যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে আক্রান্ত সর্বোচ্চ ৪০ হাজার, সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত তরুণেরা

স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধি না মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেননি অনেক মার্কিন নাগরিক। যার খেসারত এখন দিতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত এপ্রিলে প্রথম করোনাভাইরাসের মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটিতে গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয় ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে। এর মধ্যে ফ্লোরিডার পরিস্থিতি খুবই নাজুক। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে দৈনিক প্রায় ৯ হাজার জনের সংক্রমণ ধরা পড়ছে।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ধরা পড়ার রেকর্ড হয়, ৩৬ হাজার ১৮৮টি। খবর ব্লুমবার্গ ও দ্য গার্ডিয়ানের।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, বৃহস্পতিবারের ৪০ হাজারের বেশি আক্রান্তের তথ্য যোগ হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটিতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা উন্নীত হয়েছে ২৪ লাখ ১৮ হাজার জনে।
স্বাস্থ্যবিধি না মানায় যুক্তরাষ্ট্রে তরুণেরাই বেশি করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে তরুণদের আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে জানান, দেশটির কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা- সিডিসি'র প্রধান ডক্টর রবার্ট রেডফিল্ড।
যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি পরিস্থিতির এ বিপর্যয় আতঙ্কিত করে তুলেছে ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের। যা অর্থনীতিকে আরও গভীর সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
দরিদ্র দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা:
বৈশ্বিক অনলাইন জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে এক লাখ ৮০ হাজার জন কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এর আগের দিন সংখ্যাটি ছিল এক লাখ ৬ হাজার জন।
এদিন জেনেভা সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মহাপরিচালক তেদ্রোস আঢানম ঘেব্রেইসুস দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঘটছে বলে জানিয়েছিলেন। ধনী ও উন্নত দেশগুলো যখন সংক্রমণ মোকাবিলায় সফল হয়ে লকডাউন শিথিল করছে তার মধ্যেই সংক্রমিতের হার বাড়ছে দরিদ্র দেশে।
এসময় হু মহাপরিচালক বলেন, 'মহামারি থেকে সম্পূর্ণ পরিত্রাণ পেতে পৃথিবীকে আরও দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে। তবে এর মধ্যেই দরিদ্র এবং মধ্য- আয়ের দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি।'
সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে লাতিন আমেরিকায়। বুধবারেই মোট সংক্রমিতের দিক থেকে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে যায় লাতিন আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশ ব্রাজিল। জনবহুল দেশটিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অতি-দারিদ্রের শিকার। প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ আজ শুক্রবার নাগাদ দেশটিতে ৫৫ হাজার জনের বেশি জীবন কেড়ে নিয়েছে।
তবে লকডাউন শিথিল করার পরেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে শঙ্কায় স্পেন মাস্ক পড়ে ঘর থেকে বের হওয়াকে বাধ্যতামূলক করেছে। সংক্রমণ প্রসার রোধে জার্মানিসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও জারি করা হয়েছে বেশ কিছু সতর্কতা।