৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনানুষ্ঠানিক পারমাণবিক আলোচনায় অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চলতি বছরের মার্চে আধা-সরকারিভাবে পারমাণবিক অস্ত্র আলোচনা পুনরায় শুরু করেছে। বেইজিংয়ের প্রতিনিধিরা মার্কিন কর্তৃপক্ষকে বলেছে, "তারা [চীন] তাইওয়ান বিষয়ে পারমাণবিক হুমকির আশ্রয় নেবে না।"
আলোচনায় অংশ নেওয়া দুই মার্কিন প্রতিনিধি রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তাইওয়ানের সঙ্গে সংঘাতে পরাজয়ের মুখোমুখি হলে চীন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বা ব্যবহার করার হুমকি দিতে পারে — আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধিদের এমন উদ্বেগ উত্থাপনের পর চীনা প্রতিনিধিরা মার্কিনিদের এমন কিছু না ঘটার বিষয়ে পুনরায় আশ্বস্ত করেন।
বেইজিং গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে তার অঞ্চল হিসেবে দেখে। তবে বেইজিংয়ের এ দাবি তাইপেই সরকার সবসময় প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
ট্র্যাক টু শীর্ষক এ আলোচনার মার্কিন সংগঠক ও হাওয়াই-ভিত্তিক থিংক ট্যাংক প্যাসিফিক ফোরামের পরিচালক ডেভিড সান্তোরো রয়টার্সকে বলেন, "তারা [চীন] মার্কিন পক্ষকে বলেছে যে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করেই তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চিরায়ত যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবে বলেই তাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে।"
ট্র্যাক টু আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদ। তারা এ আলোচনার বন্দোবস্তের সঙ্গে সরাসরি জড়িত না থাকলেও নিজ নিজ সরকারের অবস্থানের বিষয়ে কর্তৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। দুই দেশের সরকারের মধ্যকার আলোচনা 'ট্র্যাক ওয়ান' নামে পরিচিত।
সাংহাইয়ের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত দুই দিনের এ আলোচনায় সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও বুদ্ধিজীবীসহ প্রায় আধ ডজন ব্যক্তি ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেন। অন্যদিকে বেইজিং বুদ্ধিজীবী ও বিশ্লেষকদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়, যার মধ্যে পিপলস লিবারেশন আর্মি বেশ কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে বলেন, "ট্র্যাক টু আলোচনাটি 'উপকারী' হতে পারে।" মুখপাত্র জানান, মার্চের এ বৈঠক সম্পর্কে অবগত থাকলেও স্টেট ডিপার্টমেন্ট এতে অংশ নেয়নি।
তবে এ ধরনের আধাসরকারি আলোচনা যে দুই দেশের সরকারের মধ্যকার আনুষ্ঠানিক আলোচনাকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না, সেটিও উল্লেখ করেন তিনি।
চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যদের এবং বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
পেন্টাগনের অনুমান, বেইজিংয়ের পারমাণবিক অস্ত্রাগার ২০২১ ও ২০২৩ সালের মধ্যে ২০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। অক্টোবরে পেন্টাগন বলেছিল, "তাইওয়ানে চিরায়ত পদ্ধতির যুদ্ধে সামরিক পরাজয় যদি সিসিপি শাসনের জন্য হুমকি তৈরি করে, তাহলে চীন পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারও বিবেচনা করবে।"
তাইওয়ানকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে চীন কখনোই শক্তি প্রদর্শন বন্ধ করেনি এবং গত চার বছরে দ্বীপটির চারপাশে বেইজিং সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে।