উত্তরাধিকারের ভাগিদার যখন বিড়াল...
সম্পত্তির উত্তরাধিকারের অংশীদার হয় সন্তান ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন। যুগে যুগে অনেক হিতৈষীরা জনকল্যাণের কাজেও নিজ সম্পদ দান করে গেছেন। তবে বিড়ালকে সম্পত্তির ভাগ দিয়ে যাওয়ার কথা কেউ শুনেছেন কি?
সম্প্রতি এক ফরাসি ভদ্রলোক তার উইলে সম্পত্তির ভাগ দিয়েছেন কিছু বিড়ালকেও। রাশিয়ার স্টেট হার্মিটেজ মিউজিয়ামের বেজমেন্টে বাস করে এমন কিছু বিড়ালকেই তিনি তার সম্পত্তিরর কিছু অংশ দিয়ে উইল করেছেন।
সেন্ট পিটার্সবার্গের এ জাদুঘরের বেজমেন্ট দীর্ঘদিন ধরেই বিড়ালদের বসতি, বর্তমানে প্রায় ৫০টি বিড়ালের বাস এখানে। সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথের শাসনকাল থেকেই জায়গাটিতে বিড়ালদের বসবাস। ১৭৪১ – ১৭৬১ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার শাসক ছিলেন সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ। অর্থাৎ আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে জায়গাটি বিড়ালদের আবাসস্থল।
জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা রাশিয়ার আরেক সম্রাজ্ঞী ক্যাথেরিন দ্য গ্রেট জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠার পর বিড়ালগুলোকে জাদুঘরের আর্ট গ্যালারির অভিভাবকের মর্যাদা দিয়েছিলেন।
বর্তমানে জাদুঘরের কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবীরাই বিড়ালগুলোর পরিচর্যা করেন। বিড়ালগুলোর পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন সময়েই অনুদান পেয়েছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। বিড়ালগুলোর জন্য নিজস্ব ওয়াশিং মেশিনের ব্যবস্থাও আছে জাদুঘরে। স্থানীয় একজন পশু চিকিৎসক নিয়োজিত আছেন বিড়ালগুলোর পরিচর্যার কাজে।
জাদুঘরটির সাধারণ পরিচালক মিখাইল পিওট্রভস্কি জানিয়েছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফরাসি এ দাতা বিড়ালগুলোর প্রতি ভালোবাসা থেকে তার উইলে সম্পত্তির কিছু অংশ বিড়ালগুলোর নামে লিখে দিয়েছেন। "টাকার অঙ্ক খুব বেশি না হলেও, উইলে সম্পত্তির ভাগ দেয়াই তো একটি অসাধারণ ব্যাপার। তিনি উইল লেখার পর তার আইনজীবী আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। প্রক্রিয়াটি কিছুটা জটিল হলেও এটি অনন্য উদাহরণ নয় কি?"
বিড়ালগুলোকে দেয়া ফরাসি এ দাতার অর্থ দিয়ে বিড়ালগুলোর বসবাসের স্থানের উন্নয়নের জন্য জাদুঘরটির বেজমেন্টের সংস্কার করা হবে।
বিড়ালগুলোর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের উদাহরণ এটিই প্রথম নয়। রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির ফোরটোভ বিড়ালগুলোর নিয়মিত সঙ্গী ছিলেন। তিনি গত মাসে মারা যাওয়ার আগে প্রায়ই বিড়ালগুলোর সাথে সময় কাটাতে জাদুঘরে আসতেন এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন অর্থ সাহায্য করে যেতেন।
- সূত্র: সিএনএন
