Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
June 23, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, JUNE 23, 2025
ভারতীয় রাজাদের যুদ্ধ-বিবাদকে পুঁজি করে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েন যে তরুণ আমেরিকান 

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
31 August, 2022, 07:35 pm
Last modified: 31 August, 2022, 07:41 pm

Related News

  • মোগল ঐতিহ্যে ঈদ উদযাপনের অপেক্ষায় ঢাকা
  • ভারতবর্ষের পায়জামা যেভাবে পশ্চিমা পায়জামা হয়ে উঠল
  • কলম্বিয়া, বিশ্বের বৃহত্তম ভাড়াটে সৈন্য রপ্তানিকারক: 'আমরা ফুটবল খেলোয়াড়ের মতো, কাজ দেখে নেয়’
  • মোটা অঙ্কের বেতন ও পাসপোর্টের আশায় রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছে কিউবানরা
  • গুলবদন বেগম: দুঃসাহসী মোগল রাজকন্যার মহাকাব্যিক সমুদ্রযাত্রা

ভারতীয় রাজাদের যুদ্ধ-বিবাদকে পুঁজি করে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েন যে তরুণ আমেরিকান 

১৮ শতকের শেষভাগে ভারতে আসেন সাবেক সৈনিক জন পার্কার বয়ড, তিনি ছিলেন সুযোগসন্ধানী ও কৌশলী। সংঘাতকে পুঁজি করে আয় করা অর্থে, একজন বিত্তশালী হিসেবেই ফিরে যান স্বদেশে...
টিবিএস ডেস্ক
31 August, 2022, 07:35 pm
Last modified: 31 August, 2022, 07:41 pm
১৮১২ সালের যুদ্ধে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদাধিকারী জন পার্কার বয়ড। চিত্রকার: বেনসন জন লসিং/ উইকিমিডিয়া কমনস

সময়টা ১৭৯০ সন। ভারতীয় উপমহাদেশে তখন রাজনৈতিক উত্থানপতন চরমে। ভেঙে পড়ছিল মোগল সাম্রাজ্য। বাদশাহ  দ্বিতীয় শাহ আলম ছিলেন মারাঠাদের 'সুরক্ষাধীন' – আসলে অধীনস্ত বলাই সঠিক।

মারাঠাদের মধ্যেও খুব যে ঐক্য ছিল– তা বলার উপায় নেই। ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছিল তাদের। মারাঠা শক্তির কেন্দ্র এসময় ছিল তিনটি পরিবার: ইন্দোরের হলকার, গোয়ালিয়রের স্কিন্দিয়া এবং পুনের পেশওয়াদের হাতে।

অপরদিকে ব্রিটিশদের কাছে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি যুদ্ধে হারের পরও কয়েকটি রাজ্যে উপস্থিতি টিকে ছিল ফরাসী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির।

অন্তর্কোলহ, ষড়যন্ত্র, বিদ্রোহ, আর যুদ্ধ-বিগ্রহের এই কালে অবশিষ্ট শক্তিশালী রাজ্যের মধ্যে ছিল, দক্ষিণের মহিশুর ও হায়দরাবাদ।

ভারতীয় রাজনীতি সত্যিকার অর্থেই ইউরোপীয় বণিক শক্তি, রাজাদের উচ্চাভিলাষ ও রাজ্য বিস্তারের নেশায় হয়ে উঠেছিল অস্থিতিশীল। নিজেদের ক্ষমতা ও রাজ্য সীমানা বাড়াতে, প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ব্যস্ত ছিল প্রায় সব শক্তিধর রাজ্য।

এই পরিবেশ ছিল ইউরোপীয় ভাড়াটে যোদ্ধা ও যুদ্ধ ব্যবসায়ীদের উত্থানের উপযুক্ত। অর্থ দিয়েই কেনা যেত তাদের। কিন্তু, তাদের একক আনুগত্য ছিল না কারো প্রতি। আত্মীয়তার বন্ধনও তারা আস্থাভাজন থাকবে, এমন নিশ্চয়তা দিতে পারতো না। টাকাই ছিল তাদের ধ্যানজ্ঞান ও প্রাথমিক বিবেচনা। বেশি অর্থ মিললেই, এক পক্ষ ছেড়ে আরেকপক্ষে যোগ দিতে কুন্ঠা ছিল না তাদের। 

এমনই একজন রোমাঞ্চ ও সম্পদ-সন্ধানী তরুণ আমেরিকান ছিলেন জন পার্কার বয়ড।

তিনি ছিলেন সাবেক সৈনিক। ১৭৮৯ সনে আসেন ভারতে। শারীরিক গড়নে–লম্বা, সুগঠিত, সুদর্শন বয়ড সে যুগের আদবকেতা মানতেন; উদারহস্তে খরচও করতেন। 

এসব গুণের কারণেই হায়দরাবাদের শাসক নিজামের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। নিজামের অর্থেই গড়ে তুলেছিলেন ১,০০০ পদাধিক সেনার দুই ব্যাটালিয়ন। নিজাম তার চিরকৃতজ্ঞতা আশা করতেই পারতেন। কিন্তু, তা হবার নয়। নিজ সেনাদল নিয়ে নিজামের পক্ষ ছেড়ে মারাঠাদের পক্ষে যোগ দেন বয়ড। প্রথমে হলকার, এবং তারপর লড়েছেন পেশওয়াদের হয়ে। এভাবে কয়েক বছর কাটিয়ে আবার নিজামের কাছেই ফিরে আসেন।

ভারতে থাকার সময়ে রাজদরবারের ষড়যন্ত্র, রাজ্যগুলির রাজনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তনের 'বালির প্রাসাদ' ভাঙ্গাগড়ার খেলা ও সামরিক প্রস্তুতির কখনো প্রত্যক্ষদর্শী, কখনো নিজেই শরীক হয়েছেন বয়ড। এসব কিছু পরবর্তী দশকগুলোয় ভারতের ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।

অর্থাৎ, বলাই যায়– জন পার্কার বয়ড ভারতের ভাগ্যবিধাতার ভূমিকাও পালন করেছেন– ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোয় তার নিজ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। 

সামরিক জীবন

১৭৬৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ম্যাসাচুসেটস- এর নিউবেরিপোর্টে জন্ম বায়ডের। বোস্টন থেকে ৪৫ মাইল উত্তরে ছিল এ বন্দর শহর। তার বাবা জেমস সেখানে এসেছিলেন স্কটল্যান্ড থেকে। অন্যদিকে, ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তার মা সুজানার পূর্বপুরুষরা ইংল্যান্ড থেকে পাড়ি জমান 'নতুন দুনিয়ায়'। 

ভাইদের সাথে একটি দোকানে কাজ করতেন বয়ড। সেখানে ব্যবসায়ীক দক্ষতাও আয়ত্ত করেন কিছুটা। কিন্তু, বয়স তখনও বেশ কম। হাতে অর্থকরীও নেই তেমন। এই অবস্থায় ১৭৮৬ সালে নাম লেখান সেনাবাহিনীতে। 

তিনি সেনাসার্ভিসে যুক্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পশ্চিম ম্যাসাচুসেটস রাজ্যে উচ্চ করের প্রতিবাদে বিদ্রোহ করে বসেন কৃষক ও সাধারণ নাগরিকেরা। 'শেস রেবেলিয়ন' নামক এ বিদ্রোহ দমনকালে কিছু খণ্ডযুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা হয় বয়ডের। 

কিন্তু, সেনাবাহিনীর বাঁধাধরা চাকরি এরপর তার ভালো লাগেনি। চেয়েছিলেন আরও বেশি অর্থবিত্ত উপার্জন। আর সুদূরের ভারতবর্ষ দিচ্ছিল তারই হাতছানি। তাই ১৭৮৯ সনের কোনো একদিন জাহাজে চেপে পৌঁছান ভারতের মাদ্রাজ বন্দরে। এর একবছর পর হায়দরাবাদের রাজদরবারে নিযুক্ত ব্রিটিশ কনসাল তাকে সেখানকার শাসক নিজাম আলী খান দ্বিতীয় আসফ জাহের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এটাই ছিল, বায়ডের জীবনের সবচেয়ে বড় মাহেন্দ্রক্ষণ, যা তার ভাগ্য বদলে দেয়। 

বাবার কাছে লেখা চিঠিতে নিজামের সাথে সাক্ষাতের বিস্তারিত বর্ণনা দেন বয়ড। নিজামের দরবারের শানশওকত কীভাবে তাকে বিস্মিত করেছিল–সেকথাও উল্লেখ করেন চিঠিতে। সামরিক শক্তির তারিফ করে লিখেছেন, নিজামের সেনাবাহিনীতে আছে দেড় লাখ পদাধিক সেনা, ৬০ হাজার অশ্বারোহী আর ৫০০ হাতি। 

হাতিদের নিয়ে গঠিত ব্রিগেড-ই তাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছিল। তিনি লিখেছেন, 'হাতিগুলোর সাজসজ্জা নিজামের উচ্চ রুচির পরিচয় দেয়। হাওদায় একজন নবাবসহ আরও চারজন বসতে পারেন, যা সত্যিই এক দেখার মতো দৃশ্য'। 

নিজামের রাজ্যের প্রত্যেক রাজন্য বা নবাব অন্তত ৫০ জন ভৃত্য, ১৬ জন পালকির বেয়ারা এবং দৌড়ে বার্তা আদানপ্রদান করতে পারে এমন অনেক 'রানার'সহ ভ্রমণ করতেন।   

নিজাম আলী খান দ্বিতীয় আসফ জাহ। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

বয়ডকে পছন্দ হয়েছিল নিজামের। তিনি তাকে ৫০০ রুপি বেতনে চাকরিতে নিযুক্ত করেন। অন্যান্য ভাতা ছিল আরও দেড় হাজার রুপি। সেকালের হিসাবে, একজন অনভিজ্ঞ তরুণের জন্য এই বেতনভাতা ছিল অবিশ্বাস্য। তবে বয়ড তার পুরোটাই বিলাসিতায় ওড়াননি। বরং, এই অর্থে গড়ে তোলেন পদাধিক সেনার দুটি ব্যাটালিয়ন। হায়দরাবাদ রাজ্যে থাকার সময়ে তার নিজস্ব এ বাহিনীর পরিধি বহুগুণে বাড়ে।  

যার বদন্যতায় এত উন্নতি, সেই নিজামের পিঠে ছুরি মারতে দ্বিধা করেননি বয়ড। এমনকী তিনি ও তার সেনা ইউনিটের প্রথম যুদ্ধই হয়েছিল নিজামের বিরুদ্ধে। অধুনা আহমেদনগরের কাছে  ১৭৯৫ সালের এই লড়াই 'খার্দার যুদ্ধ' নামে পরিচিত। সম্মিলিত মারাঠাশক্তি ভাড়া করেছিল বয়ডকে, যারা এ যুদ্ধে নিজামকে পরাজিত করে। 

এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। অথচ নিজাম ভেবেছিলেন, ইংরেজরা তার পক্ষে থাকবে। এই বিশ্বাসঘাতকতায় রুষ্ট নিজাম ফরাসীদের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে থাকেন। 
জোয়াকিম মারি রেমন্ড নামের এক ফরাসীকে তার অস্ত্রাগারের প্রধান (সিপাহসালার) নিযুক্ত করেন নিজাম দ্বিতীয় আসফ জাহ। এতে বিপন্ন হয় ইংরেজদের স্বার্থ। আসলে রেমন্ড হায়দরাবাদে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তার দানধ্যানের কল্যাণে। মানুষ তাকে ভালোবেসে 'মুসা রহিম' বা 'মুসা রাম' নামেও ডাকতো। 

খার্দার যুদ্ধের পর মারাঠারা বয়ডের মাসিক বেতন বাড়িয়ে ৩ হাজার রুপি করে। এই অর্থ দিয়ে তিনি স্বাধীনভাবে একটি সেনাদলই গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে, দৃশ্যত রাজনৈতিক আনুগত্যের চাপ থেকে অনেকটা মুক্ত হতে পেরেছিলেন। 

তবে তার চূড়ান্ত আনুগত্য ছিল ব্রিটিশদের প্রতি, যা আরও স্পষ্ট হয় ১৭৯৭ সালের ৯ আগস্ট। এসময় তড়িঘড়ি করে বয়ডের সাহায্য চেয়ে পাঠান হায়দরাবাদের ব্রিটিশ রেসিডেন্ট জেমস কির্কপ্যাট্রিক। তখন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, নিজামের ফরাসী সেনাধ্যক্ষ রেমন্ড সেখান থেকে ব্রিটিশদের হঠাতে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। প্যাট্রিকের ডাকে তাৎক্ষণিক সাড়া দেন বয়ড। সেনাদল নিয়ে হায়দরাবাদে এসে সামরিক শক্তির মহড়া দেন। 

আকস্মিক এই ঘটনায় পিছিয়ে যান রেমন্ড। বাধ্য হয়ে গোপনে নিজ সেনাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হন। ভোর হওয়ার আগেই শত্রু হামলার শঙ্কামুক্ত হয় ব্রিটিশ ছাউনি। এ ঘটনায়, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কৃতজ্ঞতা অর্জন করেন বয়ড। ধন্যবাদ জানিয়ে, তাকে একটি চিঠি লেখেন ব্রিটিশ রেসিডেন্ট। বয়ডকে তিনি পুরস্কৃত করার প্রতিশ্রুতি দেন। পুরষ্কার অবশ্য তখন নেননি বয়ড। নিয়েছিলেন অনেক বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে।   
 

মাইকেল জোয়াকিম মারি রেমন্ড। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

রাজনৈতিক পাশাখেলার এই দানে শেষপর্যন্ত লাভবান অবশ্য রেমন্ডই হন। নিজাম আর বয়ডকে ভাড়া করতে চাননি। অচিরেই পেশওয়াদের অধীনেও কাজ করার সুযোগ নষ্ট হয় বায়ডের। আসলে সে সময়ে পেশওয়ার দরবারে চলছিল চরম ষড়যন্ত্র। ১৭৯৫ সনে দ্বিতীয় বাজি রাওকে মারাঠা কনফেডারেসির পেশওয়া (প্রধান শাসক) নিযুক্ত করা হয়। সাবেক রাজ-উপদেষ্টা নানা ফড়নবিশের প্রভাব খর্ব করতে চাইছিলেন দৌলত রাও স্কিন্দিয়া। এই সময়ে বয়ডের সাবেক নিয়োগকর্তা হলকারদের মারাঠা কনফেডারেসির জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হতে থাকে। 

এসময় বয়ডের সাথে কী হয়েছিল– তা নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। তবে সবাই মোটামুটি একমত যে, তার আনুগত্য নিয়ে সন্দিহান হয়ে উঠেছিলেন স্কিন্দিয়া। তিনি তাকে চাপা হুমকিও দিতে থাকেন। 

অন্য রকমও শোনা যায়। যেমন একটি বর্ণনায় বলা হয়, প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে তিনি বিরক্ত হয়ে ওঠেন। আবার কথিত আছে, সঙ্গী আরেক ইউরোপীয়কে হত্যার ঘটনায় বয়ড হস্তক্ষেপ করেন, এতে স্বয়ং পেশওয়া চটে যান। 

শত্রুদের হাতির পায়ের তলায় পিষে মারতেন পেশওয়া দ্বিতীয় বাজি রাও। এই পরিণতি নিজেরও হোক–তা কেইবা চায়। তাই বোম্বাই গিয়ে ব্রিটিশদের কাছে আশ্রয় চান বয়ড। এই চটজলদি পালানোর সময় নিজ হাতে তিল তিল করে গড়ে তোলা বাহিনীকে জ্যাঁ ব্যাপ্টিস্ট ফিঁলো নামক একজনের কাছে ৩৫ হাজার রুপির বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। 

'বাহিনীতে ছিল দুই ব্যাটালিয়ন সেনা, চারটি কামান, একদল অশ্বারোহী এবং পশতুন বংশদ্ভুত দুধর্ষ রোহিল্লা সেনাদের ছোট্ট একটি দল– সবমিলিয়ে দুই হাজার সুপ্রশিক্ষিত যোদ্ধা ও তাদের অস্ত্র, সাজসরঞ্জাম'।
আর টাকার অঙ্কটাও সে যুগের হিসাবে নেহাত কম ছিল না। 

পেশওয়া দ্বিতীয় বাজি রাও। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পর

১৭৯৮ সনে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরেন বয়ড। ঐতিহাসিক কিছু বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি পেশওয়ার অধীনে চাকরির সময় হৌসিনা বেগম নামের এক স্থানীয় নারীকে বিয়ে করেন। ফ্রান্সিস নামে একটি কন্যা সন্তানও ছিল এ দম্পতির।   

স্বদেশে ফেরার পর নিজের বিপুল সম্পদ দিয়ে মেইন অঞ্চলের অর্নেভিল শহরে বহু একর জমি কেনেন। এখনও ওই শহরের পোস্ট অফিস, লেক, বাগানসহ বেশকিছু ল্যান্ডমার্কের নামে বয়ডদের পারিবারিক নাম জড়িয়ে আছে। তিনি কানেকটিকাটের মেডফোর্ড শহরতলীতেও আরও জমি কেনেন। 

১৮০৬ সনে, লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সদর দপ্তরে একটি চিঠি লেখেন বয়ড। চিঠিতে তিনি ভারত থেকে ৩০০ টন শোরা (বারুদ তৈরির উপকরণ) আমদানির অনুমতি চেয়েছিলেন, এবং তা পেয়েও যান। এই চালান মার্কিন সরকারের কাছে বিক্রি করে বিপুল লাভের আশা করেছিলেন। কিন্তু, উত্তমাশা অন্তরীপের কাছাকাছি আসার পর মার্থা নামের ওই জাহাজটি বাজেয়াপ্ত করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্য একটি জাহাজ। 

নিজের মালামাল ফিরে পেতে যথেষ্ট চেষ্টা করেন বয়ড। এমনকী কলকাতা ও লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বড় কর্তাদের কাছেও দেনদরবার করেন। কিন্তু, লাভ হয়নি। কোম্পানি ওই শোরা পরে খুব অল্প দামে নিলামে বিক্রি করে বয়ডের প্রতিদ্বন্দ্বী বোস্টনের কিছু ব্যবসায়ীর কাছে। এই লোকসান কাটিয়ে উঠতে বয়ডের এক দশক সময় লেগে যায়। এই সময়ে সামরিক বাহিনীতে ফেরার সুযোগ তাকে আরও একবার হাতছানি দিয়ে ডাকে।  

১৮০৮ সালে মার্কিন কংগ্রেসে এক আইন পাসের পর নবগঠিত চতুর্থ পদাধিক রেজিমেন্টের কর্নেল হন বয়ড। বছর তিনেক পরই এই সেনাদল নিয়ে তিনি হাজির হন ইন্ডিয়ানা রাজ্যে। সেখানে দুই রেড ইন্ডিয়ান ভাই– তেকুমসেহ ও তেনসকাওয়াতা জ্বালিয়েছিলেন বিদ্রোহের আগুন। সব গোত্রকে ঐক্যবধ্য হয়ে তাদের ভূমি জবর দখলকারী মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুতি নিতে বলছিলেন তারা।  

রেড ইন্ডিয়ানদের নেতা তেকুমসেহ। তিনি ১৮১২ সালে ব্রিটিশদের সাথে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। ছবি: লাইব্রেরি অব কংগ্রস

বয়ডের সাথে ইন্ডিয়ান ভাইদের যুদ্ধ হয়েছিল। ইন্ডিয়ানার ভিনসেনিস- এর প্রচণ্ড লড়াইয়ের সময় শত্রুকে ঠেকিয়ে রাখার দাবি করেছেন বয়ড তার লেখা বর্ণনায়। কিন্তু, পরের বছর কানাডার রণাঙ্গনে সেনাধ্যক্ষ হিসেবে নিজ পারদর্শীতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন। এ সময় তিনি নিজ বাহিনী নিয়ে জাহাজে করে সেন্ট লরেন্স নদীর উজানে মন্ট্রিয়ালে যান। কানাডা তখন ব্রিটিশদের দখলে। নদীর পাড় ধরে তার বাহিনীকে অনুসরণ করেছিল ব্রিটিশরা। তারা মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে রেড ইন্ডিয়ানদের ন্যায্য সংগ্রামকে সমর্থন দিচ্ছিল। 
 
কানাডায় সম্মিলিত রেড ইন্ডিয়ান ও ব্রিটিশ সেনাদের সাথে লড়তে হয়েছে বয়ডের মার্কিন সেনাদলকে। কিন্তু 'ব্যাটল অব ক্রাইসলার ফার্ম' নামক লড়াইয়ে প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে হয় মার্কিনীদের। বাধ্য হয়েই দ্রুত পিছু হঠতে বাধ্য হয় তারা।  

এই লড়াই চলাকালে সেনাপতি ভুল সিদ্ধান্তের জন্য বয়ডের সমালোচনা করা হয়। তবে দৃঢ়ভাবে নিজ ভূমিকার আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন তিনি। তাতে অবশ্য সুনাম বাঁচেনি। পরবর্তীতে তাকে আর কোনো যুদ্ধের ভার দেয়নি মার্কিন সরকার। 

বয়ডের সহকর্মী অফিসাররা অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি দৃঢ়চিত্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তিনি বারবার দ্বিধা করেছেন। 

ভারত থেকে আমদানি করার পথে বাজেয়াপ্ত হওয়া শোরার ক্ষতিপূরণ পেতে ১৮১৬ সালে লন্ডনে যান বয়ড। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একটি কমিটির, যার প্রধান ছিলেন এমপি উইলিয়াম উইলবারফোর্স। ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ কয়েক মাস দেরি করে কমিটি। এসময় তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে থাকা বয়ডের সাবেক সহযোগীদের সাক্ষ্য নেয়। অবশেষে, ৩০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়, বয়ড যতোটা আশা করেছিলেন তার তুলনায় অর্থের অঙ্ক ছিল যথেষ্ট কম।  

আরও প্রায় বছর ১৫ পর, স্বদেশে রাজনৈতিক আনুকূল্য ফিরে পান বয়ড। ১৮৩০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসন তাকে বস্টন বন্দরের প্রধান নৌ কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন। বন্দরের শুল্ক আদায়, জাহাজের যাত্রীদের তালিকা নিরীক্ষা ও অন্যান্য কর ধার্য করা- ইত্যাদি দায়িত্ব ছিল তার। বিনিময়ে তাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ একটি মাসিক ভাতা দিত সরকার। কিন্তু, এই সৌভাগ্য তার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র কয়েক মাস দায়িত্ব পালন করার পরই ওই বছরেই মারা যান বয়ড। 

মৃত্যুকালে তার বিশাল সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ দিয়ে যান ভারতে থাকা কন্যা ফ্রান্সেসকে, একই পরিমাণ দিয়ে যান পুত্র ওয়ালেসকে। ম্যারি রুপেল নামে এক নারীর সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে ১৮১৪ সালে ওয়ালেসের জন্ম হয় বলে জানা যায়। তবে ফ্রান্সেস ভারতের কোথায় ছিলেন তার সন্ধান কোনোদিন মেলেনি। 


  • সূত্র: স্ক্রোল ডটইন 
     

Related Topics

টপ নিউজ

জন পার্কার বয়ড / ভাড়াটে সেনা / ভারতের ইতিহাস / মোগল / মারাঠা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার
  • মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান
  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা: ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ইসরায়েল
  • বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরে কর হার কমাল সরকার

Related News

  • মোগল ঐতিহ্যে ঈদ উদযাপনের অপেক্ষায় ঢাকা
  • ভারতবর্ষের পায়জামা যেভাবে পশ্চিমা পায়জামা হয়ে উঠল
  • কলম্বিয়া, বিশ্বের বৃহত্তম ভাড়াটে সৈন্য রপ্তানিকারক: 'আমরা ফুটবল খেলোয়াড়ের মতো, কাজ দেখে নেয়’
  • মোটা অঙ্কের বেতন ও পাসপোর্টের আশায় রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছে কিউবানরা
  • গুলবদন বেগম: দুঃসাহসী মোগল রাজকন্যার মহাকাব্যিক সমুদ্রযাত্রা

Most Read

1
অর্থনীতি

কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার

2
আন্তর্জাতিক

মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক

3
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান

4
বাংলাদেশ

গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত

5
আন্তর্জাতিক

ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা: ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ইসরায়েল

6
অর্থনীতি

বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরে কর হার কমাল সরকার

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net