Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
June 20, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, JUNE 20, 2025
নেপথ্যের মেধাশ্রমিক গোস্টরাইটার

ইজেল

উচ্ছ্বাস তৌসিফ
01 February, 2022, 03:15 pm
Last modified: 01 February, 2022, 05:41 pm

Related News

  • অমিয়শঙ্কর, ঘরে ফিরে যা
  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • রং চলিষ্ণু, রঙ্গিলা প্রেমিক...

নেপথ্যের মেধাশ্রমিক গোস্টরাইটার

গোস্ট রাইটিং বিষয়টি 'সেবা'র নিজস্ব উদ্ভাবন না। এ জিনিস বহু আগে থেকেই প্রচলিত আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গনে। শুনে হয়তো অবাক হবেন, আলেকজান্ডার দ্যুমার লেখা ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ কিংবা ‘কাউন্ট অব মন্টেক্রিস্টো’ আসলে তাঁর লেখা নয়। গোস্ট রাইটিং! এ রকম উদাহরণ আসলে ভুরি ভুরি।
উচ্ছ্বাস তৌসিফ
01 February, 2022, 03:15 pm
Last modified: 01 February, 2022, 05:41 pm

বছরখানেক আগে সাহিত্যপাড়ায় সাড়া পড়ে যায় গোস্ট রাইটিং নিয়ে। যদিও ঘটনার শুরু আরও দুই বছর আগে। কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত চরিত্র বাঙালি গুপ্তচর মাসুদ রানা। ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আবদুল হাকিম এই চরিত্রটির ২৬০টি বইয়ের স্বত্ব দাবি করে ঠুকে দেন মামলা। সেইসঙ্গে দাবি করেন কাজী আনোয়ার হোসেনের আরেক বিখ্যাত চরিত্র 'কুয়াশা'র ৫০টি বইয়ের স্বত্ব! যদিও বিষয়টা বরাবরই ছিল ওপেন সিক্রেট। সবাই জানতেন, কাজী আনোয়ার হোসেন নিজেও এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই চরিত্রদের নিয়ে অনেক বই-ই লিখেছেন গোস্টরাইটাররা। তবু মামলার রায় যখন শেখ আবদুল হাকিমের দিকে ঝুঁকে পড়ে, তখন নতুনভাবে সচেতন হয়ে ওঠেন পাঠকেরা।

সেবা প্রকাশনী এ দেশের বেশিরভাগ পাঠকের কৈশোর রাঙিয়েছে। স্বপ্ন দেখিয়েছে রোমাঞ্চকর জীবনের, বাধ্য করেছে নিয়মিত নতুন নতুন বই হাতে তুলে নিতে। গল্পের মাসুদ রানাকে বাস্তবে বাংলাদেশের মানুষ খুঁজে ফিরেছে কাজী আনোয়ার হোসেনের মধ্যেই। তাঁকে নিয়ে যখন অভিযোগ উঠল, তাঁর বিখ্যাত চরিত্র দুটির স্বত্বাধিকার যখন হারাতে বসলেন তিনি নিজেই, পাঠক তখন নতুনভাবে পুরো বিষয়টা নিয়ে ভাববেন, এটাই স্বাভাবিক।

একের পর এক প্রশ্ন উঠতে থাকে জনমানসে। গোস্ট রাইটিং কি আইনত সঠিক? স্বত্ব কি গোস্টরাইটারের হওয়া উচিত, নাকি বই যাঁর নামে বিক্রি হচ্ছে, তিনিই স্বত্বাধিকারী? নানা মত, নানা কথায় একটা জট পাকিয়ে যায় পুরো বিষয়টা নিয়ে। বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই মারা যান শেখ আবদুল হাকিম। আর, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের লাখো-কোটি পাঠক ও ভক্তকে কাঁদিয়ে ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন বাস্তবের মাসুদ রানা, কিংবা রাহাত খান—'বুড়ো খোকা' কাজী আনোয়ার হোসেন। পাঠকের কাজীদা। এক সাক্ষাৎকারে যিনি নিজেই বলেছেন, কৈশোরের পর আর বেড়ে ওঠেননি বলেই লিখতেন অমন রোমাঞ্চকর সব গল্প।

গোস্ট রাইটিং-বিষয়ক প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা তাতে থেমে যায়নি। থামা উচিতও নয়। তবে আলোচনার আগে বিষয়টার গভীরে একটুখানি ঢুঁ দেওয়া প্রয়োজন। এই লেখার উদ্দেশ্য সেটাই—গোস্ট রাইটিং বিষয়টাকে তলিয়ে দেখা।

আলেকজান্ডার দ্যুমার লেখা ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’-এর গোস্ট রাইটার ছিলেন অগাস্তে ম্যাকেঁ

দুই

'গোস্টরাইটার'-এর প্রচলিত ভালো বাংলা নেই। অনেকে আক্ষরিক অর্থে 'ভূত-লেখক' বললেও কথাটা মূল অর্থ প্রকাশে ঠিক যুতসই না। অর্থানুযায়ী বাংলা হওয়া উচিত 'নেপথ্য লেখক'। তবে আমি জোর করে বাংলা করার পক্ষপাতী নই। অর্থ যা-ই হোক, গোস্ট মানে 'ভূত'ই বলি বা 'নেপথ্য' লেখক, কথাটা এমন ব্যক্তিত্বকে বোঝায় পর্দার সামনে যাঁর অস্তিত্ব নেই। যিনি মিশে যাবেন মূল লেখকের নামের ছায়ায়, থাকবেন আড়ালে।

গোস্ট রাইটিং বিষয়টি সেবার নিজস্ব উদ্ভাবন না। এ জিনিস বহু আগে থেকেই প্রচলিত আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গনে। শুনে হয়তো অবাক হবেন, আলেকজান্ডার দ্যুমার লেখা 'দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স' কিংবা 'কাউন্ট অব মন্টেক্রিস্টো' আসলে তাঁর লেখা নয়। গোস্ট রাইটিং!

এ রকম উদাহরণ আসলে ভুরি ভুরি। জেমস বন্ড বা জ্যাক রায়ান সিরিজের কথা বোধ হয় সবার জানা। বিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মজীবনী লেখার কথা বলতে হয় বিশেষ করে। গোস্টরাইটাররাই সাধারণত লেখেন এসব আত্মজীবনী। মানুষটি বারাক ওবামা হন বা হিলারি ক্লিনটন, ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে তাঁরা সাধারণত কলম নিয়ে বসে পড়েন না। নেপথ্যে বসে লেখার জন্য চুক্তি করেন কারও সঙ্গে। হয়তোবা খসড়া লিখে দেন, অথবা গল্পটা বলে দেন নিজের মতো করে। তবে সেটা বই হিসেবে সাজিয়ে-গুছিয়ে লিখে হাজির করেন নেপথ্যের লেখকেরাই।

প্রশ্ন হলো, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কীভাবে কাজ করে এই গোস্ট রাইটিং? একজন গোস্টরাইটারের কি মূল বইয়ের স্বত্বাধিকার থাকে?

আইনত, একটি বই যদি দুজনে মিলে লেখেন, তাহলে স্বত্বাধিকার থাকে দুজনেরই। দুজনের একজন যদি অনেক বেশি লিখে থাকেন, আরেকজন অল্প কিছু এবং সেটা যদি আইনি কাগজপত্রে উল্লেখ থাকে, তাহলে সে অনুসারে ভাগ হয় স্বত্ব। না হয় দুজনের স্বত্ব থাকে পঞ্চাশ শতাংশ করে। সে হিসেবে গোস্টরাইটার এবং লেখক, দুজনেরই বইতে স্বত্বাধিকার থাকা উচিত, থাকেও। স্বত্বাধিকার থাকা মানে, দুজনের যে কেউই বইটি থেকে বানানো বিভিন্ন বিক্রয়পণ্য, যেমন বুকমার্ক, ক্যারেক্টার কার্ড বা এ রকম নানা জিনিসের লভ্যাংশ পাবেন। চলচ্চিত্র বানানো হলে তার লভ্যাংশও পাবেন দুজনই।

কিন্তু বাস্তবে যে এ রকম হয় না, তা বলা বাহুল্য। কেন হয় না? কারণ, গোস্ট রাইটারের সঙ্গে চুক্তি হয় লেখকের। চুক্তি অনুসারে, এককালীন অর্থের বিনিময়ে বা নির্দিষ্ট পরিমাণ শতকরা লভ্যাংশের বিনিময়ে নিজের অংশের স্বত্ব বিক্রি করে দেন গোস্টরাইটার। চুক্তিটা যে লেখক জোর করে করেন, তা নয়। গোস্টরাইটার মূলত কাজটি করেনই অর্থের জন্য। তাই তাঁর স্বত্বটা লেখক কিনে নেন সেই অর্থ দিয়েই। প্রশ্ন হলো, একটা বিখ্যাত চরিত্র নিয়ে লেখা বই বা বিখ্যাত কারও আত্মজীবনী তো এমনিতেই ভালো বিক্রি হওয়ার কথা। তাহলে জেনে-বুঝে গোস্টরাইটার কেন নিজের অংশের স্বত্বটা ছেড়ে দেন?

প্রশ্ন হলো, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কীভাবে কাজ করে এই গোস্ট রাইটিং? একজন গোস্টরাইটারের কি মূল বইয়ের স্বত্বাধিকার থাকে?

উদাহরণ হিসেবে ভাবা যাক হিলারি ক্লিনটনের স্মৃতিকথা 'হার্ড চয়েসেস'-এর কথা। ক্লিনটন তিনজনের একটি দলকে বইটি লেখার দায়িত্ব দেন বলে জানা যায় ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট থেকে। ড্যান শ্যুয়েরিন, ইথান গেলবার এবং টেড উইডমার। প্রথম দুজন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মী এবং তৃতীয়জন হিলারির পরামর্শদাতা ও ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ। মোটামুটি ৯০ ভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায়, এ তিনজনের নাম আপনি শোনেননি (বিশেষ করে হিলারির এ বই নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে ভিন্ন কথা)। তো, এই তিন গোস্টরাইটার জানতেন, বইটি তাঁদের নামে প্রকাশিত হলে বিক্রি হতো বড়জোর পাঁচ, দশ বা বিশ হাজার কপি। অথচ হিলারির নামে প্রকাশিত হওয়ায় এ বই ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রকাশের এক মাসের মধ্যেই বিক্রি হয়েছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ছাপা কপি। ই-বই মিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল আড়াই লাখের মতো! এ রকম একটি বইয়ের নিজের অংশের স্বত্ব অর্থমূল্যে বিক্রি করে দিয়ে গোস্টরাইটাররা যে বিশাল এক অঙ্ক ব্যাংকে পেয়েছেন, তা বলা বাহুল্য। এবারে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, কেন বইয়ের নিজের অংশের স্বত্বটা অর্থমূল্যে বিক্রি করে দেন নেপথ্যের লেখকেরা?

যেকোনো আইনি চুক্তিরই নানা দিক আছে। গোস্টরাইটার ও লেখক, দুই পক্ষকেই জানতে হয় এসব খুঁটিনাটি বিষয়। যেমন বইটির জন্য গোস্টরাইটার কি এককালীন অর্থ পাবেন, নাকি প্রতি কপি থেকে নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পাবেন। বইটিতে কি মূল লেখক গোস্টরাইটারকে স্বীকৃতি বা কৃতজ্ঞতা জানাবেন ভূমিকায়? যদি কখনো এ থেকে চলচ্চিত্র বানানো হয় বা অন্য কোনো বিক্রয়পণ্য বাজারে ছাড়া হয়, তার কি কোনো লভ্যাংশ পাবেন গোস্টরাইটার? চুক্তিতে গোস্টরাইটার যদি এসব অধিকার দাবি করে না নেন, নির্দিষ্ট অর্থ বা বই বিক্রির লভ্যাংশের বিনিময়ে স্বত্ব ছেড়ে দেন, তাহলে পরে তিনি আবার অন্যান্য বিক্রয়পণ্য ইত্যাদির জন্য বাড়তি লভ্যাংশ চাইতে পারবেন না। সাধারণত বইয়ের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র ও অন্যান্য খাত থেকে আসা লভ্যাংশ গোস্টরাইটাররা পান না। স্বত্ব থাকে না তাঁদের কাছে।

পেশাদার গোস্টরাইটাররা অবশ্য চুক্তিতে একটা বিষয় যুক্ত করে নেন। কোন বইগুলো তাঁরা লিখেছেন, সেটা জনসমক্ষে না বললেও পরের কোনো লেখক বা ক্লায়েন্টকে বিষয়টা জানাতে পারবেন তাঁদের পোর্টফোলিওর অংশ হিসেবে। লেখক বা প্রকাশকের কোন কাজগুলোর জন্য চুক্তি বাতিল হবে, লেখা থাকে তা-ও। লেখা থাকে এ রকম নানান আইনি দিক, যেগুলো দীর্ঘ সময়ের এই সম্পর্কে দুই পক্ষের স্বার্থই রক্ষা করবে।

তিন

আইনি দিক তো বোঝা গেল, কিন্তু নৈতিক বিষয়টা কী? একজন লেখক তো আসলে মেধাশ্রমিক বা কলমশ্রমিক। গোস্টরাইটার কি তাহলে বইটি লেখার কৃতিত্ব পাবেন না? যাঁর নামে প্রকাশিত হচ্ছে, তাঁর কৃতিত্ব পাওয়াটা আইনিভাবে সঠিক হলেও, কাজটা কি ন্যায্য?

এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে বইটি কীভাবে লেখা হচ্ছে, তার ওপরে। সাধারণত গোস্টরাইটার বইয়ের পরিকল্পনা করেন না বা মূল কাঠামো তৈরি করেন না। এটা তৈরি করে দেন লেখক। তারপর লেখক, গোস্টরাইটার ও সম্পাদক মিলে আলোচনা করে ঠিক করেন, বইটির কাঠামোবিন্যাস কেমন হবে। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো কীভাবে উঠে আসবে। সে অনুসারে গোস্টরাইটার বইটা লেখেন। সম্পাদক সম্পাদনা করেন। লেখক তার ওপর চোখ বোলান, প্রয়োজনীয় সংশোধনী দেন।

হিলারি ক্লিনটনের জনপ্রিয় আত্মজীবনীও লিখেছেন একজন গোস্ট রাইটার

বিষয়টাকে তুলনা করা যায় আর্কিটেক্ট বা স্থপতির নকশার ওপর নির্মাণশ্রমিকের কাজ করার সঙ্গে। এখানে নির্মাণশ্রমিকের সঙ্গে তুলনা দেওয়ার উদ্দেশ্য গোস্টরাইটারকে খাটো করা নয়। তুলনাটা বোঝার জন্য। মূল বিষয়টির নকশাকার হিসেবে কৃতিত্ব পাবেন স্থপতি, নির্মাণশ্রমিক সেই কৃতিত্ব পাবেন না। হ্যাঁ, লেখার বিষয়টি অত সহজ নয়। নির্মাণকাজের যেমন নির্দিষ্ট ফর্মুলা আছে, লেখার তা নেই। একটা বাক্যে দুটো শব্দ আগে-পরে বসানোর কারণে বদলে যায় অনেক কিছু। কোন বাক্যটা আগে আসবে, কোনটা পরে, এর ওপর বদলে যায় গল্প বলার ধরন। তবে এদিক থেকে ভাবলে গোস্টরাইটারের সমান বা কাছাকাছি কৃতিত্ব পাবেন সম্পাদকও। কারণ, তিনিও বাক্য বা শব্দ, এমনকি গোটা অধ্যায় নিয়েও কাটাকাটি করেন।

সম্পাদক যদি দশ শতাংশ কৃতিত্ব পান, গোস্টরাইটার তাঁর দ্বিগুণ কৃতিত্ব পেলেও পাবেন বড়জোর বিশ ভাগ (আক্ষরিক অর্থে না, কথার কথা হিসেবে বলছি)। একশ ভাগ বা বেশির ভাগ কৃতিত্ব অবশ্যই নয়। সেটা এ ক্ষেত্রে যদি লেখক আগে পুরো গল্পটার খসড়া কাঠামো তৈরি করে দেন। সেটা যদি লেখক না করেন, পুরো গল্পটাই যদি লেখেন গোস্টরাইটার, তাহলে কৃতিত্বটা তাঁর প্রাপ্য।

এ বিষয়টাও দেখা যায় আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গনে। টম ক্ল্যান্সি, জ্যাক রায়ান সিরিজের লেখক এখন আর বেঁচে নেই। তিনি এখন আর বইয়ের খসড়া কাঠামো তৈরি করে দিতে পারেন না। তাই সিরিজের বইগুলোর নাম বর্তমানে লেখা হয় এভাবে—'টম ক্ল্যান্সি'স 'কমান্ডার ইন চিফ' রিটেন বাই মার্ক গ্রিনি'। অর্থাৎ টম ক্ল্যান্সির জ্যাক রায়ান চরিত্রের 'কমান্ডার ইন চিফ' গল্পটি মার্ক গ্রিনি লিখেছেন। এখানে লেখক না, কৃতিত্ব পাচ্ছেন গোস্টরাইটারই।

অর্থাৎ বইটি কে টাইপ করছেন, তা আসলে বড় বিষয় নয়। বইয়ের কাঠামো যিনি ঠিক করে দিচ্ছেন, কৃতিত্বটা তাঁরই প্রাপ্য। সেটা লেখক যেমন হতে পারেন, তেমনি হতে পারেন গোস্টরাইটারও।

তবে স্বত্বের বিষয়টির মতোই এ বিষয়টিরও আইনি দিক আছে। হতেই পারে, গোস্টরাইটারই বইটির পরিকল্পনা থেকে শুরু করে লেখার কাজ, সবই করেছেন। কিন্তু তাঁর নাম দেওয়া হলো না বইতে। কীভাবে হতে পারে এমন? যদি গোস্টরাইটার অর্থমূল্যে নিজের এই কৃতিত্ব, এই শ্রম বিক্রি করে দেন। লেখালেখির কথা না ভেবে যেকোনো সাধারণ চাকরির কথা ভাবুন। অফিসের একটা প্রজেক্টে আপনি হয়তো কারও অধীনে কাজ করছেন। পুরো প্রজেক্ট নিয়ে দিনরাত খেটে কাজ করলেন। প্রজেক্ট বেশ ভালো হলো। এখন প্রজেক্ট শেষে মূল কৃতিত্বটি কি আপনি পান? সাধারণত সাধারণ কর্মীরা এই কৃতিত্বটা পান না। কারণ, তাঁর এই পরিশ্রম, মেধা ইত্যাদির বিনিময়ে অর্থমূল্য দেওয়া হয়।

শুনতে তিতকুটে শোনালেও পুঁজিবাদনির্ভর সভ্যতার মূল কথাই এটা, সবকিছু বিক্রয়যোগ্য। লেখালেখি বা মেধাশ্রমও বিক্রয়যোগ্য। ধর্মীয় বা গভীর দর্শনের দিক থেকে ভাবলে যেমনই শোনাক, সব ধরনের শ্রম বিক্রয়যোগ্য না হলে ক্রিয়েটিভ বা মেধাভিত্তিক অনেক ইন্ডাস্ট্রি ধসে পড়বে পুরোপুরি। তা আপনার সাধারণ চাকরি হোক বা সফটওয়্যার কিংবা মোশন গ্রাফিকস ডিজাইন অথবা গেম ডেভেলপমেন্ট—অনেক ক্ষেত্রেই কৃতিত্ব ও মেধাশ্রম মানুষ বিক্রি করেন অর্থমূল্যে। লেখার জন্য বিষয়টা আলাদাভাবে ভাবার খুব বেশি সুযোগ তাই নেই।

চার

সেবার গোস্ট রাইটিংয়ের বিষয়টি কেমন ছিল? কাজী আনোয়ার হোসেন ও শেখ আবদুল হাকিমের মধ্যে কি কোনো চুক্তি হয়েছিল? ভার্বাল বা মৌখিক চুক্তি নয়, লিখিত চুক্তির কথা বলছি। এ বিষয়গুলো আসলে এখনো অস্পষ্ট। আইনিভাবে এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি কীভাবে হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। দুই পক্ষেরই নানা ধরনের বক্তব্য আছে। তা থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সিদ্ধান্তে হয়তো পৌঁছানো যায়, অনেকেই হয়তো নিজের মতো করে ভেবে নিয়েছেন কিছু না কিছু, কিন্তু এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আদালত বা পক্ষ দুটি ছাড়া আর কেউ দিলে তা সঠিক হবে না।

এ লেখার মূল আলোচ্য বিষয়ও এটি নয়। আলোচ্য বিষয় গোস্ট রাইটিং, যাতে এ নিয়ে কথা বলা বা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে পাঠক আরেকটু ভাবার সুযোগ পান। নেপথ্যের লেখকদের যেন কেউ একেবারে ফেলে না দেন মুহূর্তের মাঝে। আবার মূল লেখককেও পুরোপুরি কৃতিত্বহীন বলে দাবি না করেন চট করে। ভেবে দেখা ও আইনি নানা খুঁটিনাটি বিষয় জানা প্রয়োজন এ ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য। সে পরিমাণ তথ্য জানা না থাকলে এটাই মেনে নিতে হবে। নিজেকে বলতে হবে, এ বিষয়ে আমি যথেষ্ট জানি না।

Related Topics

টপ নিউজ

গোস্ট রাইটার / ইজেল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ
  • মেড ইন হাজারীবাগ: চামড়ার তৈরি পণ্যের হাব হয়ে ওঠার গল্প
  • খোদ দুদকের কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িত, ঘুষ দিতে হয়েছে ১.৯৯ শতাংশ নাগরিককে: বিবিএস জরিপ
  • ইরানে ‘বাংকার-বাস্টার’ ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে ইসরায়েল, কতটা ভয়ানক এই বোমা?
  • ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
  • ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

Related News

  • অমিয়শঙ্কর, ঘরে ফিরে যা
  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • রং চলিষ্ণু, রঙ্গিলা প্রেমিক...

Most Read

1
বাংলাদেশ

সরকারি সেবায় ঘুষবাণিজ্য: শীর্ষে বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বিতীয়—বিবিএসের জরিপ

2
ফিচার

মেড ইন হাজারীবাগ: চামড়ার তৈরি পণ্যের হাব হয়ে ওঠার গল্প

3
বাংলাদেশ

খোদ দুদকের কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িত, ঘুষ দিতে হয়েছে ১.৯৯ শতাংশ নাগরিককে: বিবিএস জরিপ

4
আন্তর্জাতিক

ইরানে ‘বাংকার-বাস্টার’ ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে ইসরায়েল, কতটা ভয়ানক এই বোমা?

5
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলিদের ‘সামরিক ও গোয়েন্দা এলাকা’ এড়িয়ে চলার আহ্বান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

6
বাংলাদেশ

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net