Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 24, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 24, 2025
বঙ্গোপসাগরের জঠরেই সব বেঙ্গল সাইক্লোন

ইজেল

এম এ মোমেন
24 October, 2022, 06:55 pm
Last modified: 28 May, 2024, 10:38 am

Related News

  • নিম্নচাপ চলে গেলেও প্রভাবে তছনছ কুয়াকাটা উপকূল
  • উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • ২৩-২৮ মে'র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'শক্তি'
  • চলতি মাসে আরও তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরের জঠরেই সব বেঙ্গল সাইক্লোন

এম এ মোমেন
24 October, 2022, 06:55 pm
Last modified: 28 May, 2024, 10:38 am

মহাপ্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস নজরুল সাইক্লোনের কমোট ধ্বংস আঁচ করতে পেরেছিলেন বলা মুশকিল, এই সাইক্লোন ভেঙ্গে করে সব সব চুরমার, এই দৃশ্যই চোখে ভাসে, কিন্তু লক্ষ মানুষের লাশ কল্পনা করা যায় না। বাস্তবের সাইক্লোন কবিতার সাইক্লোনের চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভয়াবহ। 

১৮৭৬-এর বেঙ্গল সাইক্লোন বা বাকেরগঞ্জ সাইক্লোনের কল্পনার সাথে দু'লক্ষ লাশও যোগ করতে হবে, ১৯৭০ এর সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের সাথে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ লাশ, ১৯৯১-এর সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের সাথে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ লাশ, ১৯৯১-র ঘূর্ণিঝড়ের সাথে এক লক্ষ লাশ সাইক্লোন বর্ণনার অবিভাজ্য অংশ।

কিন্তু এই ঘাতক সাইক্লোন দূরের কোনো শত্রুদেশ থেকে আসে না। জন্ম নেয় এবং বেড়ে উঠে আমাদেরই বহুল অহংকারের বঙ্গোপসাগরে। প্রাচীন ধ্রুপদী ভারতের কলিঙ্গ সাগরই বে অব বেঙ্গল বঙ্গোপসাগর। ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে টেকটোনিক প্লেটের সঞ্চলন বৃহৎ সুপার কনটিনেন্ট গন্ডোয়ানাকে ভেঙ্গে ফেলে, ১৩ কোটি বছর আগে ভারত ও অ্যান্টার্কটিকা গন্ডোয়ানা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় পূর্ব ভারত ও পূর্ব এন্টার্কটিকার মধ্যে সৃষ্ট ফাটল কালক্রমে ১২ কোটি বছর আগে বঙ্গোপসাগরে পরিণত হয়। 

এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উপসাগর; ২ লক্ষ ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এই জলাধারের অবস্থান। সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ২০৯০ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ প্রস্থ ১৬১০ কিলোমিটার। গড়পরতা গভীর তা ২৬০০ মিটার এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ৪৬৯৪ মিটার।

বঙ্গোপসাগর যে সব দেশ ছুঁয়েছে: বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। ভূমিবন্দী ভুটান ও নেপালও বঙ্গোপসাগরের বন্দরই ব্যবহার করে থাকে এবং মিয়ানমারে উপকূলকে চীনের দ্বিতীয় উপকূল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি বঙ্গোপসাগর নির্ভর।

যখন সাইক্লোন, জলোচ্ছাসের কথা শুনি আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত লন্ডভন্ড যাবার দৃশ্য কল্পনা করি। কিন্তু বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে পঞ্চাশটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের দীঘা, উড়িষ্যার চন্ডিপুর আর পুরি, অন্ধ্রপ্রদেশের মাঙ্গিনাপুরি, তামিলনাড়ুর মহেশ্বরাম, আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের রাধানগর, ইন্দোনেশিয়ার উলি লিও, মিয়ানমারের সিটউন, শ্রীলঙ্কার ত্রিকোনমালে প্রভৃতি। 

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্যারাবন এবং সবচেয়ে বড় সৈকত বঙ্গোপসাগরেই। এই উপসাগরের মধ্যেই কয়েকটি দ্বীপপুঞ্জ মালা এবং সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। উপসাগরের তীরে ২২টি প্রতিষ্ঠিত সমুদ্রবন্দর: চেন্নাই, নিজামপট্টাস, কোড বে, মালয় কোভ, কুড্ডালোর, লক্ষপনা, চট্টগ্রাম নাগাপট্টিনাম, সিটউই, বিগ ক্রিক, অনুভিল, উলিলহিউ, মাচিলি পাতনাম, বিশাখাপতনাম, ক্রিকোনমালি পন্ডিচেরি, হলদিয়া এনোর পরদ্বীপ, কাকিনাদা, গঙ্গাভরাম ও কৃষ্ণপতনাম। বন্দরের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। চালনা সমুদ্র বন্দর হলে তা পশুর নদীতে।

আরেক বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল
বঙ্গোপসাগরকে দ্বিতীয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল বিবেচনা করা হয়। ত্রিভুজাকৃতির এই জলসীমানার ভেতরে অসংখ্য জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশই সাইক্লোনের খোরাকে পরিণত হয়েছে। ১৮৫০ সালে ঈগল নামের আমেরিকান জাহাজ ব্যাপটিস্ট মিশনারি নিয়ে ভারতে আসার পথে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়।

১৮৭৫ সালে বার্ক ও ইউটার্প নামের দুটো জাহাজ টাইফুন ও সাইক্লোনের কবলে পড়ে সাগরে সমাহিত হয়, প্রাণ নিয়ে কোনো যাত্রী বা ক্রু ফিরতে পারেনি। 

দু'একটি বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া বঙ্গোপসাগরে জাহাজডুবির মূল কারণ সাইক্লোন। ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলাকালে জার্মান নৌবাহিনীর গোলাবর্ষণে এসএস অটোমেডন সুমাত্রার কাছে ডুবে যায়। ১৮১৬ সালে মার্কিন জাহাজ মর্নিংটন এখানে ভস্মীভূত হয়।

মহাযুদ্ধের সময় বোমাবর্ষণের কারণে বঙ্গোপসাগরে এইচএমএস হার্মেস এবং এসএস ইন্ডাস সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যায়। ১৯৭১ এর ডিসেম্বরের শুরুতে পাকিস্তানি ডেস্ট্রয়ার পিএএএস গাজী রহস্যজনক বিস্ফোরণ সাগরে ডুবে যায় এবং পাকিস্তানের পরাজয় ত্বরাম্বিত করে।

সাইক্লোন মৃত্যুর ৮০ ভাগই বঙ্গোসাগরের সাইক্লোনের কারণে
বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কা উপকূল এই সাগরে সৃষ্ট সাইক্লোনের শিকার। বঙ্গোপসাগরের সাইক্লোন মওসুম প্রধানত মে অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাস। পৃথিবীতে সৃষ্ট মারাত্মক সাইক্লোনের প্রতি ১০টির মধ্যে ৮টিরই জন্মস্থান বঙ্গোপসাগরে। 

বিভিন্ন আবহাওয়া সংক্রান্ত রেকর্ডস থেকে জানা যায় ১০০০ সালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হারিকেন আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানে। ১৪৮০ সালের সাইক্লোন শ্রীলঙ্কা তছনছ করে দেয়। ১৪৮৪ সালে বঙ্গোপসাগরের এক সাইক্লোন চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত করলে ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। ১৫৮২ সালের উষমন্ডলীয় সাইক্লোনে সুন্দরবন এবং পশ্চিমবঙ্গের ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। 

এই সাইক্লোন টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে আঘাত করেছে। ঠিক দু'বছর পর ১৫৮৪ সালের সাইক্লোনে পূর্ববঙ্গের ২ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৬১৮ ও ১৬৮৮-র দুটি বঙ্গোপসাগরীয় সাইক্লোন বোম্বে উপকূল লন্ডভন্ড করে দেয়। ১৬৯৯-র সাইক্লোন কলকাতায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। 

১৭৩৭-এর ৭ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত সাইক্লোনের একাধিক আঘাতে সুন্দরবন ও পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটে। ১৮০৭ এর কলকাতা সাইক্লোন মৃত্যু ৯০ হাজার, ১৮১২-এর সাইক্লোন পূর্ব বাংলায় মৃত্যের সংখ্যা ৪০ হাজার। ১৮৬৪ র ইন্ডিয়া সাইক্লোন অন্ধ্রপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৩ লক্ষেরও বেশি।

১৮৭৬-এর সাইক্লোন বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন নামেও পরিচিত। বেঞ্জামিন কিংসবেরি এই সাইক্লোন নিয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন: অ্যান ইম্পেরিয়াল ডিজাস্টার: দ্য বেঙ্গল সাইক্লোন অব এইটিন সেভেন্টিসিক্স।

গত ৩০০ বছরে বঙ্গোপসাগরীয় ঝড় আর সাইক্লোনহী যেন অন্তহীনভাবে আঘাত হেনে গেছে। শুধু তীব্রতর সাইক্লোনগুলোই সংবাদে পরিণত হয়েছে ধ্বংসযজ্ঞের কারণে।

সাইক্লোন নিয়ে একটি সাধারণ ধারণা পাওয়া যেতে পারে: যখন বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৩৯ মাইল পর্যন্ত, তখন এটাকে বলা হয় ট্রপিক্যাল স্টর্ম বা উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় আর যখন তা ঘন্টায় ১৪ মাইল পৌঁছে এবং তা অতিক্রম করে যায় তখন এটা ট্রপিকাল সাইক্লোন কিংবা হারিকেন।

সাইক্লোনের একটি সাধারণ শ্রেণীবিন্যাস
সাইক্লোন ক্যাটাগরি ১ : বাতাস ঘন্টায় ৭৪-৯৫ মাইল; জলোচ্ছাস ৪-৫ ফুট।
 সাইক্লোন ক্যাটাগরি ২ : বাতাস ঘন্টায় ৯৬-১১০ মাইল; জলোচ্ছাস ৯-১২ ফুট। 
সাইক্লোন ক্যাটাগরি ৩ : বাতাস ঘন্টায় ১১১- ১৩০ মাইল; জলোচ্ছ্বাস ৯- ১২ ফুট।
সাইক্লোন ক্যাটাগরি ৪ : বাতাস ঘন্টায় ১৩১- ১৫৫ মাইল; জলোচ্ছ্বাস ১৩- ১৮ ফুট।
সাইক্লোন ক্যাটাগরি ৫ : বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৫৫ মাইলের বেশি : জলোচ্ছ্বাস ১৯ ফুটের বেশি।

 সাইক্লোন সৃষ্টি হবার কারণগুলো জানা যেতে পারে : সমুদ্রপৃষ্ঠে উষ্ণতার বৃদ্ধি, কোরিওলিস ফোর্সের নিম্নচাপ অঞ্চলের উপর প্রভাব, আবহাওয়ার অস্থিতিশীলতা ট্রপোস্ফায়ারের নিম্ন থেকে মধ্যম স্তরে ক্রমবর্ধমান আর্দ্রতা: উলম্ব বাতাসপ্রবাহ, আগে থেকে চলমান নিম্নচাপ।

সকল উপকরণের জন্য আদর্শ ক্ষেত্র বঙ্গোপসাগর। এখান থেকে উত্থিত কয়েকটি সাম্প্রতিক সাইক্লোন: জাওয়াদ, গুলার, শাহিন, আমফান, বুলবুল, ফানি। আমফানের সর্বোচ্চ বাতাসের গতি ছিল ঘন্টায় ২১৪ কিমি; সাইক্লোনের ব্যাসার্ধ ছিল সর্বোচ্চ ২২২ কিমি। ২ মে ২০২১ সাইক্লোনটি সাতক্ষীরায় আঘাত করে। চলতি বছরের সাইক্লোন আসানি। সাইক্লোন সিডর, আইলা এসব নাম স্মৃতিতে গেথে গেছে।

এর বাইরে দুটো সাইক্লোনের উল্লেখ করা দরকা: ১৭৩৭ এর কলকাতা সাইক্লোন ও ভূমিকম্প এবং ১৮৬৪-র কলকাতা সাইক্লোন।

১১ অক্টোবর ১৭৩৭
লন্ডনের জেন্টলম্যানস ম্যাগাজিন থেকে উদ্ধৃতি:

১৭৩৭ সালের ১১ অক্টোবর রাত। ১১ ও ১১ অক্টোবরের মধ্যবর্তী রাতে গঙ্গানদীর মুখে ভয়ঙ্কর এক হারিকেন আঘাত করল, তাতে গঙ্গার পানি উপচে উঠে ৬০ লিগ। ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল পানি। আবার একই সঙ্গে একটি ভূমিকম্পও হলো। ভূমিকম্প নদীর তীরের সব ভবন ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল। ইংরেজদের মালিকানাধীন গোলগোত্তা বন্দরেই (ক্যালকাটা পোর্ট) দুশ' বাড়ি হুমড়ি খেয়ে পড়ল।

অত্যন্ত সুন্দর চার্চভবনটি ভেঙ্গে না পড়ে মাটির অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ল। হিসেব করে জানা গেছে প্রায় কুড়ি হাজার বজরা, নৌকা, ছোট কোষা ইত্যাদি সাইক্লোন ও পানির তোড়ে ভেসে গেছে। গঙ্গা নদীতে নোঙর করা নয়টি ব্রিটিশ জাহাজের আটটি নিশ্চিহ্ন হয়েছে, অধিকাংশ নাবিক ও খালাসির মৃত্যু ঘটেছে।

তিন মাস্তুলের ৬০ টন ওজনের জাহাজকে যাত্রী ও মালামালসহ ১০ মাইল দূরে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলেছে। তাদের মৃত্যু ঘটারই কথা। গঙ্গার যে স্বাভাবিক জলরেখা তা চল্লিশ ফুট স্ফিত হয়ে নদীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মানুষ ও সম্পদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। এই সাইক্লোন ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ধসে যাওয়া চার্চটি ছিলো ইংরেজ বসতির সবচেয়ে সুন্দর ও প্রধান অলঙ্কার।

সংবাদের আর একটি সংযোজন:
সেপ্টেম্বর ৩০ (নতুন ক্যালেন্ডারে ১১ অক্টোবর), বঙ্গোপসাগরে ভয়ঙ্কর হারিকেন এবং সেই সঙ্গে প্রবল বর্ষণে প্রথম ছয় ঘন্টায় গঙ্গার পানি ১৫ ইঞ্চি বাড়লেও ততক্ষণে ভয়াবহ এক ভূমিকম্প সব ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলে এবং ঝড়ে গঙ্গার পানি নদী থেকে আরো ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত স্থলভাগে ঢুকে পড়ে, ২০ হাজার ছোটবড় জাহাজ, বজরা, নৌকা দিগবিদিকে ভেসে যায়। 

মানুষ পশুপাখি ও সম্পদের অপরিসীম ক্ষতি হয়। গঙ্গা নদী থেকে ৫০০ টনের দুটি ইংলিশ জাহাজকে উড়িয়ে নিয়ে অন্য একটি গ্রামে নিক্ষেপ করে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ ফুট উঁচু দিয়ে জলস্রোত বয়ে যায়। তিনটি ইংলিশ জাহাজ 'ডেশারট ডেভোনশায়ার' এবং নিউক্যাসল আছড়ে ফেলে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। 'ফেলহাম' নামের জাহাজটির কোনো হদিসই পাওয়া যায়নি। একটি ফরাসি মালবাহী জাহাজের ভেতরটা পানিতে ভরে যায় এবং তাতে একটি হিংস্র কুমির দেখা যায়। 

কলকাতা সাইক্লোনের সংবাদ লন্ডন ম্যাগাজিনেও ছাপা হয়। মৃতের সংখ্যা ৩ লক্ষ হবে বলে অনুমান করা হয়। ৪টি ওলন্দাজ পণ্য পরিবাহী জাহাজের ৩টিই নিরুদ্দেশ হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

ইংরেজ জেনারেল অলিভার ক্রমওয়েলের দৌহিত্র স্যার ফ্রান্সিস রাসেল ১৭৩৭-এর ৩১ ডিসেম্বর তারিখের একটি সাইক্লোন কলকাতায় অবস্থানকালে প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি সেদিনের ঝড়ের তান্ডবের একটি বিবরণী লিখে রেখে গেছেন।

১৭৩৭ এর অক্টোবরের সাইক্লোন ও ভূমিকম্পে যে সুদৃশ্য চার্চটি ধসে পড়েছিল সেটি কলকাতার  সেইন্ট অ্যানস চার্চ।

২-৭ অক্টোবর ১৮৬৪
এটি ক্যালকাটা সাইক্লোন এইটিন সিক্সটি ফোর হিসেবে সাইক্লোনের ইতিহাসগ্রন্থ ও আর্কাইভে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

২ অক্টোবর ১৮৬৪ বঙ্গোপসাগরে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম দিকে ঘূর্ণি ঝড়টি প্রথম দেখা যায়। তবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকেই আন্দামানে ঝড়ের সম্ভাবনা বিরাজ করছিল। অক্টোবরের প্রথম দিনের বর্ণনা মানকা নামের একটি জাহাজের লগবইতে লেখা হয়: অন্ধকারচ্ছিন্ন, বর্ষণ, গুমোট আবহাওয়া দক্ষিণ-পশ্চিমের ঝড়ো বাতাস প্রবল হয়ে উঠছে। 

পরদিন সকালের বর্ণনায় বলা হয়: মেঘাচ্ছন্ন তবে বৃষ্টিপাত থেমে গেছে। কিন্তু বিকেলের বর্ণনায় লেখা হয়েছে : আকাশ অত্যন্ত কালো এবং ব্যারোমিটার অনেক নেমে গেছে। পোর্ট ব্লেয়ারের বর্ণনাও কাছাকাছি, তবে ২ তারিখ অপরাহ্নে সাইক্লোন যাত্রা শুরু করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ৩ তারিখ সকাল ১০টা থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়ে। ওয়েফেয়ারার নামের একটি জাহাজ কোনোভাবে ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পায়। পূর্ব উপকূল হয়ে সাইক্লোন হুগলি নদীতে প্রবেশ করে। 

৫ অক্টোবর নদী ক্ষিপ্ত হয়ে কলকাতা ভাসিয়ে দেয়, প্রবল ঝড় বইতে থাকে। ঝড়ের ঝাপটা অনেক দূরের শহর ঢাকাকেও আঘাত করে। ঝড়ের গতি ঘন্টায় ১৭০ কিলোমিটার। ঝড়ে ত্রিপুরা ও মেদিনীপুরকে স্পর্শ করে হিজলি ও খেৎরি বন্দর ধ্বংস হয়ে যায়। ৭ অক্টোবর ঝড়ের দাপট কমে আসে। হিসেব নিয়ে জানা যায় এই সাইক্লোনে মৃত মানুষের সংখ্যা ৬০ হাজার। তাদের প্রায় সকলেই জলমগ্ন হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।

১৯৭০, ১৯৯১ সহ সাইক্লোন মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে পৃথিবীর ৮০ ভাগ মৃত্যুর জন্য দায়ী সাইক্লোনের উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগর।  

Related Topics

টপ নিউজ

সাইক্লোন / ঘূর্ণিঝড় / বঙ্গোপসাগর

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার
  • চাহিদা না থাকায় ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভালো হওয়ায় কমতে শুরু করেছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম
  • প্রতারণা করে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার: অভ্যন্তরীণ তদন্ত
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান
  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করতে ইরানকে বোঝাতে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

Related News

  • নিম্নচাপ চলে গেলেও প্রভাবে তছনছ কুয়াকাটা উপকূল
  • উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ
  • সাগরের মাছ নিয়ে কাটছে দিন, জাহাজে বসবাসও রোমাঞ্চকর!
  • ২৩-২৮ মে'র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় 'শক্তি'
  • চলতি মাসে আরও তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস

Most Read

1
অর্থনীতি

কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার

2
অর্থনীতি

চাহিদা না থাকায় ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ভালো হওয়ায় কমতে শুরু করেছে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম

3
অর্থনীতি

প্রতারণা করে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার: অভ্যন্তরীণ তদন্ত

4
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান

5
বাংলাদেশ

গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত

6
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করতে ইরানকে বোঝাতে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net