‘বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও দিয়েছি, উত্তরার দুর্ঘটনায়ও পাশে আছি’: রক্ত দিতে আসা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে দুপুর ১২ টার দিকে দেখা যায় একদল তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে। কাছে গিয়েই কথা বলে জানতে পারি তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে এসেছেন উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দান করতে।
এর মধ্যে একজন চাঁদনী আক্তার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনার সময় আহতদের রক্ত দিয়েছি, এখনও প্রস্তুত আছি উত্তরায় আহত ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য রক্ত দিতে। গতকালের ঘটনাটি দেখার পরে আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি। আমাদের বাচ্চা নেই আমরা বুঝি একজন পিতা-মাতার সন্তানহারাটা কতটা কষ্টের।"
মেহরীন নামে একজন এসেছেন ঢাকার মগবাজার থেকে। তার রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ। তিনি টিবিএসকে বলেন, "আমাদের মানুষ যদি ঘৃনাও করে, আমাদের রক্তের সাথে তো কারও দূরত্ব নেই। যতো ব্যাগ রক্ত দরকার আমরা দিতে প্রস্তুত। এরপরেও আমাদের শিশুরা সুস্থ হোক।"

জোৎসনা নামে একজন বলেন, "আমরা বঙ্গবাজারের ঘটনায়ও রক্ত দিয়েছি আজকেও এসেছি। আমাদেরকে আপনারা ছোট বলে দেখবেন না। দেশের সকল সংকটে মানুষের পাশে থাকতে চাই। আমরা গতকাল থেকেই উদ্ধারকাজে ও আহতদের সহযোগিতার জন্য রয়েছি।"
সোনিয়া নামে একজন বলেন, "আমি ধলপুর থেকে এসেছি। আমরা আমাদের আহত ভাই বোনদের সুস্থ করতে যা করা লাগে করবো।"
এদিকে একদল যুবক রক্ত দানে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নাম, রক্তের গ্রুপ, ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে রাখছেন। তারা রক্তের তালিকা করে রাখছেন প্রয়োজন হলে ফোন দিবেন।
এবি নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের আতাউল ইসলাম সকালে সকল কাজ ফেলে এসেছেন কুমিল্লা থেকে। তিনি টিবিএসকে বলেন, "আমার দোকান আছে, সেটি বন্ধ করে কুমিল্লা থেকে ছুটে এসেছি। কারন এবি নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ অনেক রেয়ার। তাই এই পরিস্থিতিতে যদি কারও এই গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হয় তাই ছুটে চলে আসছি। মানুষ মানুষেরই জন্য, তাই আমার রক্তে যদি একটা প্রাণ বাঁচে এর চেয়ে বড় স্বার্থকতা নেই।"
রক্তদাতাদের তালিকা সংগ্রহ করা শাহিনুর রহমান টিবিএসকে বলেন, "আমরা প্রায় ১৫০ জনের মতো নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের মানুষের তালিকা করতে পেরেছি। যেহেতু নেগেটিভ রক্ত রেয়ার তাই এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এছাড়া পজেটিভ ব্লাড গ্রুপের ৩০০ জনের তালিকা করেছি।"