Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

মহেশ্বরকাটি মাছের আড়ত: দক্ষিণবঙ্গের বৈচিত্র্যময় মাছের যত কেনাবেচা!

সাতক্ষীরা মাছের জেলা। দক্ষিণাঞ্চলের মাছের একটা বিরাট অংশ উৎপাদিত হয় সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে। ঘেরেই লোনা জলের মাছগুলোর চাষ বেশি। তাছাড়া নদী, খাল তো আছেই। মহেশ্বরকাটির আশেপাশে যদ্দুর দুচোখ যায়, ঘের আর ঘের। এসব ঘেরে সাতক্ষীরার সাদা সোনা চিংড়ি ফলে। যেমনি তার স্বাদ, তেমনি রূপ।
মহেশ্বরকাটি মাছের আড়ত: দক্ষিণবঙ্গের বৈচিত্র্যময় মাছের যত কেনাবেচা!

ফিচার

অনুস্কা ব্যানার্জী
24 November, 2024, 10:05 pm
Last modified: 25 November, 2024, 01:40 pm

Related News

  • রপ্তানি অনুমতিপত্র জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় মাছ রপ্তানি বন্ধ
  • ৫ মে বাজারে আসবে সাতক্ষীরার আম
  • চট্টগ্রামে ফিশিং ভ্যাসেলের জালে ধরা ১৫২ কেজির ভোল পোয়া, ১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি
  • সাগর থেকে ২২ জেলেসহ চার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
  • সাতক্ষীরা: হঠাৎ তলিয়ে গেল বাঁধের দেড়শ ফুট, প্লাবনে মলিন ১০ গ্রামের ঈদ-আনন্দ

মহেশ্বরকাটি মাছের আড়ত: দক্ষিণবঙ্গের বৈচিত্র্যময় মাছের যত কেনাবেচা!

সাতক্ষীরা মাছের জেলা। দক্ষিণাঞ্চলের মাছের একটা বিরাট অংশ উৎপাদিত হয় সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে। ঘেরেই লোনা জলের মাছগুলোর চাষ বেশি। তাছাড়া নদী, খাল তো আছেই। মহেশ্বরকাটির আশেপাশে যদ্দুর দুচোখ যায়, ঘের আর ঘের। এসব ঘেরে সাতক্ষীরার সাদা সোনা চিংড়ি ফলে। যেমনি তার স্বাদ, তেমনি রূপ।
অনুস্কা ব্যানার্জী
24 November, 2024, 10:05 pm
Last modified: 25 November, 2024, 01:40 pm
মহেশ্বরকাটির আড়তে রাস্তার দুপাশ জুড়ে ৫০ খানা ঘর। এগুলো যদিও মানুষের থাকার ঘর নয়। মাছের ঘর। শহুরে মানুষ যেটাকে দোকান বলে চেনেন, মহেশ্বরকাটি গ্রামের মানুষের কাছে সেটাই ঘর। একেকটা ঘরের একেকজন মালিক। এরকম ৫০ খানা ঘরের সম্মিলিত রূপটাই হচ্ছে মাছের আড়ত। কেউ বলেন আড়ত, কেউবা বলেন মাছের সেট। ছবি: অনুস্কা ব্যানার্জী/টিবিএস

ভোরের গা শিরশিরে আবহাওয়া। চারপাশ মুড়ে রেখেছে কুয়াশার চাদর। খুব দূর পর্যন্ত কিছুই ভালোভাবে দেখা যায় না। গন্তব্য মহেশ্বেরকাটি। 

জায়গাখানা সাতক্ষীরা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে। আশাশুনি উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটারের রাস্তা। অর্থাৎ, সাতক্ষীরা আশাশুনির মাঝামাঝি একটা জায়গা, যদিও সীমানা বলছে মহেশ্বরকাটি আশাশুনি উপজেলার মধ্যেই। 

ঘড়িতে বেলা ৮ টার আশেপাশে। কুয়াশা তখনও কাটেনি। রোদ উঠছে কেবল কেবল। শীতের নরম রোদ্দুর জানান দিচ্ছে কুয়াশার ছুটির ঘণ্টা। মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তের কাছাকাছি আসতেই একটা মেছো গন্ধ নাকে এলো। খানিকটা আশ্বস্ত হলাম। আবছা কুয়াশাতেও নাসারন্ধের দৌলতে বোঝা গেল, পথ ভুল করিনি। অবশ্য, এ আর এমন কী! বাঙালি সন্তান মাছের গন্ধ চিনবে সে তো কোনো আলাদা কৃতিত্বের কথা নয়। 

একটু বেলা বাড়তেই মানুষের আনাগোনা বাড়তে লাগল। আসতে থাকলো বিভিন্ন ধরনের মাছ। যেন মাছেদেরই মিলনমেলা। মানুষগুলো ভুল করে ঢুকে পড়েছে। 

মহেশ্বরকাটির আড়তে রাস্তার দুপাশ জুড়ে ৫০ খানা ঘর। এগুলো যদিও মানুষের থাকার ঘর নয়। মাছের ঘর। না, না, পুকুর-টুকুর নয়। ব্যাপারটা একটু খোলসা করেই বলি। শহুরে মানুষ যেটাকে দোকান বলে চেনেন, মহেশ্বরকাটি গ্রামের মানুষের কাছে সেটাই ঘর। একেকটা ঘরের একেকজন মালিক। এরকম ৫০ খানা ঘরের সম্মিলিত রূপটাই হচ্ছে মাছের আড়ত। কেউ বলেন আড়ত, কেউবা বলেন মাছের সেট। 

সাতক্ষীরা মাছের জেলা। দক্ষিণাঞ্চলের মাছের একটা বিরাট অংশ উৎপাদিত হয় সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে। ঘেরেই লোনা জলের মাছগুলোর চাষ বেশি। তাছাড়া নদী, খাল তো আছেই। মহেশ্বরকাটির আশেপাশে যদ্দুর দুচোখ যায়, ঘের আর ঘের। এসব ঘেরে সাতক্ষীরার সাদা সোনা চিংড়ি ফলে। যেমনি তার স্বাদ, তেমনি রূপ।

সুন্দরবন অধ্যুষিত সাতক্ষীরা জেলার মানুষের তাই ইলিশ নিয়ে আদিখ্যেতা কম। ওরা চিংড়ির যে স্বাদ একবার পেয়েছে, তাতেই মজে আছে। এই এলাকার মানুষের রান্নাঘরে চিংড়ি যেন নিত্য সঙ্গী। কোনো একটা শাক-সবজি রান্নায় চিংড়ি থাকা-ই চাই। লাউ-চিংড়ির মতোন তরকারি পরিচিত হলেও উচ্ছে-আলু-চিংড়ি ভাজা, চিংড়ি দিয়ে লাল শাক, পটল চিংড়ি বাটার মতোন রান্না দক্ষিণবঙ্গের স্বাদে শুধু ভিন্নতাই এনেছে তাই নয়, এনেছে স্বকীয়তা। 

দক্ষিণবঙ্গের চিংড়ি সংস্কৃতি এমনই, কেউ কারো বাড়িতে বেড়াতে গেলে মিষ্টির বদলে হাতে করে কুচো চিংড়ি নিয়ে আসেন। আবার অতিথির পাতে মাংসের বদলে বাগদা কিংবা গলদা চিংড়ি তুলে দেওয়াকেই শ্রেয় মনে করেন দক্ষিণবঙ্গের কর্তাগিন্নিরা। এই অঞ্চলের ছেলে থেকে বুড়ো সক্কলে মাছের ব্যাপারে বড্ড খুতখুঁতে। তরকারি হোক যেমন-তেমন, মাছ হতে হবে সেরার সেরা। যার যেমন সামর্থ্য, তার মধ্যে সেরা মাছটা কেনবার চেষ্টা থাকে সকলের। এসব গল্প এখন থাক। ফিরে আসা যাক, মহেশ্বরকাটি আড়তে। 

মাছের পাইকারি বাজার

আপনারা যারা শহরে বেড়ে উঠেছেন, তাদের কাছে মাছের আড়তের কেনাবেচা সম্পর্কে খুব স্বচ্ছ ধারণা না থাকাটাই স্বাভাবিক। এমনকি, খোদ দক্ষিণাঞ্চলের শহুরে বাসিন্দারা আড়তের মাছ নিয়ে অতটা ওয়াকিবহাল নন। মাছের আড়তগুলোতে মাছ বিক্রি হয় সাধারণত পাইকারি দরে। আর ক্রেতারা মূলত মাছ ব্যবসায়ী। মহেশ্বরকাটি আড়তের ব্যাপারটাও খানিকটা তাই। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাছ ব্যবসায়ীরা দক্ষিণবঙ্গের মাছ কিনতে মহেশ্বরকাটিতে আসেন। পাইকারি দরে মাছ কেনার একটা ওজনসীমাও তাই মুখে মুখে বাধা থাকে। কোনো ঘরে সর্বনিম্ন ২০ কেজি, আবার কোনো ঘরে কেজি ত্রিশেক। তবে সব ঘরের-ই কিছু বাধা-ধরা ক্রেতা থাকেন। যারা প্রথম থেকেই সেই ঘরে কেনাবেচা করেন। তাদের জন্যে পাইকারি দরে হিসাবটা থাকে সর্বনিম্ন কেজি পাঁচেকের ক্রয়সীমার।

এ তো গেল ক্রেতাদের কথা। এবারে বিক্রেতাদের কথাও কিছু বলা যাক। এই আড়তে শুধু যে ঘের মালিকরা তাদের জমির কেজি কেজি মাছ মহেরশ্বরকাটি ঘরে বিক্রি করতে আসেন এমনটা নয়; আসেন অনেক গেরস্থ বাড়ির ছেলেরাও। বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ করে বাড়ির সকলে মিলে খাওয়া হলো। আর কিছু রেখে দেওয়া হলো আড়তে বিক্রি করবার জন্যে।  

দুইহাতে কেজি দশেকের বিশাল দুটো রুই মাছ। একজন যুবক এগিয়ে আসছিলেন মহেশ্বরকাটির একখানা ঘরের দিকে। মাছ দুটো যেন মোহিনী দৃষ্টিতে তখনও চেয়ে আছে আমার দিকে। পেল্লায় সাইজের এই রুইকে পাকা রুই বলে এদিককার স্থানীয় ভাষায়। বাড়িতে জামাই এলে এমন রুই মাছ কেনার রীতি দক্ষিণাঞ্চলে। 

দই দিয়ে এই পাকা রুই রান্না করলে কী চমৎকার স্বাদ আসতে পারে ভাবতেই একটা অন্য জগতে চলে যাচ্ছিলাম প্রায়। মিনিট পনেরোর ব্যবধানে চোখের সামনে পাকা রুইয়ের মালিকানা বদল হলো। মাছঘরের মহাজন কিনে নিলেন মাছ দুটো। এই যুবকের বয়ানে, খুব বেশি লাভ যে হয়েছে তা নয়। তবে শহরে যাতায়াত ভাড়া, মাছ তাজা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া সমস্ত কিছু বিবেচনায় আড়তে বেচাটাই সুখ ও সুবিধার। 

সাবেকি প্রথায় কেনা-বেচা বেঁচে আছে আজও 

মাছের আড়তে কেনাবেচার ক্ষেত্রে এখনো দক্ষিণাঞ্চলে অনেকটা সাবেকি রীতি চালু আছে। যেরকমভাবে কোনো পণ্য নিলামে তুলে দর হাঁকা হয়, ঠিক সেরকমভাবেই মাছের ঘরগুলোতে কেনাবেচার চল। 

বিক্রেতা একেকটা মাছের দর হাঁকেন, ক্রেতা যে দামে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেটাতেই কিনে নেন। আবার মাঝামাঝি একটা দরে মধ্যস্থতাও হয় মাঝেমধ্যে। 

দর হাঁকাহাঁকির সময়ে মাছের ঘরগুলো গমগম করে মানুষে। সেই সময়টাতে হইচই আর ভিড়ের ঠেলায় পা ফেলা দায়। তবু এরমধ্যে একটা আলাদা আনন্দ, জিতে নেওয়ার আনন্দ। ঝলমলে রূপালি রঙের সারি সারি মাছ দেখলে ভিড়ভাট্টার ঝক্কি পোহানো অতটাও কঠিন মনে হবে না। শীতকাল মানেই তো ফুলকপি আর টমেটো দিয়ে মায়ের হাতের মাছের ঝোল। 

মহেশ্বরকাটি আড়তে দরদাম দেখে বুঝলাম নিলামী প্রথা যতই সাবেকি হোক না কেন, অপ্রচলিত নয়। এই প্রথায় ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনেই কথা বলার সুযোগ পান বিস্তর। পুরোনো বলেই সবকিছু যে ফেলনা নয় সেটাও মনে হলো। 

ঘের থেকে তোলা মাছ নির্দিষ্ট ঘরে পৌঁছানোর পরে বিক্রেতারা একটা ভিত্তি দাম থেকে হাঁক দেওয়া শুরু করেন৷ ধীরে ধীরে ৫-১০ টাকার তফাতে বাড়তে থাকে এই দর। এভাবে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দের দরে পৌঁছালে তারাও সম্মতি জানান। আবার কোনো ক্রেতা এরচেয়ে বেশি দর দিতে প্রস্তুত থাকলে তিনিও তার পছন্দের দাম বলেন। আর এভাবেই হয় মাছের মালিকানা বদল। 

এসবের পর দরদামে বনিবনা নাহলে অন্য ঘরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বহুদিনের লেনদেনে একেকটা ঘরের সাথে একেকজন ক্রেতার এমনই হৃদ্যতার সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়, দামের সামান্য হেরফেরেও ক্রেতা ঘর বদল করতে চান না। বিক্রেতাও ব্যবসা বাঁচিয়ে খানিকটা ছাড় দেওয়ার মনোভাব রাখেন। তাই এসব বিষয় নিয়ে খুব একটা গোলমাল বাঁধে না। 

মাছের আড়তে দামটা নির্ধারণ হয়ে থাকে দিনের হিসেবে। মাছের যোগানের ওপর ভিত্তি করে যেহেতু সমস্ত আড়ত চলে, তাই প্রত্যেক ঘরে দামের হেরফেরও ৫/১০ টাকার বেশি হয় না। যেহেতু ক্রেতার ঘুরে ঘুরে কেনবার স্বাধীনতা আছে, সেক্ষেত্রে বেশি দাম রাখলে ক্রেতা কিনবেই বা কেন? 

দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের কথা 

বেলা ১২টা নাগাদ একেবারে জমজমাট বাজার। মনে হতে থাকলো কোনো উৎসবের আয়োজন। এই ভিড়ের বেশিরভাগ মানুষই সাতক্ষীরা জেলার বাইরের। ভিড়টা জমতে সময় লাগার কারণ হচ্ছে সাতক্ষীরা থেকে সেসব জায়গার দূরত্ব। এরা প্রত্যেকেই এসেছেন অনেক পরিমাণ মাছ কিনতে। কারণ গাড়িভাড়া থেকে শুরু করে বরফের চাই কেনা, সাথে যাওয়া-আসার পরিশ্রম। টাকা উশুলের ব্যাপার আছে। 

এই সমস্ত ক্রেতা সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিশেষ মাছগুলোকে তাদের ক্রয়তালিকায় ওপরের দিকে রাখেন। যেরকম ধরা যাক হরিণা চিংড়ি, পার্শে, ট্যাংরা, ভেটকি কিংবা ভাঙ্গান। কারণ তাদের ক্রেতারা অন্যসব জেলায় এ ধরনের মাছ কিনতে উৎসুক থাকেন। যেহেতু দূরবর্তী জেলা থেকে সব ব্যবসায়ী মাছ এনে দিতে পারেন না, তাই এসব মাছের দামটাও একটু চড়িয়ে বিক্রি করা সম্ভব। 

এমনই একজন ক্রেতা খুলনা জেলার মাছ ব্যবসায়ী জলিল। ২৫ বছর ধরে মাছের ব্যবসা করেন তিনি। খুলনা থেকে ২০ বছরের বেশি সময় মহেশ্বরকাটিতে আসেন মাছ কিনতে। ব্যবসার শুরুর দিকে এক পরিচিত মাছ ব্যবসায়ীর কাছে মহেশ্বরকাটির সন্ধান পান। এরপর থেকে মাছের টানে, খরিদ্দারের চাহিদায় এই আড়তে আসতেই হয়েছে বারেবার। 

মহেশ্বরকাটিতে মাছ কেনবার বিশেষত্ব হিসেবে এই ক্রেতা মনে করেন, দক্ষিণের ঘেরের মাছের স্বাদ বেশি। সাথে সদ্য তুলে আনা তাজা মাছ পাইকারিতে কেনা যায়। খুলনা থেকে মহেশ্বরকাটির দূরত্বটাও বেশি নয়। যাতায়াত ভাড়া তাই খুব একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।  

বরফের কল যেভাবে মাছকে তাজা রাখে  

শীতকালের সময়টাতে মাছ যদিও নষ্ট হতে সময় লাগে, তবে অন্যান্য সময়ে দূরে পরিবহনের ক্ষেত্রে একটা ঝক্কি তো থাকেই। মহেশ্বরকাটি আড়তের কাছেই তাই বরফের কল। আড়তের পাশেই একটি ঘেরা জায়গায় কম্প্রেসরের বহু সূক্ষ্ম পাইপের সমারোহ দেখে বোঝা যায় কতটা বিশাল পরিমাণের বরফ এই কল থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত হয়। 

আবার বিশাল বিশাল বরফের খণ্ড ভাঙার জন্য রয়েছে আলাদা যন্ত্র। আড়তে মাছ ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এই যন্ত্রের সামনে লাইন দেওয়া শুরু হয়। এখানে বরফের চাই বিক্রি হয় কেজিদরে। দূরের ক্রেতাদের কাছে এই বরফের টুকরো অনেকটা আশীর্বাদের মতন। মাছের পরিমাণ অনুযায়ী তারা বরফের চাই কিনে থাকেন। ফলে দূরের রাস্তাতেও মাছ থাকে সতেজ। 

তবে বাজার যেহেতু পাইকারি-ভিত্তিক, ক্রেতাদের বরফ কিনতেও হয় অনেকখানি। বরফের কল ঘিরেও মহেশ্বরকাটির বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আবার এ বরফের কল জানান দেয় এই অঞ্চলের মাছের জনপ্রিয়তা। শুধু বরফ নয়, শোলা দিয়ে তৈরি এক ধরনের চৌকো বাক্সও (ককসেট) বিক্রি হয় আড়তে। এসব বাক্স তাপ অপরিবাহী হওয়ায় মাছ দীর্ঘক্ষণ ভালো থাকে। এই বাক্সে বরফ সহযোগে মাছ দেশ থেকে বিদেশেও পাঠানো হয়। 

দক্ষিণের বৈচিত্র্যময় মাছ 

মহেশ্বরকাটি আড়তের ঘরগুলোর মেঝেতে কেজির পর কেজি মাছ বিছানো। মাছ বেছে ওজনে তোলার জন্যে স্টিলের মাঝারি সাইজের গামলা আর একটা ওজন করবার মেশিন। 

ক্রেতা বিক্রেতার কেনা-বেচার নিত্য দৃশ্যের ভেতরে চোখ পড়লো একখানা বিড়ালের ওপর। মনে হলো, তারও এখানে রোজকার যাতায়াত। মাছের গন্ধে বিভোর হয়ে ম্যাওম্যাও করে বিড়ালখানা ঘুরে বেড়াচ্ছিল এ ঘর–ও ঘর। মালিক ক্রেতার ব্যস্ততার সময়টাতে মাছ বাগানোর সুযোগটা সে কিন্তু কাজে লাগালোও ঠিকঠাক। খপ করে ধরে ফেললো একখানা নাইলোটিকা। বিড়ালটা মাছের ঘরের পাশে বসেই বেশ তৃপ্তি করে খাচ্ছিল মাছখানা। বোঝা গেল এই মাছের আড়তের দৌলতে ওকে অন্তত অভুক্ত থাকতে হয় না। 

মহেশ্বরকাটিতে সারাবছরই কমবেশি চিংড়ি পাওয়া যায়। তবে গোনমুখ অর্থাৎ পূর্ণিমা বা অমাবশ্যায় এদের প্রজননের হার বাড়ে, তাই এই সময়গুলোতে চিংড়ি ধরা পড়ে বেশি। আবার শীতকালে সবাই ঘেরের মাছ ধরে ফেলে, অর্থাৎ ডিসেম্বর–জানুয়ারি সময়টাতে। তাই এই সময়েও চিংড়ির যথেষ্ট যোগান থাকে। চাহিদাও এই দৌড়ে পিছিয়ে নেই। প্রতিটা ঘরে মাছের বিভিন্ন প্রজাতি থাকলেও যে মাছটা সব ঘরে দেখা গেল তা হলো চিংড়ি। 

হরিনা চিংড়ি থেকে গলদা সবই রয়েছে। গলদা চিংড়ির সাইজ হাতের আঙ্গুলের ডগা থেকে কব্জির সমান। দামটাও তুলনামূলক কম। গলদা চিংড়ির মাথাটাই সবথেকে বড় হয়। এতে মাংসের ভাগ কম থাকে। আর বাগদা চিংড়ির ক্ষেত্রে মাথা ছোটো, দেহটা বড়ো। মাংসের পরিমাণটাই বেশি। জনপ্রিয়তার দিক থেকে গলদা, বাগদা অবশ্য একই কাতারে।   

এছাড়া আড়তের ঘরগুলোতে বাইন, ভেটকি, ভাঙ্গান তো আছেই। রুই, কাতলা, পার্শে, ট্যাংরা, গুলের মতোন মাছের রমরমা। মায়া (মৌরলা), জাপানি পুটি, বেলে, নাইলোটিকাও দেখা গেল। যে মাছ দেখা গেল না তা হচ্ছে বোয়াল। স্থানীয়দের ভাষ্যে, আগে বোয়াল উঠতো রোজ। এখন আর একদমই দেখা যায় না। 

সাতক্ষীরা অঞ্চলে বাঁশপাতা, মায়া আর পুঁটি মাছের একটা অন্যরকম চাহিদা আছে। এ সমস্ত ছোটো মাছ চচ্চড়ি করে কিংবা ভাজা হিসেবে ডালের সাথে খাওয়ার রীতি। যেহেতু দাম কম এবং জনপ্রিয়তা আছে ছোটো মাছগুলোই দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। তবে মাছের যতই প্রকারভেদ থাকুক, বারেবারে শোনা গেল চিংড়ির জয়গান। নানা ক্রেতা-বিক্রেতা একই কথা উল্লেখ করলেন বারবার। 

দাম নিয়ে যত কথা 

মাছে-ভাতে বাঙালি'র মাছ দেখলে চোখ চকচক করবে সে তো জানা কথা। আর মাছের জেলার এমন আড়তে এলে তো কথা-ই নেই। শুধু মাছের বৈচিত্র্যের কথা যদি বলি, সেটা সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু দামে কম, মানে ভালোর সাথে মাছের বৈচিত্র্য চাইলে আড়তগুলোর দ্বারস্থ হতে হয়। সেসব আড়তের মধ্যে আবার মহেশ্বরকাটি বিখ্যাত। 

দামের ব্যাপারে বিভিন্ন ঘর ঘুরে সেদিনের মাছের বাজার সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া গেল। হাতের কব্জির সমান সাইজের যে গলদা চিংড়ির কথা একটু আগেই বলছিলাম মহেশ্বরকাটি আড়তে, এই ছাটি গলদা চিংড়ির দাম কেজিপ্রতি ১,২০০ টাকা। অথচ সাতক্ষীরা শহরের বাজারে কিনতে গেলে কিছুতেই ১,৬০০-১,৮০০ টাকার নিচে পাওয়া যাবে না। চিংড়ির ওজন বাড়াতে জল পুশ করবার যে ঠকবাজি, সেসবও এই আড়তে নেই। 

একইভাবে গুলে মাছ কেজিপ্রতি ৪০০, মাঝারি চিংড়ি ৬০০, মাঝারি তেলাপিয়া ১৩৫, ছোট তেলাপিয়া ৮৫, নাইলটিকা ২০০, রুই (সাইজ অনুয়ায়ী) ১৮০-২২০ টাকায় পাওয়া যাবে মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তে। 

এছাড়া কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় ছোটো পার্শে আর ২৫০-৩০০ টাকায় বড় পার্শে, ২০০ টাকায় মায়া, ১৫০-১৬০ টাকায় কাতলা  আর ১২০/১৩০ টাকায় পেয়ে যাবেন সিলভার কার্প। 

আড়তে এসে আরেকখানা ব্যাপার বোঝা গেলো, তা হচ্ছে সাধারণ বাজার এবং এই মাছের আড়তের মধ্যে বিভিন্ন মাছভেদে দামের পার্থক্য কেজিপ্রতি প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। চিংড়ি মাছের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা আরো বেশি। দাম তুলনামূলকভাবে বেশ কম তো বটেই। আর তাই অনেক মাছপ্রেমী ক্রেতা নিজেদের খাওয়ার জন্যেই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে বেশি পরিমাণ মাছ কিনে সংরক্ষণ করে খান। 

সাতক্ষীরা শহরের আব্দুল্লাহ সেরকমই একজন খুচরা ক্রেতা। তিনি বছরের মধ্যে ৮-১০ বার মহেশ্বরকাটি আসেন মাছের টানে। একেবারে অল্প দামে মাছ পান, তাই বেশি করে কিনে নিয়ে যান। এভাবে প্রায় বছর নয়েক ধরে আড়তের মাছ কেনেন তিনি। শুধু যে কম দামের জন্যে আসেন তেমন নয়, ঘেরের কাছাকাছি জায়গা থেকে মাছ কেনবার ব্যাপারটাই বেশ অন্যরকম, উল্লেখ করলেন তিনি। 

যেভাবে মহেশ্বরকাটি আড়তের গোড়াপত্তন 

১৯৯৫ সালের দিকে ৩৫ খানা ঘর নিয়ে মহেশ্বরকাটি মাছের আড়ৎ প্রাথমিকভাবে শুরু হয়। আশেপাশে তখন লোনাপানি ঢুকিয়ে বিঘার পর বিঘাজুড়ে ঘের বানানো শুরু হয়েছে। চাষের এসব মাছ ঘের থেকে তোলবার পর বাজারজাতের জন্যে ছুটতে হয় সাতক্ষীরা শহরের বিনেরপোতা কিংবা বড়বাজারে। ঘেরের মাছ কেনাবেচার কথা ভেবেই মহেশ্বরকাটিতে শুরু হলো মাছের আড়ত। 

সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি আর কালিগঞ্জের লোকেরাই মাছঘরের মালিক। তখনও ভাবা যায়নি এত দ্রুত এত বেশি ছড়িয়ে পড়বে এ আড়তের কথা। কিন্তু ছড়িয়ে পড়লো মুখে মুখে, দূর দূরান্তে। তখন ঘরের সংখ্যা বাড়তে থাকলো। রাস্তার বাদিকে ৩৫টা ঘর আর দুরুদুরু বুকে কিছুটা অনিশ্চয়তা নিয়ে যে কেনাবেচা শুরু হয়েছিল, তা বছর দুয়েকের মাথায় ৫০ এর বেশি ঘরে বেড়ে উঠলো। তখন থেকেই লেগে আছে নিত্য ভিড়। 

এরপর থেকে এসব ঘরের মহাজনদের আর ফিরে তো তাকাতে হয় ই নি; বরং মেলেনি দম ফেলবার ফুসরত। ঘরগুলোতে কর্মচারী বেড়েছে, বেড়েছে মানুষের কর্মসংস্থান। আশাশুনি উপজেলার নুন আনতে পান্তা ফুরোনো অনেক গরিব মানুষের দুটো ডাল-ভাত জোটে এই মাছের আড়তের গোড়াপত্তনের পর থেকে। এসব সব তথ্য জানা গেলো বেশ কয়েকটা ঘর মালিক এবং ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে। 

এই আড়তের সবচেয়ে সুবিধার কথাও জানাচ্ছিলেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তারা জানালেন অন্যান্য জায়গার আড়তের মতো এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই। ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রায় সবাই একই অঞ্চলের মানুষ হওয়ার তাদের সম্পর্কও যথেষ্ট ভালো এবং বাইরে থেকে যারা মাছ কিনতে আসেন, তাদের মুখেও এইসব বিষয়ে শোনা গেল প্রশংসা ৷ 

নেই কোনো সিন্ডিকেটের ঝক্কি 

অনেকক্ষেত্রে মাছের আড়তের একটা কেন্দ্রীয় ঘর থাকে যেখানে রোজকার কেনাবেচার হিসেব-নিকেশ রাখা হয়। তবে মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তে এমন কোনো হিসেব-নিকেশের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা নেই। এখানে হিসেবটা ঘরকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। প্রতিটি ঘরেই ক্যাশবক্সের সামনে মালিককে বা ম্যানেজারকে খাতা-কলম হাতে ব্যস্তভাবে বসে থাকতে দেখা গেল। দোকানের সহকারীর থেকে হিসেব শুনছেন আর খাতায় টুকে রাখছেন গোটা হিসেব। কত কেজি মাছ, কত টাকায় কেনা হলো, কত টাকায় বিক্রি হলো ইত্যাদি খুব দক্ষ হাতে লিখে যাচ্ছেন তারা। 

বিভিন্ন ঘর ঘুরে দেখা গেলো এতো এতো মাছের হিসেব সংরক্ষণ করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। বড় বড় ঘরগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়ে থাকে। আর ছোটো কিংবা অপেক্ষাকৃত নতুন ঘরগুলোতে কেনাবেচা কিছুটা কম, অংকের হিসেবে সেটা ১০-১৫ হাজার।  

তবে মাছের সিজনে কেনাবেচা অনেকটা বাড়ে ছোটো-বড়ো দুই ধরনের ঘরেই। শীতের মৌসুমে প্রায় প্রতিটা ঘরে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়। এসব কেনাবেচার সিংহভাগ আসে পার্শে, ট্যাংরা  আর চিংড়ি থেকে। 

সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রায় সারাবছর পার্শে পাওয়া গেলেও শীতকালের মতোন সুস্বাদু পার্শে তেমনভাবে মেলে না। শীতের সময়টাতে পার্শের সাইজ যেমন বড়, দামও তেমনি কম। ট্যাংরা মাছের ক্ষেত্রে ছোটো, বড় দুরকমের ট্যাংরার একটা আলাদা স্বাদ। ছোটো ট্যাংরা ঝাল আর চচ্চড়ির জন্যে অনবদ্য। চিংড়ির ব্যাপারটাও তাই। একেক সাইজের চিংড়ির একেক স্বাদ, একেক ব্যবহার। তবে পার্শের বেলায় তেমনটা কিন্তু নয়। পার্শের সাইজ যত বড়ো, তৃপ্তি তত বেশি। 

এখানে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, তবে ছোটো পার্শে বাজারে আসে কেন? আর কেনে-ই বা কারা? উত্তর হল– যারা পার্শে মাছের দারুণ ভক্ত তারাই। সিজন থাক বা না থাক, মনটা তো পার্শে পার্শে করে। তাদের জন্যেই ছোটো পার্শে আসে বাজারে।  

মাছ ঘর নিয়ে মালিকেরা যা ভাবেন 

মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তের অন্যতম বড় ঘর জগত জননী ফিস। ২০০৬ সালে সুবোল চন্দ্র সানার হাত ধরে এটির যাত্রা শুরু হয়। একদম প্রথমদিকের ঘর না হওয়া সত্ত্বেও বিগত ১৮ বছরে ব্যবসা ভালোই জমিয়ে তুলেছেন সুবল। জগত জননী ফিস ঘরে মানুষ আসে আন্তরিক ব্যবহার আর মাছের বিভিন্ন জাতবৈচিত্র্যের কারণে। সেদিন এই ঘরে দেখা গেল ১০ জাতের চিংড়ি মাছ— যার মধ্যে ৪ প্রকার পাওয়া যায় বারো মাস। অন্য ৬ জাত শীতকালীন চিংড়ির। 

খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে সুবল চন্দ্র সানার ঘরে বিক্রেতারা আসেন চিংড়ির টানে। আবার পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ,আশাশুনি উপজেলা, খুলনার কয়রা উপজেলা থেকে মাছ বিক্রি করতে আসেন অনেক বিক্রেতা। এ ব্যবসায় সারাবছর কমবেশি আয় রোজগার লেগে থাকে। কর্মচারীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে একেবারে লাভ যে কিছুই থাকে না তা নয়। 

তবে সমস্যা দেখা দেয় বন্যার সময়। এবারের বন্যায়ও অনেক ঘের ভেসে গেলো। মাছের ক্ষতি মানেই আমাদের ব্যবসার ক্ষতি। শীতের মৌসুমে ক্ষতি কাটানোর চেষ্টা থাকবে। কিন্তু যে ক্ষতি একবার হয়ে যায়, তা আর পূরণ করা সম্ভব হয় না। আশেপাশে তখন ক্রেতাদের ভিড়। এরমধ্যেই কিছুটা ব্যস্ত ভঙ্গিতে এসব কথা জানাচ্ছিলেন জগত জননী ফিসের মহাজন সুবল চন্দ্র সানা। 

২০১০ সালে এম এম ফিস নামের মাছ ঘর মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তের সাথে যুক্ত হয়। এম এম ফিসের সত্ত্বাধিকারী মোফাজ্জল হক জানালেন, তিনি সব রকমের সাদা মাছ বিক্রি করেন। সাদা মাছ বলতে দক্ষিণের মানুষ ঘেরের রুই, কাতলা, মৃগেল, চিংড়ি থেকে শুরু করে পাঙ্গাসসহ এই গোত্রীয় মাছকে বুঝিয়ে থাকেন। 

এম এম ফিসের ঘরখানা খুব বড় ঘর নয়, বিক্রিও মাঝারি মানের। তবু মাছের ব্যবসাতেই থাকতে চান মোফাজ্জল। মাছের এই আঁশটে গন্ধের মধ্যেই কিছু একটা খুঁজে পান মোফাজ্জলের মতোন মধ্যবিত্ত ঘর মালিকরা। মাছের সাথে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের একটা তো মিতালি আছেই। তারা মাছ খান, মাছ ধরেন, মাছ নিয়ে নাড়াচাড়া করে তৃপ্তি পান।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই মহেশ্বরকাটি মাছের আড়তে লোকজন কমতে শুরু করে। সন্ধ্যে নামার মুখে ঘরমালিক আর কর্মচারী ছাড়া আর তেমন কাউকে দেখা যায় না। এই সময়টাতে সব কখানা ঘরে গোছগাছের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। কয়েকঘণ্টা আগেও যে মেঝে মাছে ভর্তি ছিল সেই মেঝে এখন একেবারে ফাঁকা। মেঝে ধোয়ামোছার কাজ চলতে থাকে। যেন পরের দিনের ব্যস্ত গল্পের প্লট খানিকটা সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হচ্ছে। 

সুয্যি তখন ডুববে ডুববে করছে। চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে আসে। বাড়তে থাকে শীতের দমক। কোলাহলমুখর দিনের শেষে এমন নীরবতা এক ধরনের ক্লান্তি এনে দেয় এদের মনে। সারাদিনের ভিড়ভাট্টা আর হিসেবনিকেশের পাহাড়ে যেসব মুখ আর যে ঘরের কথা প্রায় মনে করবার ফুসরত মেলে না, এখন সেই ঘরে ফেরবার টান প্রবল হয়। 

গোছগাছ শেষে মাছ ঘরের মালিক আর কর্মচারীরা ঘরে ফেরেন। খানিকটা বিশ্রাম, রাতে হয়তো মাছের মাথা দিয়ে মুগডাল, পরিবারের সাথে নানা গল্পগাছা। পরদিন ভোর না হতেই আবার সেই মাছের সেট, ঘর, কেনাবেচা, দরদাম আর সেই চিরচেনা মেছোগন্ধ...


  • ছবি: অনুস্কা ব্যানার্জী/টিবিএস 

Related Topics

টপ নিউজ

মাছ / মাছের বাজার / মাছের আড়ত / মাছ ব্যবসা / সাতক্ষীরা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন
  • ২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি
  • উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ
  • ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত
  • ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের
  • আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

Related News

  • রপ্তানি অনুমতিপত্র জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় মাছ রপ্তানি বন্ধ
  • ৫ মে বাজারে আসবে সাতক্ষীরার আম
  • চট্টগ্রামে ফিশিং ভ্যাসেলের জালে ধরা ১৫২ কেজির ভোল পোয়া, ১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি
  • সাগর থেকে ২২ জেলেসহ চার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
  • সাতক্ষীরা: হঠাৎ তলিয়ে গেল বাঁধের দেড়শ ফুট, প্লাবনে মলিন ১০ গ্রামের ঈদ-আনন্দ

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন

2
আন্তর্জাতিক

২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি

3
বাংলাদেশ

উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ

4
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত

5
আন্তর্জাতিক

ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের

6
আন্তর্জাতিক

আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab