Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
July 27, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JULY 27, 2025
মৎস্যশিকারিদের গাথা

ফিচার

ইনাম আহমেদ
11 March, 2023, 10:50 pm
Last modified: 11 March, 2023, 10:50 pm

Related News

  • উলন দাস পাড়া: ঢাকার শেষ আদি জেলেপল্লী? 
  • ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাচ্ছেন জেলেরা
  • সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, দুর্ভোগে বনজীবীরা
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • চট্টগ্রামে প্লাস্টিক বর্জ্যের ৭৩ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে: কর্মশালায় বক্তারা 

মৎস্যশিকারিদের গাথা

বর্ষাকালটা সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য বড় বৈরী সময়। সাগর এ সময় প্রায় প্রতিদিনই উত্তাল থাকে। এই ট্রলারগুলো অন্তত ১৫ দিনের জন্য সমুদ্রে যায়। আর সমুদ্র নিয়মিত উত্তাল থাকার কারণে জেলেদের বড় ক্ষতি হয়।
ইনাম আহমেদ
11 March, 2023, 10:50 pm
Last modified: 11 March, 2023, 10:50 pm
ছবি: ইনাম আহমেদ

ধীরে ধীরে মৎস্য বন্দরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ১০০ ফুটি কাঠের মাছ ধরার ট্রলারটা। মৃদু আওয়াজে গর্জাচ্ছে ট্রলারের আট-সিলিন্ডারের শক্তিশালী হিনো ইঞ্জিন। ইঞ্জিনের আওয়াজ বদলে গেল, আরও ধীরে চলতে লাগল ট্রলার। নিচু, কর্কশ ডিগ-ডিগ-ডিগ আওয়াজটা প্রতিধ্বনি তুলছে খালের দুপাশের কেওড়া গাছের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে। বন্দরের আলোতে চকচক করছে ট্রলারের স্টেইনলেস ইস্পাতের গলুই। মাস্তুলের মাথায় লাগানো লাল আলোটাকে দেখাচ্ছে ড্রাগনের চোখের মতো।

আমি ভাবছিলাম এই কাঠের ট্রলারগুলোর গলুই এত নাকভাসানো কেন। কোনো ট্রলারের গলুই তো ১০ ফুট পর্যন্ত উঁচু—এই যেমন আমাদের দিকে যে ট্রলারটা আসছে, সেটা। আমার ধারণা ছিল, অকারণেই শুধু দেখনদারির উদ্দেশ্যে গলুইগুলো এভাবে বানানো হয়েছে, যাতে নৌকাগুলোকে সুন্দর ও মনোহর দেখায়।

তবে এক জেলেকে জিজ্ঞেস করার পর আমার ধারণা বদলে গেল। কাব্যিক ভাষায় নৌকার গলুই উঁচু করে বানানোর মূল উদ্দেশ্য জানালেন তিনি।

'শান্ত আবহাওয়া, ঝোড়ো বাতাস—সব পরিস্থিতিতেই আমরা বছরভর সমুদ্রে যাই,' বলেন তিনি। 'আমরা আমাদের ট্রলার দিয়ে ওর বুক ফালা ফালা করে দিই বলে সমুদ্র মাঝে মাঝে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। সমুদ্র তখন তার সমস্ত রাগ ও ক্ষোভ নিয়ে বাতাস আর ঢেউ দিয়ে আমাদেরকে মারে। কিছু ঢেউ ২০ ফুট উঁচু হয়। তখন ট্রলারের এই উঁচু গলুই-ই আমাদের বাঁচায়। আঘাত থেকে বাঁচতে আমাদেরকে সোজা ঢেউয়ের মধ্যে ঢুকে পড়তে হয়। ঢেউ আমাদের ওপর আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই উঁচু গলুইয়ে আঘাত করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তা না হলে আমরা সরাসরি ঢেউয়ের ধাক্কা খেয়ে ডুবে যেতাম।'

সমুদ্রে ধরা ঝুড়িভর্তি মাছ। ছবি: ইনাম আহমেদ

সমুদ্রের দিকে চোখ ফেরালাম আমি। এই মুহূর্তে কালো, শান্ত দেখাচ্ছে ওই বিশাল জলরাশিকে। ঠিক কাকের চোখের মতো। আমার পোষা কাক বয়নার্ডের কথা মনে পড়ে গেল। বয়নার্ড ওর শান্ত চোখ মেলে আমার দিকে চেয়ে থাকে, যোগাযোগ করার চেষ্টা করে।

কিন্তু বিকেলে সাগর এত শান্ত ছিল না। আমরা একটা বাঁক পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে বাতাস ওঠে। তাতে উত্তাল হয়ে ওঠে শান্ত সমুদ্র। আমি নিশ্চিত, এই বন্দরের কোনো জেলে সমুদ্রের এরকম পরিবর্তনের দিকে ফিরেও তাকাবে না। কিন্তু আমদের কাঠের কেবিনওয়ালা ট্রলার-থেকে-টুরিস্ট-বোট বনে যাওয়া নৌকাটার জন্য এই ঢেউগুলো বেশ মারাত্মক হয়ে উঠেছিল। প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পেতে রাখা হয়েছে অবৈধ মাছ ধরার জাল। এসব জালের কারণে আমাদের ট্রলার তীরে ভিড়তে পারছিল না। তাছাড়া নৌকাটা প্রচণ্ড দুলছিল অনিয়ন্ত্রিতভাবে। তাই আমরা ভেবেছিলাম নৌকাটা বোধহয় ডুবেই যাবে।

অশান্ত সমুদ্রে ঢেউ কেটেই জাহাজকে এগোতে হয়। ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে হয় জাহাজের বো দিয়ে। ধাক্কা খেয়ে মনে হতে পারে জাহাজ ডুবে যাচ্ছে, কিন্তু পরক্ষণেই ফের ভেসে ওঠে। যদি কোনোক্রমে জাহাজ একদিকে ঘুরে যায় এবং পোর্ট বা স্টারবোর্ডে ঢেউয়ের ধাক্কা লাগে, তাহলে জাহাজটির ডুবে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

এখন আমাদের নৌকাও সরাসরি ঢেউ কেটে এগোচ্ছিল, কিন্তু আমাদেরও ইউ-টার্ন নিতে হলো। নৌকার পাশে এসে ঢেউ ধাক্কা মারতে পারে, সেজন্য এই কাজটা ভীষণ কঠিন। তাই দুটি ঢেউয়ের মধ্যে চট করে অতি সূক্ষ্ম কৌশলে নৌকা ঘোরাতে হলো।

শেষপর্যন্ত জালের গোলকধাঁধায় একটুখানি খোলা জায়গা পাওয়া গেল। চট করে দুপাশে জাল দিয়ে তৈরি এই খালে ঢুকে পড়লাম। এবং সঙ্গে সঙ্গে জাদুর মতো অদৃশ্য হয়ে গেল সমস্ত ঢেউ।

কিন্তু এখন আগুয়ান অন্ধকার ট্রলারটা দেখার পর বুঝলাম, এই জেলেদের জন্য কোনো জাদুকরি সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। নিজস্ব দক্ষতা, তাদের মাছ ধরার বাহনের দৃঢ়তা এবং সমুদ্রের দয়ায় প্রতিটা দিন বেঁচে থাকেন তারা।

বর্ষাকালটা সমুদ্রগামীদের জন্য বড় বৈরী সময়। সাগর এ সময় প্রায় প্রতিদিনই উত্তাল থাকে। এই ট্রলারগুলো অন্তত ১৫ দিনের জন্য সমুদ্রে যায়। আর সমুদ্র নিয়মিত উত্তাল থাকার কারণে জেলেদের বড় ক্ষতি হয়।

একটি খালে ঢুকে পড়ল নৌকা। ছবি: ইনাম আহমেদ

একজন জেলে বললেন, 'প্রায়ই আমাদের দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হয়। খালি পেট গুড়গুড় করে। তবু আমাদের কাজ করতে হয়।'

এবং সমুদ্রে জীবন বড় কঠোর। কাজে এক মুহূর্তের জন্যও ঢিল দেওয়ার সুযোগ নেই কারও। অলস বসে থাকার অর্থ হতে পারে মৃত্যু, খালি জাল অথবা ভালো মাছ না পাওয়া।

আরেক জেলে বর্ষার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বললেন, 'দুই দিন উপোস থাকার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবার কিছু খাব। প্লেট নিয়ে যখন এক লোকমা ভাত মুখে দেব, সেই মুহূর্তে নৌকা ভয়ানকভাবে দুলে উঠল। ভাতের প্লেট আমার হাত থেকে ছুটে উড়ে চলে গেল নৌকার অপর প্রান্তে।'

বিশাল ট্রলারটি এখন আরও কয়েকশো ট্রলারের ভেতর দিয়ে জায়গা করে নিয়ে এঁকেবেঁকে বন্দরের দিকে এগোচ্ছে। উৎসুক লোকজনের ভিড় জমে গেছে জেটিতে। নৌকার শরীর জেটির সংস্পর্শে আসতেই মৃদু শব্দ হলো একটা। ইঞ্জিন কয়েক সেকেন্ডের জন্য সচল হয়ে ফের চুপ হয়ে গেল।

শ্রমিকরা লাফিয়ে ট্রলারে উঠে পড়লেন। শুরু হলো নতুন কর্মযজ্ঞ। ট্রলারের খোলে বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল মাছগুলো। সেই খোল খোলা হলো। খোলের ভেতর অদৃশ্য হয়ে গেলেন কয়েকজন শ্রমিক। রিগ এনে স্থাপন করা হলো খোলা খোলের ওপর। জেলেরা লাল উইঞ্চ ঘুরিয়ে লাইন নিচে নামাতে লাগলেন। খানিক বাদে ঝুড়িভর্তি হয়ে উঠে আসতে শুরু করল টুনা, ম্যাকেরেলসহ নানা জাতের মাছ। জেটি থেকে বের করে আনা হলো মাছের ঝুড়িগুলো।

এবার দর্শকদের আগ্রহ মরে গেল। তারা এখন আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারের জন্য অপেক্ষা করছে—ওই ট্রলারটি আগেরদিন জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। পাথরঘাটার দিকে যখন এগোচ্ছি, তখন একজন জেলের কাছ থেকে ফোন পেলাম। তিনি জানালেন, একটি মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় নয়জন জেলে নিখোঁজ। বাকিরা গুরুতর আহত হয়েছেন।

সুন্দরবন অঞ্চলে একসময় জলদস্যুর ব্যাপক উপদ্রব ছিল। প্রতিটি ট্রলারকে নিরাপদে চলাচল করার জন্য জলদস্যুদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো। যারা চাঁদা দিতে রাজি হতেন না, তারা সঙ্গে সঙ্গেই বা কদিন পর জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হতেন।

জেটিতে অপেক্ষারত ওই জেলে আমাকে জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা শোনালেন।

তিনি বলেন, 'সারাদিনের খাটাখাটনির পর আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। সারাদিনে এত পরিশ্রম করেছি যে আমাদের অনেকেই রাতে খাইওনি, সটান ঘুমিয়ে পড়ি।' 

ট্রলার জেটিতে ভিড়তেই শুরু হলো নতুন কর্মযজ্ঞ। ছবি: ইনাম আহমেদ

রাতের বেলায় জলদস্যুরা হামলা করলে সতর্ক করার জন্য সব ট্রলারে ওয়াচম্যান রাখা হয়। কিন্তু সেসিন এই ওয়াচম্যানরাও ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।

হঠাৎ কোনোকিছুর ধাক্কা লেগে পুরো নৌকা ভীষণভাবে কেঁপে ওঠায় সব ক্রু জেগে ওঠে। কাঁপুনির কারণ বুঝে ওঠার আগেই তারা দেখলেন একদল জলদস্যু উঠে পড়েছে নৌকার সামনের অংশে।

জলদস্যুদের কয়েকজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তবে বেশিরভাগের কাছেই ছিল ধারালো ছুরি আর মোটা লাঠি।

 ওই জেলে বলেন, 'কোনো কথা না বলে ওরা আমাদের পেটাতে শুরু করে। আমাদের কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। অন্যদের নির্মমভাবে লাঠিপেটা করা হয়। এত জোরে মারা হয় যে আমাদের অনেকের হাড় ভেঙে যায়। আমাদের এখন করুণা চেয়ে কান্নাকাটি করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।'

টানা দশ মিনিট মারধর চলে। জলদস্যুরা লুটপাট চালায়। ১১ দিন সাগরে থাকার পর আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে তীরে ফেরার কথা ছিল ট্রলারটি। এগারো দিনে তারা যত মাছ ধরেছিলেন, সব চলে যায় জলদস্যুদের দখলে। 

ওই দিনই আগেরবার আমরা ফের সমুদ্র পাড়ি দেওয়া এড়াতে শর্টকাট পথ ধরি। সমুদ্র তখনও অশান্ত ছিল, তাই আমরা আরেকটা গোলমেলে যাত্রা চাইনি। নৌকার মাঝি সুন্দরবনের বুক চিরে বয়ে চলা অসংখ্য খালের একটিতে ঢুকে পড়েন।

দুপাশে গাছের ডালপালা ছাতার মতো ছায়া বিলাচ্ছে খালের ওপর। পাতার ছায়ায় সেই খাল ধরে ধীর গতিতে এগিয়ে চলল আমাদের নৌকা। খালের তীরের গ্রামগুলোর মানুষের কর্মব্যস্ততা আমরা আগ্রহভরে দেখি। দুপুর গড়িয়ে গেছে। গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা টিনশেড ঘরগুলো দেখে মনে হচ্ছিল পরিত্যক্ত যেন, মানুষজন থাকার চিহ্ন নেই। কর্দমাক্ত খালপাড়ে পোষা হাঁসের ঝাঁক দেখার পরই কেবল গেল গ্রামগুলোতে মানুষের বাস আছে। 

শিপইয়ার্ড পেরোলাম আমরা। ওখানে ট্রলারগুলোকে পানি থেকে তুলে মেরামত করা হচ্ছে। পেছন থেকে ট্রলারগুলোকে দেখাচ্ছিল গ্যালিয়নের মতো। এসব গ্যালিয়ন নিয়ে ইউরোপীয়রা ১৬ শতকে ধনসম্পদের সন্ধানে বিশ্বভ্রমণে বের হতো। আমাদের জেলেরা এখন এ ধরনের জলযান নিয়ে সম্পদের সন্ধানে সমুদ্রে ঢুঁড়ে বেড়াচ্ছেন। 

সমুদ্রে ভাটার টান চলছিল, খালের পানি প্রায় শুকিয়ে এসেছে। পরের ছয় ঘণ্টার জন্য আটকে গেল আমাদের নৌকা। তাই কেওড়া আর ছইলা গাছের সবুজ ছাউনির তলায় বই পড়া আর জোয়ার আসার অপেক্ষায় ঘুমানো ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার ছিল না।

রেস্টুরেন্টের সবাই-ই পোড় খাওয়া জেলে। ছবি: ইনাম আহমেদ

সন্ধ্যা নামতেই একটা নিশাচর পাখি ডাকতে শুরু করল। নির্জন খালে রাতজাগা পাখিটার চড়া পর্দার চুক-চুক ডাকটা কেমন অবাস্তব শোনাচ্ছিল। গ্রামের ঘরগুলোতে একে একে আলো জ্বলে উঠছে। বাচ্চারা জোরে জোরে বই পড়ছে। কিন্তু আমাদের নৌকার পাশের টিনশেডের বাড়িটি নীরব, আঁধারে ডুবে আছে। এই বাড়িটা আসলেই পরিত্যক্ত। অন্ধকারে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা ছড়িয়ে দিয়েছে বাড়িটা।

আগেরদিন সন্ধ্যায় আমরা সমুদ্রের ধারে পদ্মা স্লুইস গেটে ছিলাম (এই অদ্ভুত নামটির আগামাথা আমি খুঁজে পাইনি)। এই গ্রামটা জেলেদের। এখান থেকে মাছ ধরার ট্রলার ছাড়ে। শতাধিক ছোট ও মাঝারি ট্রলার রাত কাটানোর জন্য একটা ছোট খাঁড়িতে ভিড় জমায়। প্রত্যেক নৌকায় এলইডি বাতি জ্বলছে। আকাশের পটভূমিতে নৌকাগুলো আকর্ষণীয় অবয়ব তৈরি করেছে। খালের পাড় দিয়ে চলে গেছে একটা ইটের রাস্তা। ৪০০ মিটারের মতো এগিয়ে চরভূমির বিশালতায় মিলিয়ে গেছে রাস্তাটা। অন্ধকারে কেবল নারকেল গাছে ঘেরা ছোট ছোট কুঁড়েঘরগুলোই দেখা যায়।

ইটের রাস্তার দুপাশে সার সার ছোট ছোট দোকান। দোকানগুলোতে রাবারের স্যান্ডেল থেকে শুরু করে রঙিন পোশাক, ডালপুরি পর্যন্ত সব ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি হয়। তবে বেশিরভাগ দোকান মাছধরা ট্রলারের জন্য মাছ ধরার সরঞ্জাম এবং ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ বিক্রি করে।

পুরো জায়গাটিতে জেলে নগরের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সুস্পষ্ট। 

সাগরফেরত জেলেরা তাদের বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট ও পোশাক কিনছিলেন। যে জেলেরা পরেরদিন সকালে সমুদ্রে পাড়ি জমাবেন, তারা শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করছেন। কেউ কেউ তাদের ক্ষতিগ্রস্ত প্রপেলার মেরামত করছেন কিংবা লুব তেল কিনছেন।

আমি একটা রেস্টুরেন্টে পা রাখলাম। মনে হচ্ছিল, আমাকে যেন 'দ্য পারফেক্ট স্টর্ম' সিনেমার দৃশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্টের ভেতরে সিনেমার চরিত্রগুলোর মধ্যে জর্জ ক্লুনি আর তার বন্ধুরা ছিল। ছিল না শুধু বিয়ারের ডিসপেনসার আর ড্যান্স ফ্লোর।

রেস্তুরটুরেন্টের দেয়াল গাঢ় বাদামি নকশায় প্রিন্ট করা ফ্লুরোসেন্ট সবুজ কাপড়ে মোড়ানো। ভেতরে সবাই লবণ-পানিতে পোড় খাওয়া কঠিন ধাতের জেলে। কেউ কেউ চায়ে চুমুক দিচ্ছেন, হয়তো পরদিন সকালে অকূল দরিয়ায় পাড়ি জমানোর আগে শেষবারের মতো চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নিচ্ছেন তারা।

এক কোণে একটা টেবিল ঘিরে বসে আছেন একদল জেলে। নিজেদের মোবাইলের ওপরে উপুড় হয়ে লুডু খেলছেন তারা।

চারপাশের কথোপকথনের বেশিরভাগই সাগর আর ভালো মাছ ধরার সম্ভাবনা নিয়ে।

একজন লোক বলছেন, 'অবৈধ ঘের জালের কারণে আমাদের মাছ ধরা মার খাচ্ছে।' আগেরদিন আমরা সমুদ্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যেসব অবৈধ জাল পাতা থাকতে দেখেছিলাম, সেগুলোর কথাই বলছিলেন তিনি। এসব ঘের জালে আটকে সব ধরনের মাছের পোনা মারা হয়।

'এটা তো দিনের আলোর মতো বেআইনি। আপনারা দেখেছেন। কর্তৃপক্ষও দেখেছে। তবু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঘুষ দিয়ে চলছে সব। কিন্তু এই অবৈধ জালগুলো সাগরে মাছ কমিয়ে দিচ্ছে।'

রাত বাড়তে থাকলে তারা একে একে বাড়ির পথ ধরেন।

এরা এক অদ্ভুত সাহসী পুরুষের জাত। আমাদেরকে প্রোটিন জোগানোর জন্য তারা জীবন হাতে নিয়ে, পরিবারকে একা ফেলে বিপদসংকুল সমুদ্রে পাড়ি জমান। তাদের আপসহীন জীবন আমাদের খাবার টেবিলের প্রাচুর্য বাড়ায়। তবু আমরা তাদের জীবন আরেকটু সহজ করতে তেমন একটা সাহায্য করি না।

Related Topics

টপ নিউজ

সমুদ্রগামী জেলে / জেলে / মৎস্যজীবী / মাছ ধরা / মাছ ধরার ট্রলার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের দুর্ঘটনা‍য় ইউএস-বাংলাকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ, আদৌ রায় হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয় এয়ারলাইনস
  • ব্যাংক খাতের ৮০% অর্থ নিয়ে গেছে, আইএমএফ বলেছে পুনর্গঠনে ৩৫ বিলিয়ন ডলার লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা
  • 'মাকে খুঁজে লাভ নেই, আমি তাকে জ্বলতে দেখেছি': দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া জাইরার হৃদয়বিদারক বর্ণনা
  • যুগের পর যুগ পেরিয়ে ঢাকার যে ৫ পুরোনো খাবার হোটেল এখনও জনপ্রিয়!
  • হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ড্রোন দিয়ে ছাড়া হচ্ছে হাজার হাজার মশা, কিন্তু কেন?
  • জালিয়াতির মামলায় দীর্ঘসূত্রতা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ স্থগিতের চিন্তা জাপানি প্রতিষ্ঠানের

Related News

  • উলন দাস পাড়া: ঢাকার শেষ আদি জেলেপল্লী? 
  • ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাচ্ছেন জেলেরা
  • সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, দুর্ভোগে বনজীবীরা
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • চট্টগ্রামে প্লাস্টিক বর্জ্যের ৭৩ শতাংশ রিসাইক্লিং হচ্ছে: কর্মশালায় বক্তারা 

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের দুর্ঘটনা‍য় ইউএস-বাংলাকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ, আদৌ রায় হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয় এয়ারলাইনস

2
অর্থনীতি

ব্যাংক খাতের ৮০% অর্থ নিয়ে গেছে, আইএমএফ বলেছে পুনর্গঠনে ৩৫ বিলিয়ন ডলার লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা

3
বাংলাদেশ

'মাকে খুঁজে লাভ নেই, আমি তাকে জ্বলতে দেখেছি': দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া জাইরার হৃদয়বিদারক বর্ণনা

4
ফিচার

যুগের পর যুগ পেরিয়ে ঢাকার যে ৫ পুরোনো খাবার হোটেল এখনও জনপ্রিয়!

5
আন্তর্জাতিক

হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ড্রোন দিয়ে ছাড়া হচ্ছে হাজার হাজার মশা, কিন্তু কেন?

6
অর্থনীতি

জালিয়াতির মামলায় দীর্ঘসূত্রতা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ স্থগিতের চিন্তা জাপানি প্রতিষ্ঠানের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net