Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
September 28, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, SEPTEMBER 28, 2025
গার্সিয়া মার্কেসের প্রিয় ককটেল গল্প

ইজেল

14 May, 2021, 01:15 pm
Last modified: 14 May, 2021, 03:36 pm

Related News

  • মার্কেসের গল্প: স্লিপিং বিউটি অ্যান্ড দি এয়ারপ্লেন
  • মার্কেস ছাড়াও যেসব লেখক মরণোত্তর ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ শিকার হয়েছেন
  • ছেলের চোখে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের গোপন জীবন
  • শেষ উপন্যাস নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ ছিল মার্কেসের, কিন্তু সেটি প্রকাশ করছেন ছেলেরা
  • আগামী বছর প্রকাশিত হচ্ছে মার্কেসের সেই বহুল আলোচিত অপ্রকাশিত উপন্যাস

গার্সিয়া মার্কেসের প্রিয় ককটেল গল্প

দু’জন অভিযাত্রী তুষারেপাতে ঠিকানা হারানো যন্ত্রণাদায়ক তিনটি দিন কাটানোর পর একটি পরিত্যক্ত খুপড়িতে আশ্রয় খুঁজে পেল। তিন দিন পর তাদের একজনের মৃত্যু হলো। খুপড়ি থেকে একশত গজ দূরে বেঁচে থাকা অভিযাত্রী বরফ কেটে একটি গর্ত খুড়ল এবং সেখানে বন্ধুকে সমাহিত করল। পরদিন খুব শান্তিপূর্ণ একটি ঘুমের শেষে যখন জেগে উঠল, দেখল মৃতদেহটি খুপড়িতে। বরফে জমে আছে, একজন দর্শনাথীর মতো বিছানার উপর বসে আছে। এবার আরো দূরের একটি গর্তে তাকে দ্বিতীয়বারের মতো সমাহিত করল। পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠল, আবারও দেখল বিছানায় বসে আছে। এতে তার পাগল হবার মতো অবস্থা হল।
14 May, 2021, 01:15 pm
Last modified: 14 May, 2021, 03:36 pm

সান্তিয়াগো মুতিস দুরানের বাবা আলভারো মুতিস গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের বন্ধু। সান্তিয়াগোও মার্কেসের স্নেহভাজন ছিলেন। তিনি নিজে কবি ও প্রকাশক। তার জন্ম ১৯৫১ সালে কলোম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায়। তার লেখাটি ডেভিড আঙ্গারের অনুবাদে প্যারিস রিভিউতে প্রকাশিত হয়েছে। লেখাটি ইংরেজি থেকে ভাষান্তরিত।

সান্তিয়াগো মুতিস দুরান
১৯৮২-র নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস (জন্ম ৫ মার্চ ১৯২৭ কলম্বিয়ার আরাকাতাকায়, মৃত্যু ১৭ এপ্রিল ২০১৪  মেক্সিকো সিটিতে)।  তিনি ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্য নতুন করে নির্মাণ করেছেন-এই বক্তব্য মানতে রাজি নন চিলির কথাসাহিত্যিক ইসাবেলা আয়েন্দে। তিনি মনে করেন, মার্কেসের হাতে সমকালীন বিশ্বসাহিত্য পুনর্নির্মিত হয়েছে। 

কিউবার ঔপন্যাসিক আলেয়ো কার্পেন্তিয়ার ১৯৪৯ সালে যে  ম্যাজিক রিয়ালিজমের কথা বলেন, মার্কেস তা প্রতিষ্ঠিত করেন এবং জাদু ও বাস্তবের সমীকরণে উদ্ভূত নতুন  ঢেউ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে  দেন।

মার্কেসের অনেক অনুবাদকের একজন এডিথ গ্রসম্যান বলেন, 'তিনি যা লিখেছেন তার সবই সোনা।' 

বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এসে ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্য যাদের হাত ধরে  জেগে উঠেছে তাঁদের অন্যতম প্রধান পাবলো নেরুদা, আলেয়ো কার্পেন্তিয়ার,   হোর্হে লুই  বোর্হেস, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস, মারিও বার্গাস ইয়োসা এবং কার্লোস ফুয়েন্তেস। কবিতায় এক অনতিক্রম্য উচ্চতায় পাবলো  নেরুদার অবস্থান; নিজস্ব সাহিত্য ভাবনা ও শৈলীতে  গোটা সাহিত্যবিশ্বকে প্লাবিত  করে  রেখেছেন মার্কেস; অনতিক্রম্য তিনিও, তাঁর প্রভাব ও অনুগত পাঠকসংখ্যা আর সকলকে ছাড়িয়ে। 

মার্কেস সাহিত্যকর্মের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন-এই বক্তব্যটি অন্তত মার্কেসের জন্য তেমন গুরুত্ব বহন করে না, পুরস্কার তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেনি, মার্কেসকে পুরস্কৃত করতে পেরে সুইডিশ অ্যাকাডেমি সম্মানিত হয়েছে।  

এরকম গল্প আমরা শুনেছি, কেউ না কেউ বলেছেন- গল্পের লেখকের নাম ছাপা নেই। গল্পগুলো চলে আসছে। আমি একবার গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসকে এমন একটি লেখকবিহীন গল্প মেক্সিকোর কবি অ্যাদোলফো ক্যাস্তাননকে বলতে শুনেছি।

এক তরুণ দম্পতি শহুরে জীবনে একঘেয়ে হয়ে তারা তাদের দুটো ল্যাব্রাডর কুকুর নিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে এসে তাদের ছোট গ্রামীণ বাড়িতে স্থিত হাবার পর প্রতিবেশীর সাথে তাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। প্রতিবেশীর একটি ফলের বাগান আছে সেখানে খরগোশ পুষে। 

একদিন সকালে প্রতিবেশী দম্পতি এসে জানায় তারা শহরে যাচ্ছে পরদিন ফিরবে। 

সকাল বেলাটা শান্তিপূর্ণ ভাবে কেটে গেল, কিন্তু বিকাল বেলা দুই ল্যাব্রাডর দুই খরগোশ মুখে নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকল। আকষ্মিক এ ঘটনায় ভীষণ ধাক্কা খেয়ে এই দম্পতি এরপর করণীয় কি তা নিয়ে আলাপ করে, খরখোশগুলোকে খাঁচায় ভরে তারা বাড়ি ফিরে এলো এবং প্রতিবেশিকে ব্যাপরটা না জানানোর সিদ্ধান্ত নিল। 

কিন্তু তারা এ ঘটনায় নিজেরাও মনমরা হয়ে পড়ল, কিন্তু সন্ধা পর্যন্ত এমনভাবে কাটিয়ে দিল যেন কিছুই ঘটেনি।

পরদিন সকালে তাদের প্রতিবেশী দরজায় টোকা দিল। দুজনের হাতে দুটো মরা খরগোশ। 

এই তরুণ দম্পতি একটি অজুহাত তৈরি করে কিছু বলার আতঙ্ক নিয়ে রাতভরই বিচলিত ছিল। তারা মুখ খোলার আগেই প্রতিবেশী বলল, খরগোশ দুটোকে আজ সকালে তাদের খাচায় মরা অবস্থায় পেয়েছি। গতকাল দুটোকে বাগানে কবর দেবার পর থেকেই আমাদের মন খুব খারাপ ছিল।

আর একটা গল্পের কথা মনে পড়ছে, আমার বাবা আলভারো মুতিস অনেক বছর আগে শুনিয়েছেন, তারপর অন্য বন্ধুরাও এ গল্পের পুনরাবৃত্তি করেছেন।

নিউটন ফ্রিটাস নামের এক ব্রাজিলিয়ান জানতেন জীবনটাকে কেমন করে উপভোগ করতে হয়। তিনি কথা কান পেতে শুনলেন তারা ব্রাসেলস বেড়াতে যেতে যাচ্ছে- এ শহরে তিনি প্রত্যেক মাসেই আসেন। তিনি তাদের জন্য সেখানকার একটি বার পছন্দ করে বললেন তার মতে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী বার। যেহেতু তার দুই বন্ধু তার জানাশোনার মূল্য দিতেন তারা সেই বারে গিয়ে দেখলেন সেখানে আলো খুব কম এবং লোকজন ফিসফিস করে কথা বলছে। আসলে সেখানে বিশেষ বলে কিছু নেই। তারা ভাবলেন নিশ্চয় তারা ভুল কোনো বারে এসেছেন, হোটেলে ফিরে তারা নিউটনকে ফোন করেন, তারা সঠিক ঠিকানার হোটেলে গিয়েছেন কিনা নিশ্চিত হবার চেষ্টা করলেন।

নিউটন বললেন, এটাই সেই হোটেল। এই শুক্রবার তোমাদের সাথে ওখানে দেখা হচ্ছে। তাদের কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিলেন। 

সেই শুক্রবার তারা সেই বারে গেলেন। সেদিন বারটাকে সবচেয়ে বেশি বিষন্ন মনে হলো, যেন প্যাট্রনরা বালিঘড়ির বালির মতো সময় বদলাচ্ছেন।

তারা ভাবলেন কয়েক পেগ হুইস্কি খেলে, জায়গাটাকে প্রাণ ফিরে আসতে পারে, কিন্তু তারপরও সেই মনমরা অবস্থাই বজায় রইল।

নিউটন যখন এলেন দরজা থেকে দিলখোস বন্ধুত্বের স্বরে নাম ধরে তাদের ডাকলেন। অন্য খদ্দেররা ঘাড় ফিরিয়ে তাকলেন, কে এসেছেন? 

যখন তার দেখতে পেলেন তারা আকাশের দিকে হাত উঁচিয়ে তার নাম ধরে চেঁচিয়ে উঠলেন। জোরে নাম ধরে ডাকলেন। হঠাৎ যেন যাদুমন্ত্র বলে এই বারটা হয়ে উঠল পৃথিবীর সবচেয়ে সুখকর স্থান।

আমার মনে হয় গার্সিয়া তার জীবন ও নোটবই পূর্ণ করতে এ ধরনের গল্পের জন্য জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছেন। আমি মার্কেসের সাংবাদিকতা ধরনের নোটে পূর্ণ পুরু বইগুলো পড়েছি, এতে মাত্র পাঁচ বার তাকে ইউরেকা চিৎকার দিতে শুনেছি। পাঁচ দশকের নিবন্ধে পাঁচটি গল্প। নিশ্চয়ই এক সময় এসব গল্পের কোনো লেখক ছিলেন। কিন্তু তারা অজ্ঞাতনামা লেখক হিসেবে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। হাতের আঙ্গুল গলিয়ে মাছ নদীতে ফসকে পড়ে যাবার মতো।

নিচের লেখটি মার্কেসের ৩০ নভেম্বর ১৯৫০ তারিখে এল এসপেকতাদার খবরের কাগজে প্রকাশিত কলাম থেকে নেওয়া। ড্যানিয়েল আরাঙ্গো এই বিষ্ময়কর সুন্দর গল্পটি বলেছেন, মার্কেস বললেন, এটি আমার পক্ষে গোপন রাখা সম্ভব নয়।

পাঁচ বছর বয়সী একটি বালক গ্রামের মেলায় তার মাকে তার দৃষ্টি সীমার মধ্যে দেখতে না পেয়ে পুলিশ অফিসারের কাছ চলে আসে এবং বলে, আপনি কি ঘটনাচক্রে আশে পাশে একজন নারীকে হাঁটাহাঁটি করতে দেখেছেন যার সাথে আমার মতো একটি পুত্র সন্তান নেই?

১৯৫১-র মার্চে এল হেরাল্ডোর একটি নিবন্ধে মার্কেস লিখলেন: উড়োজাহাজে পড়া একটি সংবাদপত্রে ইউপিআই সংবাদ সংস্থার পাঠানো এক ডেসপাচ যেমন ছিল তেমনই তুলে ধরছি কারণ আমার মনে হয়েছে এটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গল্প।

দুই বছর বয়সী ম্যারি জো অন্ধকারে খেলতে শিখছে।

তার মা-বাবা মিস্টার ও মিসেস মে-র সামনে, তখন কেবল দু'টি বিকল্প ছিল- হয় তার জীবন বাঁচবে নয় তার দুই  চোখ অন্ধ হবে। চোখে রেটিনেব্রাস্টোমা সনাক্ত হবার পর মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা তার চোখ দু'টি তুলে নিলেন। আপরেশনের চারদিন পর ছোট্ট মেয়েটি মাকে ডাকতে থাকে মা আমি ঘুম থেকে উঠতে পারছি না। আমি ঘুম থেকে উঠতে পারছি না।

ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার্স অব সলিচিউড
তিরিশ বছর পর গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এল এসপেকতাদর-এ লিখলেন, লিখিত কিংবা শোনা শত শত গল্প আমরা সারাজীবনের জন্য স্মরণ রাখি। হতে পারে এগুলোই শুদ্ধিকরণ দোযখে সাহিত্যের আত্মা। এর কতোগুলো সত্যিকারের কাব্যিক মুক্তো, উড়ন্ত অবস্থায় শোনা, সেখানে লেখকের নাম উল্লেখ নেই- আমরা যখন গল্প শুনি, নিজেদের কখনো জিজ্ঞেস করিনা গল্পটা কে লিখেছেন। কিছুক্ষণ পর আমরা এ ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে পারি না এ গল্পগুলো কি তাহলে আমরাই স্বপ্নে তৈরি করেছি? মার্কেস লিখেছেন আমি জানি কোনো সদয় পাঠক আমার সাহিত্য জীবনের তারুণ্যে পড়া দুটো গল্পের লেখক কে তা আমাকে জানাবেন।

বিষণ্ণতায় ডুবে থাকা দশতলা থেকে লাফিয়ে পড়া একজনের করুণ গল্প- 
যখন সে উপর থেকে পড়তে যাচ্ছে জানালা দিয়ে দেখতে পায় দুজন প্রতিবেশির নিবিড় সম্পর্ক, ছোট্ট গার্হস্ত্য ট্র্যাজেডি, গোপন প্রেমিক, সুখের ক্ষুদ্র মুহুর্ত যার সংবাদ সবার ব্যবহার করা সিঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছায় না- যে মুহুর্তে তার শরীর পাকা রাস্তার উপর আছড়ে পড়ল,  সে ততক্ষণে তার মন সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছে- যে ফল্স দরজা দিয়ে চিরদিনের জন্য যে জীবনটাকে সে সমর্পন করতে যাচ্ছে তার চেয়ে বেঁচে থাকাটা মোটের উপর ভালো ছিল।

দু'জন অভিযাত্রী তুষারেপাতে ঠিকানা হারানো যন্ত্রণাদায়ক তিনটি দিন কাটানোর পর একটি পরিত্যক্ত খুপড়িতে আশ্রয় খুঁজে পেল। তিন দিন পর তাদের একজনের মৃত্যু হলো। খুপড়ি থেকে একশত গজ দূরে বেঁচে থাকা অভিযাত্রী বরফ কেটে একটি গর্ত খুড়ল এবং সেখানে বন্ধুকে সমাহিত করল। পরদিন খুব শান্তিপূর্ণ একটি ঘুমের শেষে যখন জেগে উঠল, দেখল মৃতদেহটি খুপড়িতে। বরফে জমে আছে, একজন দর্শনাথীর মতো বিছানার উপর বসে আছে। এবার আরো দূরের একটি গর্তে তাকে দ্বিতীয়বারের মতো সমাহিত করল। পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠল, আবারও দেখল বিছানায় বসে আছে। এতে তার পাগল হবার মতো অবস্থা হল।

খুপড়িতে আমরা যে জার্নালটি পেয়েছিলাম সে কারণেই গল্পটি আমরা জানি। অনেক ব্যাখার মধ্যে একটি ব্যাখ্যা সবচেয়ে বেশি সত্য মনো হলো : বেঁচে থাকা মানুষটি নিঃসঙ্গ থাকতে গিয়ে এতোটাই মুষড়ে পড়ে যে দিনের বেলায় যাকে সমাহিত করে রাতের বেলা কবর খুঁড়ে তাকে আবার তাকে ঘরে নিয়ে আসে সে আসলে।  
 
মাঝখনে ফুয়েন্তেস, দুদিকে মার্কেস-  টনি মরিসন

১৯৮৫ সালে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস লিখেন, মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কাটার মতো গল্প। একদিকে যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনি মানবিকও। এই গল্পটি ১৯৪৭ সালে রিকার্দো মুনোজ সুয়েকে বলা হয়েছে যখন তাকে স্পেনের টলেডো প্রদেশে ওসানা পেনিটেনশিয়ারি কারাগারে বন্দী করা হয়। স্পেনিয় গণযুদ্ধের প্রথম দিকে আবিলা কারাগারে গুলি করে হত্যা করা একজন রিপাবলিকান কারাবন্দীর জীবনের সত্যিকার কাহিনী এটি।

ফায়ারিং স্কোয়াড তাকে কারাকক্ষ থেকে বের করে তুষার শীতল দিনে একটি বরফ জমা মাঠের উপর দিয়ে মৃত্যুমঞ্চ- এক্সিকিউশন ফিল্ড-এ নিয়ে গেল। সিভিল গার্ডদের মাথায় ওলের টুপি, হাতে চামড়ার গ্লাভস এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী তিন কোনা হ্যাট, তারপরও তারা জমাট মাঠের উপর দিয়ে যাবার সময় কাঁপতে থাকে। বেচারা কয়েদীর পরনে সুতো উঠে যাওয়া উলের জ্যাকেট। নিজের শরীর জমে যাওয়া ঠেকাতে হাত দিয়ে শরীর ঘষছে, অভিশাপ দিচ্ছে ভয়ঙ্কর ঠান্ডা দিনকে। কয়েদীর এই ঘ্যানঘ্যানে আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে স্কোয়াডের নেতা চেঁচিয়ে তাকে বলল, ধ্যাৎ, ঠান্ডায় শহীদ হওয়ার চেঁচামেচি, বাকোয়াজি থামা, ব্যাটা। আমাদের একটু দয়া কর। বুঝিস যে আমাদের আবার পুরো পথ হেঁটে ফিরতে হবে।

উপসংহারে এসে ১৯৭১ সালে গার্সিয়া মার্কেস রিতা গিলবার্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন তা উল্লেখ করতে চাই :

আমার একটি খাতা আছে যেখানে আমি যেন গল্প লিখতে পারি সে সম্পর্কে নোট নিই। এখন পর্যন্ত আমার ৫০ টি গল্প হয়েছে, আশা করছি ১০০-তে গিয়ে থামব। আমার সৃষ্টির সবচেয়ে কৌতুলোদ্দীপক বিষয় হচ্ছে আমার অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। কোনো বাগধারা কিংবা কোনো ঘটনা থেকে  যে গল্প উঠে আসে কখনো তা সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশ সময়ে আমার কাছে আসে, কখনো আসেই না। আমি একটা কিছু বলছি শুনুন, কেমন করে রহস্যময় পথে গল্প আমার কাছে আসে।
 
এক রাতে বার্সেলোনায় ক'জন বন্ধু আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন। তখন আলো নিভে যায়। যেহেতু একমাত্র আমাদের অ্যাপার্টমেন্টেরই বিদ্যুাৎ সংযোগ চলে যায়, আমরা মিস্ত্রি ডাকি। যখন সে মেরামতের কাজ করছিল, আমি মোমবাতি ধরে রাখি এবং জিজ্ঞেস করি, এই লাইনে এতো সমস্যা কিসের?  সে বলল, আলো হচ্ছে পানির মতো। তুমি ফসেট খুলবে দেখবে আলো বেরোচ্ছে এবং মিটারে তা উঠছে। সেই মুহুর্তে আমি একটি গল্পের প্রণোদনা দেখতে পেলাম।

সমুদ্র থেকে দূরের শহরে, এটা প্যারিস হতে পারে, মাদ্রিদ কিংবা বোগোটা, এক তরুণ দম্পতি তাদের দশ ও সাত বছরের সন্তানসহ ছয় তলায় বাস করে। একদিন সন্তানরা তাদের বাবা মায়ের কাছে  বৈঠাঅলা নৌকা চেয়ে বসে। বাবা বললেন, 'আমরা কেনো নৌকা কিনে দেব? শহরে তুমি নৌকা দিয়ে কি করবে? গ্রীষ্মে আমরা যখন সমুদ্রের পাড়ে যাব, তখন ভাড়া নেব।'

সন্তানরা পীড়াপীড়ি করে তাদের তখনই একটা নৌকা লাগবে, বাবা জবাব দেন, যদি স্কুলে পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড পাও তাহলে তোমাদের একটা কিনে দেব। 

সন্তানরা সর্বোচ্চ গ্রেড পায় এবং বাবা তাদের নৌকা কিনে দেন। তারা যখন ছয় তলায় পৌঁছে বাবা জিজ্ঞেস করেন, 'এটা দিয়ে তোমরা কি করবে?' 

তারা জবাব দেয় 'কিছুই না, আমরা শুধু চেয়েছি, বেডরুমে কোথাও ঢুকিয়ে রাখব।'

এক রাতে বাবা মা সিনেমা দেখতে গেলে বাচ্চারা একটি বাল্ব ভেঙ্গে ফেলে এবং আলো পানির মতো বইতে থাকে এবং নিচ থেকে সিলিং পর্যন্ত উঠতে থাকে, তখন তাদের অ্যাপার্টমেন্টে ৪ ফুট পানি। তারা নৌকা বের করে আনে এবং বৈঠা বেয়ে এক রুম থেকে অন্যরুমে, সেখান থেকে কিচেনে যায়। যখন তাদের বাবা মা আসি আসি করছেন তারা নৌকাটা ক্লেজেটে ঢুকিয়ে ফেলে, ড্রেন দিয়ে পানি বের করে দেবার সুযোগ করে দেয়, বাল্ব স্ক্রু দিয়ে আটকে রাখে যেন কিছুই হয়নি। তারা গগলস চোখে দেয়। পায় ফ্লিপার পরে, পানির নিচে বল্লম চালিয়ে মাছ ধরতে থাকে। রাতে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা লোকজন দেখতে পায় জানালা দিয়ে  বেরিয়ে আসা আলো রাস্তা ভাসিয়ে নিচ্ছে। সুতরাং তারা অগ্নিনির্বাপকদের দফতরে ফোন দিল। দমকলের লোকজন যখন দরজা ভাঙ্গে তারা দেখতে পায় বাচ্চারা তাদের খেলায় এমন মতে আছে যে তারা বুঝতেই পারেনি আলো সিলিং পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং আলোতে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

  • ভূমিকা ও অনুবাদ: আন্দালিব রাশদী
     

Related Topics

টপ নিউজ

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস / সান্তিয়াগো মুতিস দুরান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। সূত্র: ড. ম্যানেল এস্টেলার
    ১১৭ বছর বেঁচে থাকা বিশ্বের প্রবীণতম নারীর জিন বিশ্লেষণে দীর্ঘায়ুর রহস্য বের করলেন বিজ্ঞানীরা
  • সুভাষ ঘাই। ছবি : সংগৃহীত
    সুভাষ ঘাই: ১৫ বছরে তৈরি করেন ৭ ব্লকবাস্টার! চার অভিনেতাকে বানিয়েছেন সুপারস্টার; ‘তারকা তৈরির কারিগর’
  • আবুধাবিতে পরিকল্পিত নেট-জিরো মসজিদের প্রবেশদ্বারের নকশা। সূত্র : অরুপ
    কাদামাটি আর সৌরশক্তিতে গড়া বিশ্বের প্রথম 'নেট-জিরো এনার্জি' মসজিদ
  • নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
    রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে
  • কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
    ৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র
  • ছবি: সংগৃহীত
    ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত

Related News

  • মার্কেসের গল্প: স্লিপিং বিউটি অ্যান্ড দি এয়ারপ্লেন
  • মার্কেস ছাড়াও যেসব লেখক মরণোত্তর ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ শিকার হয়েছেন
  • ছেলের চোখে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের গোপন জীবন
  • শেষ উপন্যাস নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ ছিল মার্কেসের, কিন্তু সেটি প্রকাশ করছেন ছেলেরা
  • আগামী বছর প্রকাশিত হচ্ছে মার্কেসের সেই বহুল আলোচিত অপ্রকাশিত উপন্যাস

Most Read

1
মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। সূত্র: ড. ম্যানেল এস্টেলার
আন্তর্জাতিক

১১৭ বছর বেঁচে থাকা বিশ্বের প্রবীণতম নারীর জিন বিশ্লেষণে দীর্ঘায়ুর রহস্য বের করলেন বিজ্ঞানীরা

2
সুভাষ ঘাই। ছবি : সংগৃহীত
বিনোদন

সুভাষ ঘাই: ১৫ বছরে তৈরি করেন ৭ ব্লকবাস্টার! চার অভিনেতাকে বানিয়েছেন সুপারস্টার; ‘তারকা তৈরির কারিগর’

3
আবুধাবিতে পরিকল্পিত নেট-জিরো মসজিদের প্রবেশদ্বারের নকশা। সূত্র : অরুপ
আন্তর্জাতিক

কাদামাটি আর সৌরশক্তিতে গড়া বিশ্বের প্রথম 'নেট-জিরো এনার্জি' মসজিদ

4
নিষেধাজ্ঞা পেছাতে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীনের পক্ষে আনা প্রস্তাবে মাত্র চারটি দেশ সমর্থন দেয়। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

রাশিয়া, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হচ্ছে

5
কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আমিরুল ইসলাম (ডানে)। ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক

৪১ জন আত্মীয়-পরিজনকে আনতে ভিসার তদবির, যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে লেবারদলের মেয়র

6
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩৯ জন নিহত

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net