চীনের আধিপত্য হ্রাসে মহাপরিকল্পনা প্রকাশ যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের আধিপত্য খর্ব করার মহা-পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের এই কৌশলের আওতায় ভারতের নাটকীয় উত্থানের মাধ্যমে চীনকে ঠেকানো এবং বেইজিং- এর সামরিক হুমকি মোকাবিলায় তাইওয়ানকে সক্ষম করে তোলার সুপারিশ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও'ব্রায়ান গত মঙ্গলবার নথিটি প্রকাশের ঘোষণা দেন।
"ইউনাইটেড স্টেটস স্ট্র্যাটেজিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর ইন্দো-প্যাসিফিক" শীর্ষক এ পররাষ্ট্র কৌশলপত্র ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদন দেন। মূলত, এর আওতায় পরবর্তী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সুদূরপ্রসারী বিদেশ নীতি কার্যকর করা হয়।
কৌশলের আওতায় "ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে দূর ভবিষ্যতেও উন্মুক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত" একটি অঞ্চল হিসেবে ধরে রাখার মার্কিন অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হবে বলেই নিজ বিবৃতিতে জানিয়েছেন ও'ব্রায়ান।
তিনি আরও বলেন, "ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে নতুজানু রাখার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে বেইজিং। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে তাদের 'একক লক্ষ্য' বাস্তবায়নে বাধ্য করতে চায় চীনা শাসকগোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের নীতি তার থেকে আলাদা। আমরা ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় মিত্র দেশগুলোর অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।"
প্রকাশিত নথিতে অদূর ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়ার হুমকি দূর করার কথা বলা হয়েছে। আরও আছে ভারতকে দক্ষিণ এশীয় পরাশক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতম সহযোগীতে রূপান্তরের লক্ষ্য। তার পাশাপাশি বিশ্বের সকল দেশকে সঙ্গে করে চীনের তরফ থেকে অন্যদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের কার্যক্রম মোকাবিলায় সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা বলা হয়।
পরিকল্পনায় চীন আগামীদিনে আরও আগ্রাসী হবে, দেওয়া হয় এমন পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত। এরফলে, তাইওয়ান দখলের মতো ঘটনার শঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পদক্ষেপ পরাশক্তিটি যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে চায়।
একইসঙ্গে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো সর্বাধুনিক প্রযুক্তিখাতে চীনের আধিপত্যকে "গুরুতর হুমকি" বলেও সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা লঙ্ঘন হবে বলেই দাবি দেশটির।
কৌশলপত্রটির তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। প্রতিবেদনে " চীনা হুমকিকে 'ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে' দেখানোর অভিযোগ আনে বেইজিং। এর মাধ্যমে চীনের অগ্রগতিতে অন্যায্য রঙ চড়ানোর দাবিও করা হয়।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাঁও লিঝিয়ান আজ বুধবার (১৩ জানুয়ারি) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, "নথির উপকরণে চীনের অগ্রগতি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের অসৎ উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে। তার সঙ্গে দেশটির আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের লক্ষ্যও উঠে আসে। আমাদের উচিৎ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতার ক্ষেত্রে রূপান্তর করা। এখানে ফলাফল শূন্য প্রতিযোগিতায় নেমে কারো পক্ষেই লাভবান হওয়া সম্ভব হবে না।"
- সূত্র: ব্লুমবার্গ