গেও জড়িয়ে আছে মালদইয়াদের নাম। সরকারিভাবেও অনেকের নাম রাজাকার হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে।

এসময় অনেক মালদইয়া নতুন করেও এদেশে আসে। সেসময় জমি বিনিময় করে যেমন অনেকের আগমনের খবর মিলে, তেমনি অনেকে দেশত্যাগী হিন্দু শরণার্থীদের বাড়ি দখলের জন্য এখানে আসে। বেঙ্গল ডায়াসপোরা বই অনুসারে, দ্রুত স্থানান্তরিত হতে পারত বলেই দেশভাগের পর সীমান্ত পার করে পূর্ব বাংলায় ফেলে যাওয়া হিন্দুদের বাড়িঘরগুলো দখল নেয় মালদইয়াদের অনেকে।

তবে বইটিতে মালদইয়া পরিবারগুলোর সাক্ষাৎকার থেকে আরেকটি দিকও উঠে এসেছে।

বেঙ্গল ডায়াসপোরা বইয়ে মিলবে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে থাকা বিবি হাওয়ার কাহিনি। ৭১-এ মালদইয়াদের রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করার পর হাওয়ার স্বামী, স্বামীর তিন ভাই ও শ্বশুরকে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। হাওয়ার চোখের সামনেই বাড়ির পুরুষদের টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে একে একে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাড়ির গরু-বাছুরও কেড়ে নেয় তারা।

সীমান্তের এপাড় থেকে ওপাড়ে ছুটে বেড়ানো জীবনের জন্যই মালদইয়াদের পাকিস্তানি দোসর ভাবা হতো বলে মনে করেন বিবি হাওয়া। তার মতে জমিজমা ও সম্পত্তি দেখে স্থানীয়রা হিংসা করত বলেই জমি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। সশস্ত্র সেই দলটি হাওয়ার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ছাড়াও স্থানীয় আরও ১৩৯ জনকে হত্যা করে। 

হাওয়ার দাবি এই হত্যাকাণ্ডের পর পরিবারের নারীরা ভারতে ফিরে গেলে জায়গা জমি ছিনিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে এমন পরিকল্পনা থেকেই এই কাজ করা হয়েছিল।

বর্তমান অবস্থা

মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘসময় কাটলেও মালদইয়ারা এখনও স্বাধীনতা বিরোধী ও জামায়াত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন দিনাজপুর সদরের কর্নাইয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িঘর ও দোকানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসময় দায়েরকৃত তিনটি মামলায় যাদের আসামি করা হয়, তাদের অধিকাংশ মালদইয়াপাড়ার। মামলাগুলো এখনও চলমান।

স্বাধীনতার পর মালদইয়াদের পুনর্বাসন নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সাধারণ মানুষ। তবে শেষ পর্যন্ত তৎকালীন সরকার তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে কিছুদিন তাদের পুলিশি পাহাড়াতেও রাখা হয়।

বর্তমানে মালদইয়ারা কেমন আছেন? মহাদেবপুরে থাকেন মালদহ থেকে আগত সাগর মোহাম্মদের নাতি সাইফুদ্দিন। তিনি বলেন, "জন্মসূত্রে আমরা সকলেই বাংলাদেশি, বাংলাদেশের নাগরিক এবং ভোটার। কিন্তু তারপরও আমাদের মালদইয়া বলা হয়"।

গ্রামের আরেক ব্যক্তি নুর জামান বলেন, "আমরা ভারতের মালদহ থেকে এসেছি। কিন্তু এখন তো বাংলাদেশিই। আমাদের প্রধান পেশা কৃষি। আমি বাবার কিছু জমির পাশাপাশি অন্যদের থেকে কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষ করি।"

ছবি: বিপুল সরকার সানি

কৃষিকাজের সঙ্গে এখনও এখানকার অভিবাসীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সাইফুদ্দিন বলেন, "এখানকার সকলের পেশাই কৃষি। আমি আমার জমি আবাদ করি, পাশাপাশি অন্যকেও বর্গা দিই। সবাই মিলে একসাাথে খেয়ে-পরে বাঁচতে চাই।"

আরেক মালদইয়া শুক্কা মোহাম্মদ বলেন, "অনেকেই বলার চেষ্টা করেন যে আমরা মালদইয়া, জামায়াত-বিএনপি'র সমর্থক। কিন্তু বংশানুক্রমে ভারত থেকে আসা মানুষ কিভাবে জামায়াত-বিএনপি'র সমর্থক হয়?"

ঠাকুরগাঁওয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মালদইয়াদের বিরোধ আরও প্রকট। প্রায়ই স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের মারামারির ঘটনা শোনা যায়। এধরনের বিরোধে অসংখ্য মামলা চলমান।

রানীশংকৈল থানার রাউতনগর গ্রামের মালদইয়াদের মধ্যে অনেকে শিক্ষার দিক থেকে স্থানীয়দের চেয়েও এগিয়ে আছে বলে জানা যায়। এছাড়া রাজনীতিতেও তাদের সম্পৃক্ততা মিলে। চেয়ারম্যান এমনকি মেম্বার পদেও নির্বাচনে তাদের জয়লাভের উদাহরণ রয়েছে।

বিরোধ থাকলেও মালদইয়াদের অত্যন্ত পরিশ্রমী ও কৌশলী বলেই মনে করেন স্থানীয় মানুষ। খেয়ে না খেয়ে বর্গা জমি চাষের অর্থ সঞ্চয় করেন বলে মালদইয়াদের সুনাম রয়েছে। সেই টাকায় জায়গাজমি কিনে ধনসম্পদে মালদইয়ারা এখন অনেকটাই এগিয়ে আছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

তবে স্থানীয়দের অনেকে এখন তাদের সামাজিকভাবেও গ্রহণ করছেন। দিনাজপুরের কর্নাইয়ের হরেন্দ্র রায় বলেন, "ভোটের দিনের ঘটনায় মামলা হয়েছে, মামলা চলমানও রয়েছে। তবে আমরা আর ঝগড়া-বিবাদ নিয়ে থাকতে চাই না। সবাই মিলেমিশেই থাকতে চাই।"


  • দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে তথ্য সংগ্রহে আমাদের প্রতিনিধি সহায়তা করেছেন।

Related Topics

টপ নিউজ

মালদইয়া / অভিবাসী / শরণার্থী / দেশভাগ / উদ্বাস্তু

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ভারতীয় উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করা পাক সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু
  • ‘আমরা ওদের থেকে দ্বিগুণ টাকা আদায় করব': প্রতিরক্ষা ব্যয় ৫ শতাংশ না করায় স্পেনকে ট্রাম্পের হুমকি
  • আয়াতুল্লাহ খামেনি কোথায়? সর্বোচ্চ নেতার অনুপস্থিতি নিয়ে ইরানে উদ্বেগ বাড়ছে
  • ২০২৪-এর নির্বাচন ‘এত ভয়ংকর’ হবে জানলে দায়িত্বই নিতাম না: সাবেক সিইসি আউয়াল
  • গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ধামাকা শপিং সংশ্লিষ্টদের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ
  • ভবিষ্যতের বাইক! ঘোড়ার আদলের রোবটবাইক মোটরসাইকেল নির্মাতা কাওয়াসাকির

Related News

  • উদ্বাস্তু: প্রিয়জন ও ভিটেমাটিকে নীরবে বিদায় জানিয়ে যাওয়া 
  • শরণার্থীদের বোঝা সবচেয়ে বেশি বহন করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর: গুতেরেস
  • হার্ডওয়্যারের দোকানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের গুজবে যেভাবে উত্তাল হলো লস অ্যাঞ্জেলেস
  • ২০২৪ সালে প্রবাসে রেকর্ড ৪,৮১৩ অভিবাসীর মৃত্যু, গড় বয়স ৩৮ বছর: গবেষণা
  • অবৈধভাবে থাকলে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে: ভারতীয়দের সতর্ক করল মার্কিন দূতাবাস

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ভারতীয় উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করা পাক সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু

2
আন্তর্জাতিক

‘আমরা ওদের থেকে দ্বিগুণ টাকা আদায় করব': প্রতিরক্ষা ব্যয় ৫ শতাংশ না করায় স্পেনকে ট্রাম্পের হুমকি

3
আন্তর্জাতিক

আয়াতুল্লাহ খামেনি কোথায়? সর্বোচ্চ নেতার অনুপস্থিতি নিয়ে ইরানে উদ্বেগ বাড়ছে

4
বাংলাদেশ

২০২৪-এর নির্বাচন ‘এত ভয়ংকর’ হবে জানলে দায়িত্বই নিতাম না: সাবেক সিইসি আউয়াল

5
বাংলাদেশ

গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ধামাকা শপিং সংশ্লিষ্টদের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

6
আন্তর্জাতিক

ভবিষ্যতের বাইক! ঘোড়ার আদলের রোবটবাইক মোটরসাইকেল নির্মাতা কাওয়াসাকির

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net