১৯ বছর বয়সেই তিনি বিলিয়নিয়ার! আর তালিকার অন্যরা?

২০২২ সালের বিশ্বের তরুণতম ধনীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন। ধনকুবেরদের এ তালিকায় সবচেয়ে কমবয়সী প্রথম পাঁচে রয়েছেন শোবিজ ও ফ্যাশন জগতের সুপরিচিত আইকন রিহানা। কিন্তু, সর্বকনিষ্ঠ শত কোটি ডলার বিত্তের অধিকারী হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন ১৯ বছরের কেভিন ডেভিড লেহম্যান। আরও রয়েছেন খুচরা ব্যবসার উদ্যমী তরুণ ভারতীয় উদ্যোক্তাও।
কেভিন ডেভিড লেহম্যান (১৯):
মোট সম্পদমূল্য: ২৫০ কোটি ডলার

অগাধ এই বিত্ত সাবালক হওয়ার আগেই পান কেভিন। কেভিনের বয়স যখন মাত্র ১৪, তখন তার বাবা নিজ কোম্পানির ৫০ শতাংশ মালিকানা ছেলের নামে লিখে দেন। এই কোম্পানিটি জার্মানির সবচেয়ে বড় অনলাইন ড্রাগস্টোর ড্রোগারি মার্কেট। তাই নাবালক অবস্থায় বিবেচনা করলেও কেভিন এগিয়ে থাকতেন, তবে সম্পদ মালিকানা পেতে সাবালক হওয়ার আইনি নিয়ম থাকায় গত বছর বা ২০২১ সালে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার মাস কয়েক পর তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্বের তরুণতম ধনী। এ বছরেও সেই স্থান ধরে রেখেছেন। অর্থাৎ, তার চেয়ে কম বয়সের শত কোটি ডলার মূল্যের সম্পদের অধিকারী আর কেউ নেই।
২০২১ সালে কেভিনের পাওয়া মোট অংশীদারিত্ব বা শেয়ারের মূল্য ছিল ৩৩০ কোটি ডলার। চলতি বছর যা কিছুটা কমে হয়েছে ২৫০ কোটি ডলার।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কেভিন ১৮ বছরে পা রাখেন, আর ২০২১ সালের এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের তরুণতম ধনীর খেতাব বাগিয়ে নেন।
ড্রোগারি মার্কেটের বার্ষিক টার্নওভার ১২ বিলিয়ন ডলার।
রিহানা (৩৪):
মোট সম্পদমূল্য: ১৭০ কোটি ডলার

ফোর্বস তালিকায় দ্বিতীয় তরুণতম ধনী গায়িকা ও জনপ্রিয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ৩৪ বছরের রিহানা। তিনি কেভিনের চেয়ে ১৫ বছরের বড়।
ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জের বার্বাডোজ থেকে উঠে আসা 'রিরি' আজ শত কোটি ডলারের মালিক। মোট সম্পদ ১৭০ কোটি ডলার। বিত্তের বড় উৎস তার প্রতিষ্ঠিত প্রসাধনী উদ্যোগ ফেন্টি বিউটি'র সাফল্য। রিহানার সাথে এই কোম্পানির যৌথ মালিকানায় রয়েছে খুচরা বিলাসপণ্য বিক্রেতা এলভিএমএইচ।
২০২০ সালে ফেন্টি বিউটি'র বার্ষিক আয় ছিল ৫৫ কোটি ডলার।
২০২১ সালে স্যাভেজ এক্স ফেন্টি নামক অন্তর্বাস ফ্যাশন লাইনের ৩০ শতাংশ সত্ত্ব বিক্রি করে ১০০ কোটি ডলার পান রিহানা।
এর আগে তিনি ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০২১ সালের 'পাওয়ার ওমেন' তালিকাভুক্ত হন।
চেষ্টা ও প্রতিভা যাদের সাফল্যের পেছনে জ্বলন্ত প্রমাণ, রিহানা তাদেরই একজন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই স্কুলের পাঠ চুকান।
নিজের গায়কী ক্যারিয়ারে রিহানা ভেঙ্গেছেন একাধিক গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। যেমন যুক্তরাজ্যের নাম্বার ওয়ান সিঙ্গেলসে টানা সবচেয়ে বেশি বছর থাকার রেকর্ড গড়েছেন। গড়েছেন আমেরিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় একক সঙ্গীত শিল্পীর রেকর্ড।
লুকাস ওয়ালটন (৩৫):
মোট সম্পদমূল্য: ১,৬৮০ কোটি ডলার

ওয়ালমার্ট প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়ালটনের নাতি হলেন লুকাস ওয়ালটন। অর্থাৎ, পারিবারিক সূত্রে পাওয়া সম্পদে তিনি তৃতীয় প্রজন্মের ধনী।
লুকাসের বয়স ৩৫, আর মোট সম্পদ ১৬.৮ বিলিয়ন ডলার বা তরুণতম ধনী কেভিনের প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ।
২০০৫ সালে তার বাবা জন ওয়ালটন এক বিমান দূর্ঘটনায় নিহত হলে, তার সম্পত্তি লুকাস পান।
পিতার মৃত্যুতে লুকাস পান বাবার মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ আর তার মা পান স্বামীর সম্পদের ছয় ভাগের একভাগ।
লুকাস দানধ্যানেও পিছিয়ে নেই। এরমধ্যেই তিনি তার ভাগের সম্পত্তি থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন ফাউন্ডেশনে দান করেছেন।
টম পার্সন (৩৭):
মোট সম্পদমূল্য: ১৫০ কোটি ডলার

৩৭ বছরের টম পার্সন তৃতীয় প্রজন্মের সুইডিশ বিলিয়নেয়ার। তার বিত্তের উৎস বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন পণ্যের ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম। তার মোট সম্পদ এখন ১৫০ কোটি ডলার।
১৯৪৭ সালে এইচঅ্যান্ডএম প্রতিষ্ঠা করেন তার দাদা এরলিং পার্সন।
বর্তমানে স্টকহোমবাসী টম চলচ্চিত্র নির্মাণেও কাজ করেন।
শচীন বানসাল (৪০):
মোট সম্পদমূল্য: ১৩০ কোটি ডলার

তরুণতম ধনীদের শীর্ষ পাঁচের মধ্যে সবচেয়ে বয়সী হলেন ৪০ বছরের ভারতীয় যুবা শচীন বানসাল। তিনি অনলাইনে পণ্য বিক্রেতা প্ল্যাটফর্ম ফ্লিপকার্টের প্রতিষ্ঠাতা।
লুকাস বা টমের মতো পারিবারিক সম্পদের জোরে নয়, শচীন নিজের চেষ্টায় এসেছেন স্ব-অবস্থানে। ২০০৭ সালে তিনি বন্ধু বিনয় বানসালের সাথে অনলাইনে বই বিক্রির উদ্দেশ্যে ফ্লিপকার্ড প্রতিষ্ঠা করেন, এখন তার মোট সম্পদ ১৩০ কোটি ডলার।
শুরুতে দুই বন্ধু বাড়ি থেকে কাজ করে যে প্রতিষ্ঠান চালাতেন, সেটি আজ ভারতের ই-কমার্স খাতের মহীরুহ। ২০১৮ সালে এই কোম্পানির ৭৭ শতাংশ শেয়ার কেনে ওয়ালমার্ট গ্রুপ। এসময় শচীন তার মালিকানা ১০০ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেন।