‘মিরাজের দাবি সঠিক নয়’- শুনানি শেষে বিসিবি

গত ৩১ জানুয়ারি চট্টগ্রামে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তার দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মধ্যে দিনভর নাটক চলে। হঠাৎ করে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ায় অপমানিত বোধ করা মিরাজ দল ছেড়ে ঢাকা চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। হোটেল থেকে বেরিয়েও পড়েছিলেন তিনি। দিন শেষে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়, চট্টগ্রামেই থেকে যান মিরাজ।
এই ঘটনার পরদিনই বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান শেখ সোহেল জানায়, দুই পক্ষকে শুনানিতে ডাকা হবে। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ৩ জানুয়ারি রাতে বিসিবি কার্যালয়ে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল দুই পক্ষকে।
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিসিবির মনে হয়েছে, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে দুই পক্ষই দুঃখ প্রকাশ করে বিব্রতকর অবস্থা তৈরির দায় স্বীকার করে নিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বিসিবি। এ ছাড়াও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে মিরাজের করা দাবি পুরোপুরি সঠিক মনে হয়নি বিসিবির কাছে।
বিবৃতিতে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, 'আমরা মিরাজ ও চ্যালেঞ্জার্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জনসমক্ষে তাদের প্রতিক্রিয়ার কারণ খুঁজে বের করার জন্য, যা অযৌক্তিক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, উভয় পক্ষই স্বীকার করেছেন যে তারা পরিণতি বিবেচনা না করেই অযৌক্তিকভাবে কাজটি করেছেন।'
'এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার ছিল যা দলের মধ্যেই বন্ধুত্বপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি করা উচিত ছিল। তারা উদ্ভুত জটিলতাকে আরও বাড়তে দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং বোর্ড ও এই টুর্নামেন্টের জন্য বিব্রতকর অবস্থা তৈরির দায় স্বীকার করেছে।'
মিরাজ দাবি করেছিলেন, সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র তিন ঘণ্টা আগে তাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, 'খেলার তিন ঘণ্টা আগে আমাকে বলেছে তুমি অধিনায়কত্ব করছো না। সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। আমি জানতে চেয়েছি কেন আপনারা এমন সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনাদের হয়তো চিন্তা ভাবনা থাকলে আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিতেন, আমি কী বলেছি আমার অধিনায়কত্ব লাগবে? এটাতো খেলোয়াড়ের জন্য অপমানজনক।'
তবে শুনানি শেষে বিসিবির কাছে মনে হয়েছে মিরাজের এই দাবি সঠিক নয়। বিবৃতিতে ইসমাইল হায়দার বলেছেন, ''খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার পর, বোর্ড এই বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়েছে যে এটি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার সমস্যা ছিল যা সমাধান করা হয়েছে। আমরা এটাও বুঝতে পেরেছি যে মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত- যা স্পষ্টতই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত করেছিল- দলটির পরবর্তী ম্যাচ শুরুর যথেষ্ট আগেই ম্যানেজমেন্ট তাকে জানিয়ে দিয়েছিল। খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তাদের এই ইভেন্টের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধকে মনে করিয়ে দিয়েছে বোর্ড এবং শৃঙ্খলা ও সততার বিষয়ে বোর্ডের জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।'