Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
August 01, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, AUGUST 01, 2025
পঙ্গু হাসপাতাল: যেখানে সংসার, চিকিৎসা মিলেমিশে একাকার

ফিচার

সালেহ শফিক
02 April, 2023, 12:15 pm
Last modified: 02 April, 2023, 12:15 pm

Related News

  • চিকিৎসা শেষে বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আজ বাড়ি ফিরছে মাইলস্টোন স্কুলের ২ শিক্ষার্থী
  • বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে ভারত
  • ‘বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও দিয়েছি, উত্তরার দুর্ঘটনায়ও পাশে আছি’: রক্ত দিতে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী
  • পাইলট বিমানটি ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর
  • তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সায়মার সন্ধানে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছে স্বজনরা

পঙ্গু হাসপাতাল: যেখানে সংসার, চিকিৎসা মিলেমিশে একাকার

ওয়ার্ডের শেষ মাথায় মেঝেতে পাটি বিছিয়ে দুজন বসে ছিলেন। একজন নারী, একজন পুরুষ। তারা মাতা ও পিতা। দুজনের মুখেই গভীর বেদনার ছাপ। জানতে চাইলাম, আপনাদের রোগী কোথায়? পিতা ইশারা করে বেডের ওপরে দেখালেন। একটা ২২-২৩ বছর বয়সী ছেলে ঘুমাচ্ছে। ডান হাত কাটা পড়েছে। বাবা চাঁদপুরে এক অটোমেটিক ব্রিক ফিল্ডে কাজ করেন। সেখানে বেড়াতে গিয়েছিল ছেলেটি আর অসাবধানতাবশত ছেলেটির হাত সেখানকার ব্লেডেই কাটা পড়ে। পিতা নিজেকে কোনোভাবেই প্রবোধ দিতে পারছেন না।
সালেহ শফিক
02 April, 2023, 12:15 pm
Last modified: 02 April, 2023, 12:15 pm
ছবি: রাজীব ধর

কাঁচামালের বেপারি আওয়াল মিয়া কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার লোক। চাষির কাছ থেকে শাক-সবজি কিনে আড়তদারের কাছে বিক্রি করেন তিনি। যেদিন দুর্ঘটনা ঘটে সেদিন সন্ধ্যার পর একটি ব্রিজের ওপর মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে দিনের হিসাব মিলাচ্ছিলেন। পিছন থেকে একটা টমটম এসে ধাক্কা দিলে তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের হাড্ডি তিন টুকরো হয়ে যায়।

আওয়াল মিয়ার বয়স ৩২। তিন ছেলে তার। সবচেয়ে ছোটটির বয়স ৩ বছর। জানুয়ারির ২ তারিখে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে দেখি আওয়াল মিয়া বেডের ওপরে শুয়ে আছেন, আর ছেলেটি নিচে একটা চাটাইয়ের ওপর ঘুমাচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটার পরদিনই তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক ও পুনর্বাসন হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করানো হয়। তারপর তিন মাস ছিলেন টানা। তখন ডাক্তাররা পা কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে আওয়ালের পরিবারের কেউ রাজি হয়নি বলে কিছুটা ভালো বোধ করার পর তিনি হাসপাতাল ছেড়েছিলেন।

পনেরো-বিশ দিন ভালোই ছিলেন, তবে মাসখানেক না যেতেই পায়ে অসহ্য ব্যথা শুরু হয়, আওয়াল আবার শয্যা নেন। একপর্যায়ে টিকতে না পেরে আবার হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। ডাক্তার এখন অপেক্ষা করছেন কবে অপারেশন করার উপযোগী হন তিনি। পায়ে একটা চিনচিনে ব্যথা প্রায় সারাক্ষণই হয়। পা দেখতেও হয়ে গেছে বিসদৃশ, মাঝখানটা চিকন আর দুইধার ফুলে ঢোল। একটা চিকন দড়ি পায়ের বুড়ো আঙুলের সঙ্গে বেঁধে হাতের কাছে রেখেছেন। যখন ব্যথা তীব্র হয় তখন দড়ি ধরে টেনে পা উঁচু করেন বা ডানে-বাঁয়ে হেলান। তাতে ব্যথা কিছুটা উপশম হয়।

আওয়াল মিয়ার পাঁচজনের পরিবারের চারজনই মাসের পর মাস ধরে হাসপাতালে। এ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বলছিলেন, 'এখানে উঠতে-বসতে টাকা লাগে। যেমন ব্যান্ডেজ খোলাতে-লাগাতে ২০০ টাকা, ট্রলি দিয়ে ওঠা-নামা করাতেও ২০০ টাকা। অথচ এই টাকা লাগার কথা নয়, কারণ সরকারি হাসপাতাল। সরকার তো আয়া, বয় সবাইকেই বেতন দেয়, তারপরও টাকা ছাড়া এখানে কেউ নড়ে না। ট্রলি রাখার জায়গায় গিয়ে দেখেন সেটা তালা মারা। এই তালা টাকা না দিয়ে খোলাতে পারবেন না।'

আওয়াল মিয়া সংসারে একাই রোজগেরে। আরো দুই ভাই আছে তার, একজন বাড়ি বাড়ি সিলিন্ডার সাপ্লাই দেওয়ার কাজ করেন, অন্য ভাই দিনমজুর। বাবা-মা আছেন। তারাও পৃথকান্ন। বাবা রাস্তায় হেঁটে হেঁটে চানাচুর বিক্রি করেন। তাহলে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা জোগাড় করলেন কীভাবে—জানতে চাইলে আওয়াল মিয়া বললেন, 'মোটর সাইকেল বিক্রি করে দিয়েছি। ঘরের টুকিটাকি আরো অনেক কিছুই বিক্রি করেছি। এখানে যে খাবার দেয় তাতে একজনের হয়, আর বাকি সবার খাবার হোটেল থেকে আনতে হয়। দিনে ওষুধও লাগে আড়াই-তিনশ টাকার। হাসপাতাল থেকে কেবল নাপা-জাতীয় ওষুধ সরবরাহ করে। বাকি সব ওষুধই কিনে আনা লাগে।'

আওয়াল মিয়া লেখাপড়া কিছুই করেননি। কথা বলছিলেন কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায়। কবে অপারেশন হবে, আর হলেও ফল কী হবে, জানেন না। বড় ঝামেলা এখন পেট চালানো। মেজো ছেলেটাকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে এসেছেন। 

তাহলে কী হবে সামনে? জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেন না আওয়াল মিয়া। গোলগাল মায়াবী মুখ। চোখটা পানিতে ভিজে যায়। বলেন, 'আল্লাহ ছাড়া এখন আর কোনো আশা-ভরসা নাই।'

দোকান বন্ধ করে বাড়ির পথ ধরেছিলেন

মধুবন শীল খুব কাতর হয়ে পড়েছেন। বাড়ি তার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া। গ্রামের ছোট বাজারটিতে তার একটি সেলুন আছে। ঘটনার দিন রাত ৮টা হবে, দোকান বন্ধ করে মাত্রই বাড়ির পথ ধরবেন বলে পা বাড়িয়েছেন, অমনি পেছন থেকে একটি মোটর সাইকেল এসে তার গায়ের ওপর পড়ে। হাত ও পা দুটিই ভেঙে যায়। তাকে তাড়াতাড়ি টাঙ্গাইল সদরের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্লাস্টার করা হয়ে গেলে পরে রওনা করিয়ে দেওয়া হয় পঙ্গু হাসপাতালের উদ্দেশে। রাত আড়াইটা নাগাদ তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে পৌঁছায়।

ছবি: রাজীব ধর

জরুরি বিভাগে মধুবনকে সকাল আটটা পর্যন্ত রাখা হয়। শেষে ধরাধরি করে সিটের বন্দোবস্ত পাওয়া যায়। তাতে 'এক্সট্রা' দুই হাজার টাকা খরচ করতে হয়। মধুবনের সঙ্গে এসেছেন তাঁর ছেলে ও মেয়ে, স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ের জেঠি। সবাই-ই সিটের পাশে রাখা নিচের চাটাইয়ে গাদাগাদি করে অবস্থান করেন। সমস্যা হয়েছে ছেলেমেয়েদের মা ও জেঠির। তারা হোটেলের কোনো খাবারই মুখে তুলতে পারছেন না। সবকিছুই তাদের কাছে বিস্বাদ ও নোংরা লাগছে। 

মধুবনের ছেলে ও মেয়ে দুজনের বয়স কাছাকাছি। ডিগ্রি ফার্স্ট ইয়ার এবং সেকেন্ড ইয়ারে পড়েন তারা। 'রাত পার করেন কীভাবে?' জানতে চাইলে মেয়ে বললেন, 'আমরা সবাই পালা করে জাগি। দুইজন সন্ধ্যারাতে ঘুমাই তো অন্য দুজন গভীর রাতে ঘুমাই। বাবা এক কাতে বেশিক্ষণ থাকতে পারছেন না, আর তিনি ভয় পাচ্ছেন খুব। সুস্থ একজন মানুষ, হঠাৎ এত বড় বিপদের মধ্যে পড়েছেন, মেনে নিতে পারছেন না কিছুতেই। আরও ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে, জীবনে আর কখনো ভালো হবেন না।'

মধুবনের পরিবার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে এসেছে। পুরো সংসার এখন হাসপাতালে। এ পর্যন্ত তাদের ১ লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। তাদের কোনো জমানো টাকা ছিল না। সব টাকাই ধার করতে হয়েছে। আরো কতটা করতে হয় সেটাও এখনই বলা যাচ্ছে নাা।

হাড় ভাঙায় সময় লাগে

হাড় ভাঙার চিকিৎসা বেশ দীর্ঘ। হাড়ের কন্টিনিউটিতে যখন ছেদ পড়ে তখনই তাকে হাড় ভাঙা বলে। মানুষের শরীরে হাড় এমন জিনিস যার আলাদা যত্ন-আত্তি লাগে না তাই এর মর্মও বোঝা হয় না সহসা। তবে ভাঙলে বা চিড় ধরলে রক্ষে পেতে সময় লাগে অনেক। হাড়ের একদম বাইরে থাকে একটি পর্দা, তারপর থাকে কর্টিকাল বোন যার ভিতর থাকে মজ্জা। হাড় 

পুরোপুরি ভাঙলে ডাক্তাররা বলেন কমপ্লিট ফ্র্যাকচার আর ইনকমপ্লিট ফ্র্যাকচারে একটা দিক ভাঙে আরেকটা দিক ঠিক থাকে। তারপর আছে ক্লোজড ফ্র্যাকচার। এতে বাইরের ত্বক ঠিক থাকে কিন্তু ভিতরের হাড় ভেঙে যায়। ওপেন ফ্র্যাকচারও আছে। তাতে হাড় ত্বক ফুটো হয়ে বেড়িয়ে আসে। আর ডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচারে হাড়ের দুটো টুকরো ভেঙে আলাদা হয়ে যায় এবংং আনডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচার হলে হাড় নিজের জায়গাতে থেকেই ভাঙে।

হাড় ভাঙার প্রাথমিক চিকিৎসা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হাত বা পায়ের ক্ষেত্রে হাড় মোটামুটি সোজা করে কোনো শক্ত কাঠ, লাঠি বা কার্ডবোর্ডের সঙ্গে কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হয়, যেন জায়গাটা সোজা থাকে। অনেক ভাঙার পর হাত বা পা বেঁকে যায়, তাকে সোজা অবস্থায় আনাটাই প্রাথমিক চিকিৎসা। এভাবেই নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসকের কাছে। সোজা করতে গেলে ব্যথা লাগতে পারে বলেই বরফ দিয়ে তা কমিয়ে নিতে হয়। 

ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসা হলে প্রথমে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান বা বিশেষ ক্ষেত্রে এমআরআই করে জায়গাটা দেখে নেওয়া হয়। এরপরই চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেন কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন। ফ্র্যাকচার কিন্তু প্রাকৃতিকভাবেই নিরাময় হয়। বয়স অনুযায়ী সময় কম বেশি লাগতে পারে। এখানে চিকিৎসক মূলত দুটো আলাদা হয়ে যাওয়া হাড়ের টুকরোকে এক রেখায় নিয়ে আসেন। এজন্য প্লাস্টার, প্লেট বা রডের সাহায্য নিয়ে থাকেন। বাকি কাজটি নিজ থেকেই সম্পন্ন হয়। হাড় জোড়া লাগার পর ধীরে ধীরে থেরাপির মাধ্যমে নিকটবর্তী জয়েন্ট বা পেশিগুলোর কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা হয়। প্রক্রিয়াটি প্রাকৃতিক আর ধাপে ধাপে হয় বলে সময় লাগে বেশি। এ নিয়ে রোগী আর ডাক্তারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয় বিস্তর।

তবে পঙ্গু হাসপাতালে রোগীদের অভিযোগের বড় কারণ এখানে পদে পদে টাকা (অন্যায্য) দিতে হয় আর হাসপাতাল কর্মীরা রোগীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেন না। ঢাকার বাইরে থেকে যারা আসেন তারা হেনস্তার শিকার হন বেশি। টিকেট কোথা থেকে কাাটতে হয় তা জানতেও হয়রান হয়ে যেতে হয়। এক্সরে করাতে গেলেও দীর্ঘ সারি। ট্রলি বা স্ট্রেচার পেতে মাথা কুটতে হয়। সিট পেতে বাড়তি টাকা গুনতেই হয়। 

এ কথাগুলোই আধশোয়া হয়ে বকে যাচ্ছিলেন ওস্তাগার ময়জুদ্দিন। বয়স ষাটের ধারেকাছে হবে। চা খেতে গিয়েছিলেন দোকানে। হঠাৎ পিছলে পড়ে গিয়ে হাঁটুর বাটি ডিসপ্লেস হয়ে যায়। তারপর নরসিংদীর মনোহরদী থেকে আসেন পঙ্গু হাসপাতাল। স্ত্রী তার বছর কয় আগেই গত হয়েছেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, স্বামীর সঙ্গে ঢাকার মনিপুরিপাড়াতে থাকে। 

ময়জুদ্দিন বেশিরভাগ সময় একাই থাকেন হাসপাতালে আর বলতে থাকেন, 'সব টাকার খেলা। মানুষের অসুখ নিয়াও ব্যবসা। ওয়ার্ড বয় একজনকে দেখিয়ে বললেন, ওই যে ছেলেটাকে দেখছেন, দিনে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা আলগা কামাই করে। দুই বছরের কামাই দিয়াই বাড়ি তুলে ফেলবে। কিছু বলতে গেলে উল্টোপাল্টা কথা বলবে, ব্যান্ডেজ বদলে দেবে না। এখানে যত বয় আর আয়া কাজ করে সবারই একরকম মেজাজ। সবারই ইনকাম আছে।'

ছবি: রাজীব ধর

শিশুটি পার্কে গিয়েছিল

ছুটির দিন ছিল। সাড়ে তিন বছর বয়সী মাহিন বাবা-মায়ের সঙ্গে লেক পার্কে বেড়াতে গেছে। মাদারীপুরে তাদের বাড়ি। মাহিনের ভালো লাগছিল পার্ক বেড়াতে। কিন্তু বাবার ছিল ফেরার তাড়া। অবশেষে মায়ের সঙ্গে মাহিনকে রেখে ফিরে গিয়েছিলেন বাবা। স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন, বেশিক্ষণ আর থেকো না, সন্ধ্যা হয়ে আসছে। দশ মিনিটও যায়নি, মাহিনের মায়ের ফোন পেলেন। মা কাঁদছেন, কথা বলতে পারছেন না। বাবার উদ্বেগ বাড়ছিল। শেষে পাশের এক লোক ফোনে জানায়, দুই রডের ফাঁকে আটকে গিয়ে মাহিনের পা ভেঙে গেছে।

বাবা দৌড়ে পার্কে পৌঁছান। মাহিন ব্যথায় কাতরাচ্ছিল। সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাকে প্লাস্টার করানো হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে এই পঙ্গু হাসপাতালে। বাবা বলছিলেন, 'আমার ইলেকট্রিক জিনিসপত্রের দোকান আছে। ছেলে এই একটাই। পাঁচদিন হলো আমরা হাসপাতালে। ছোট ভাইকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছি। তিনটি খেলনা পুতুল কিনে দিয়েছি হাসপাতালে আসার পর। খেলনা নিয়েই মাহিন সময় কাটায়। পায়ের প্লাস্টার এতো ভারী যে নিজে নড়াতে পারে না। অথচ বাড়িতে সে সবসময় দৌড়াদৌড়ি করে কাটাত। 

'এইটুকু ছেলে, কষ্টের কথা ভালো করে বলতেও পারে না্। রাতে বেশি ঘুমায় না। আমি একটা সময় জাগি, ওর মা জেগে থাকে বেশিরভাগ সময়। এখানে দুই-তিন দিনে একবার গোসল করি। খাওয়া-দাওয়া হোটেলে করি। মাহিনের জন্য বার্গার, কেক কিনে আনি বাইরে থেকে। মাহিন মাঝেমধ্যেই খুব অস্থির হয়ে ওঠে। দাদা-দাদিকে দেখতে চায়। দৌড়াদৌড়ি করতে চায়। বাচ্চা মানুষ কতক্ষণ আটকায়া রাখা যায়?'

দুজন নিথর বসে ছিলেন

ওয়ার্ডের শেষ মাথায় মেঝেতে পাটি বিছিয়ে দুজন বসে ছিলেন। একজন নারী, একজন পুরুষ। তারা মাতা ও পিতা। তারা মধ্যবয়স পার করেছেন। দুজনের মুখেই গভীর বেদনার ছাপ, এমনটি আর দেখিনি এতক্ষণে। খুব আস্তে আস্তে তাদের কাছে গিয়ে বসি। জানতে চাইলাম, আপনাদের রোগী কোথায়?

পিতা ইশারা করে বেডের ওপরে দেখালেন। একটা ২২-২৩ বছর বয়সী ছেলে ঘুমাচ্ছে। ছেলেটার ডান হাত কাটা পড়েছে। ঘটনায় বাবা-মা দিশা হারিয়ে ফেলেছেন। ছেলেটা কলেজে পড়ে। বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচর। বাবা চাঁদপুরে এক অটোমেটিক ব্রিক ফিল্ডে কাজ করেন। সেখানে বেড়াতে গিয়েছিল ছেলেটি আর অসাবধানতাবশত ছেলেটির হাত সেখানকার ব্লেডেই কাটা পড়ে।

পিতা নিজেকে কোনোভাবেই প্রবোধ দিতে পারছেন না। মাতা ভেবে চলেছেন, এ ক্ষতির কি কোনো পূরণ হয়? তারা মুখে কিছুই তুলতে পারছেন না। কারোর সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলছেন না। সারাদিন চুপচাপ ছেলের বেডের ধারে বসে থাকছেন।

ফেরার সময় নোয়াখালীর আরেক বৃদ্ধকে দেখলাম নাতি কোলে নিয়ে বারান্দার রোদে এসে দাঁড়িয়েছে। জানতে চাইলাম, আপনাদের রোগী কে?

বৃদ্ধ বললেন, এই বাচ্চার বাবা, আমার ছেলে।

—কী হয়েছিল?

বৃদ্ধ: সুপারি গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিল। কোমর ভেঙে গেছে।

—ডাক্তার কী বলেছে?

বৃদ্ধ: দুর্ঘটনা ঘটেছে দুই বছর হতে চলল। অপারেশন হইছে, ভালো হয় নাই, ডাক্তার ছুটি দিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পর এমন ব্যথা উঠল যে আবার হাসপাতালে। মনে হয় পুরো ভালো হবে না কোনো দিন।

—ডাক্তার এই কথা বলেছেন?

বৃদ্ধ: ডাক্তারের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলা যায় না। তারা কথার উত্তর দেন না ভালোভাবে। আমরা যা পারি বুঝে নিই। শরীর আছে, অসুখ থাকবেই, কিন্তু এ নিয়েএতো কষ্ট সহ্য হয় না। মানুষের ব্যবহারেই কষ্ট পাই বেশি। জানি না ছেলেটার ভবিষ্যতে কী আছে, নাতিটার তো মোটে দেড় বছর বয়স। চিন্তায় মাথা টন টন করে।
 

Related Topics

টপ নিউজ

পঙ্গু হাসপাতাল / হাসপাতাল / চিকিৎসা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করল যুক্তরাষ্ট্র
  • জাতীয় সরকার নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য সত্য নয়; সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিল না: নাহিদ ইসলাম
  • ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলা: জামিন পেলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবী
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শেষ হচ্ছে আজ, শিগগিরই জানা যাবে শুল্কের হার 
  • ব্যাংক একীভূতকরণে সরকার বিনিয়োগ করে লাভসহ ফেরত পাবে: গভর্নর
  • ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম কেনার অভিযোগে ৬ ভারতীয় কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

Related News

  • চিকিৎসা শেষে বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আজ বাড়ি ফিরছে মাইলস্টোন স্কুলের ২ শিক্ষার্থী
  • বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে ভারত
  • ‘বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও দিয়েছি, উত্তরার দুর্ঘটনায়ও পাশে আছি’: রক্ত দিতে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী
  • পাইলট বিমানটি ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর
  • তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সায়মার সন্ধানে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছে স্বজনরা

Most Read

1
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করল যুক্তরাষ্ট্র

2
বাংলাদেশ

জাতীয় সরকার নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য সত্য নয়; সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিল না: নাহিদ ইসলাম

3
বাংলাদেশ

ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলা: জামিন পেলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবী

4
অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শেষ হচ্ছে আজ, শিগগিরই জানা যাবে শুল্কের হার 

5
অর্থনীতি

ব্যাংক একীভূতকরণে সরকার বিনিয়োগ করে লাভসহ ফেরত পাবে: গভর্নর

6
আন্তর্জাতিক

ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম কেনার অভিযোগে ৬ ভারতীয় কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net