Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
May 09, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, MAY 09, 2025
অন্ধকারের রাজত্বে

ইজেল

জান্নাতুল নাঈম পিয়াল
11 June, 2021, 11:25 pm
Last modified: 11 June, 2021, 11:43 pm

Related News

  • জলবায়ু সম্মেলনের জন্য রাস্তা বানাতে আমাজনে ১০ হাজার একর বন উজাড় ব্রাজিলের
  • কক্সবাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের দখল থেকে ১ হেক্টর বনভূমি উদ্ধার
  • আলতাদীঘি: কীভাবে একটি সংরক্ষণ প্রকল্প জাতীয় উদ্যানের সর্বনাশ ঘটাল
  • ৬৫ মিলিয়ন বছরের পুরোনো আমাজন বন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে: গবেষণা
  • ৮ বছরে মধ্য ঢাকায় সবুজ, ফাঁকা জায়গা কমেছে ১৬ শতাংশ: গবেষণা

অন্ধকারের রাজত্বে

একটি বনভূমি থেকে যদি তার বড় বড় অধিবাসীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তারপরও ওই বনভূমির তেমন কোনো অসুবিধাই হবে না। হরিণ, বন্য শূকর, বাঘ, সিংহ কিংবা অধিকাংশ পাখিও যদি হ্রাস পায়, তারপরও একটি বনভূমির বাস্তুতন্ত্রে খুব কমই শূন্যতা তৈরি হবে।
জান্নাতুল নাঈম পিয়াল
11 June, 2021, 11:25 pm
Last modified: 11 June, 2021, 11:43 pm

আমাদের মানবজাতির কাছে, পানির চেয়েও মাটি অনেক বেশি অজ্ঞাত ও অস্পষ্ট। এবং এ কথা আক্ষরিক ও রুপক, দুই অর্থেই সমানভাবে প্রযোজ্য। 

এটা অবশ্যই সত্যি যে আমরা চন্দ্রপৃষ্ঠ সম্পর্কে যতটা জানি, সমুদ্রতল সম্পর্কে ততটা জানি না। তবে আরও বেশি সত্যি হলো এ কথা যে আমরা মাটিতে উদ্ভূত প্রাণ সম্পর্কেও প্রায় কিছুই জানি না। ভাসাভাসা জ্ঞানের উপর ভর করে পার করছি দিন।

হ্যাঁ, মাটিতে বেড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রজাতিকেই আমরা চিহ্নিত করেছি, তাদের সম্পর্কে জেনেছি, এবং সেসব জ্ঞান লিপিবদ্ধ করে বইয়ের পাতা ভরিয়ে তুলেছি। কিন্তু তারপরও, আমাদের পায়ের তলার মাটিতে যে জটিল ও কঠিন জীবজগতের অস্তিত্ব বিদ্যমান, তাদের সম্পর্কে আমাদের এখনো অনেক কিছুই জানা বাকি। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যেকোনো বনভূমির মোট জীবসমষ্টির প্রায় অর্ধেক সম্পর্কেই আমাদের ন্যূনতম ধারণা নেই। কারণ, সেসব জীবের অধিকাংশকেই যে খালি চোখে দেখা যায় না। আর হয়তো সে কারণেই, নেকড়ে, কালো কাঠঠোকরা কিংবা ফায়ার স্যালামান্ডার প্রভৃতি সম্পর্কে আমাদের যে অসীম আগ্রহ, তার বিন্দুমাত্রও নেই ওইসব ক্ষীণকায় অথবা অদৃশ্য জীবের ব্যাপারে। 

জেনে অবাক হতে পারেন, কিন্তু একটি বনভূমি থেকে যদি তার বড় বড় অধিবাসীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তারপরও ওই বনভূমির তেমন কোনো অসুবিধাই হবে না। হরিণ, বন্য শূকর, বাঘ, সিংহ কিংবা অধিকাংশ পাখিও যদি হ্রাস পায়, তারপরও একটি বনভূমির বাস্তুতন্ত্রে খুব কমই শূন্যতা তৈরি হবে। 

আরও সাংঘাতিক সত্যি হলো, উপরোল্লিখিত পশু-পাখিগুলো যদি সবই একসাথে উধাও হয়ে যায়, তারপরও, খুব বড় কোনো হোঁচট কিংবা হেঁচকি ছাড়াই, একটি বনভূমি তার স্বাভাবিক জীবনযাপন অব্যাহত রাখতে পারবে। 

একটি বনভূমি থেকে যদি তার বড় বড় অধিবাসীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তারপরও ওই বনভূমির তেমন কোনো অসুবিধাই হবে না।

কিন্তু একই কথা আমরা বলতে পারব না, যদি ওইসব জীবজন্তুর পায়ের তলার মাটিতে জন্মানো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণগুলোর বিলুপ্তি ঘটে। কেননা, তারাই হলো প্রকৃত সংখ্যাগরিষ্ঠ। পৃথিবী নামক গ্রহে এই মুহূর্তে যত মানুষের বাস, বনভূমির একমুঠো মাটিতেও চলে তারচেয়ে অধিক সংখ্যক প্রজাতির আনাগোনা। 

মানে, বিষয়টা অনেকটা এমন যে, আপনি যদি কোনো বনভূমি থেকে এক চা-চামচ পরিমাণ মাটি তোলেন, তার ভিতরেই এত পরিমাণ ছত্রাক তন্তু পাওয়া যাবে যে সেই তন্তুগুলোকে পরপর সাজালে তাদের দৈর্ঘ্য কয়েক মাইল হয়ে যাবে। তারাই মাটিতে বাস করে নিয়মিত মাটির রক্ষণাবেক্ষণ করে, রূপান্তর ঘটায়, এবং মাটিকে করে তোলে বৃক্ষরাজির জন্য এক অমূল্য সম্পদ। 

তবে মাটির জীবসমষ্টিকে আতশ কাচের নিচে রাখার আগে, চলুন আপনাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাই সেই সময়ে, যখন প্রথম সৃষ্টি হয়েছে মাটি।

মাটি ছাড়া বনভূমি তৈরিই হতো না। কারণ বৃক্ষের প্রয়োজন তার শেকড়কে কোথাও প্রোথিত করা। কিন্তু কোথায় করবে? পাথরে? অধিকাংশ পাথরে তা সম্ভবই না। আর যেসব পাথরে সম্ভব, সেগুলোও গাছের শেকড়কে খুব বেশি সহায়তা প্রদানে অক্ষম। পর্যাপ্ত পানি বা খাদ্যও তারা পারে না নিজেদের শরীরে ধারণ করতে। 

ভূ-তাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একসময় — যেমন বরফ যুগে তাপমাত্রা যখন ছিল শূন্যের কাছাকাছি — পাথরে ফাটল ধরত, এবং সেসব বরফের ভাঙা খণ্ড বালু ও ধূলিকণার সাথে মিশে যেত। এভাবে শেষমেশ যা অবশিষ্ট থাকত, তা হলো আলগা পাথরের স্তর। বরফ গলে যাওয়ার পরে, এই পাথরেরা পানির সাথে মিশে নিম্নগামী হতো, তাদের শেষ ঠিকানা হতো বিভিন্ন উপত্যকায়। অথবা ঝড় এসে তাদেরকে দূরে কোথাও উড়িয়ে নিয়ে যেত, সেখানে জমত দশ, বিশ বা ত্রিশ ফুট মোটা পাথরের স্তর।

গাছেই নিরাপদ জীবন এই প্রাণীর

প্রাণের আগমন ঘটেছে আরো অনেক পরে; ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং গাছের চারা রূপে। তারা সকলেই মৃত্যুর পর পচে গিয়ে হিউমাস তৈরি করত। এভাবে হাজার বছর ধরে হিউমাস জমতে জমতে সেগুলো পেয়েছে মাটির রূপ। আর তখন থেকেই মাটি ও গাছ হয়ে উঠেছে পরস্পরের অমূল্য অনুষঙ্গ।   

মাটির গভীরে শেকড় গেঁথে গাছ কেবল নিজের ভালোই করে না, সে মাটিকেও দিতে থাকে দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতা। ফলে ঝড়-বৃষ্টির কবল থেকে রক্ষা পেতে থাকে মাটি। ভূমিক্ষয়ের প্রবণতা হ্রাস পায়, বরং হিউমাসের স্তর আরো গভীর হতে থাকে। এভাবেই সৃষ্টি হয় প্রাথমিক পর্যায়ের পিচ কয়লা।

ভূমিক্ষয়ের প্রসঙ্গ যখন এলোই, এ ব্যাপারে জরুরি কিছু তথ্য তুলে ধরা যাক। এটি হলো বনভূমির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক শত্রুগুলোর মধ্যে একটি। যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেই কমবেশি ভূমিক্ষয় ঘটে। বিশেষত অতিবৃষ্টিতে এটি বেশি দেখা যায়। যদি বৃষ্টির পরিমাণ এতটাই হয় যে বনভূমির মাটি সবটুকু মাটি তাৎক্ষণিকভাবে শুষে নিতে পারে না, তাহলে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি মাটির পৃষ্ঠভাগ দিয়ে ভেসে যায়, এবং যাওয়ার সময় মাটির ছোট ছোট কণাকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। সুতরাং, যখনই দেখবেন পানির রঙ কিছুটা বাদামি, বুঝবেন সেখানে মিশে রয়েছে মূল্যবান মাটি।

একটি বনভূমি ফি বছর প্রতি বর্গমাইলে ২,৯০০ টন মাটি হারাতে পারে। অথচ ভূগর্ভস্থ পাথর থেকে ওই সমপরিমাণ জায়গায় বছরে মাত্র ২৯০ টন নতুন মাটি সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, বনভূমিতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ভূমিক্ষয় ঘটে। এভাবে চলতে থাকলে কোনো একসময় হয়তো কেবল পাথরই টিকে থাকবে।

বনভূমি পর্যবেক্ষণে গেলে এমন অনেক জায়গা দেখা যাবে, যেখানে হয়তো কয়েকশো বছর পূর্বে চাষাবাদ হয়েছে, কিন্তু তার ফলে এখনো সেখানে মাটির স্বল্পতা স্পষ্ট। অন্যদিকে, বনভূমির যেসব জায়গায় কখনোই হাত দেয়া হয়নি, সেগুলো বছরে প্রতি বর্গমাইলে মাত্র ১ থেকে ১৪ টন মাটি হারায়। 

অক্ষত বনভূমিতে, গাছপালার নিচের মাটি সময়ের সাথে সাথে যেমন গভীর হয়, তেমনই সমৃদ্ধ হয়, যাতে করে ওইসব গাছপালা ক্রমাগত নিজেদের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। 

এবার ফেরা যাক মাটিতে বসবাসকারী প্রাণীদের ব্যাপারে। স্বীকার করতেই হবে, তারা খুব একটা আকর্ষণীয় নয়। অতিক্ষুদ্র আকৃতির কারণে অধিকাংশ প্রজাতিকে খালি চোখে দেখাও যায় না। এমনকী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও শনাক্ত করা যায় না অনেককেই। 

তবে বিটল মাইট, স্প্রিংটেইল ও সিউডোসেন্টিপিডরা বনমানুষ কিংবা কুঁজো তিমির মতো নজরকাড়া প্রাণী না হতে পারে, কিন্তু এই খুদে জীবগুলোই বনভূমির বাস্তুতন্ত্রের প্রথম সংযোগ স্থাপনকারী। তাই তাদেরকে প্লাঙ্কটনের (জলজ বাস্তুতন্ত্রের ক্ষুদ্র অথবা আণুবীক্ষণিক জীব) স্থলজ সংস্করণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতেই পারে। 

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হাজার হাজার এ ধরনের জীবের প্রজাতির ব্যাপারে খুব কমই আগ্রহী। এমনকী তাদের নামও রেখেছে এমন সব লাতিন শব্দে, যেগুলো উচ্চারণ করতেই দাঁত ভাঙার জোগাড় হয়। আরো অসংখ্য প্রজাতি আবিষ্কৃত হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনে চলেছে। তবে মনে হয় না তাদের সেই অপেক্ষার পালা খুব তাড়াতাড়ি ফুরোবে। 

তবে এই ভেবেই আমরা স্বস্তিবোধ করতে পারি যে, মাটির জীবজগতের ব্যাপারে এখনো অনেক কিছু বিজ্ঞানীদের অজানা বলেই, আমাদেরও পুঁথিগত জ্ঞানের ঘাটতি তুলনামূলকভাবে বেশ কম!

তবে সে যা-ই হোক, আপাতত আলাপ শুরু করা যাক আবিষ্কৃত খুদে প্রাণীদের নিয়ে। 

শুরুতেই আসা যাক উল্লিখিত বিটল (গুবরে পোকা), কিংবা অরিবাটিড, মাইট ইত্যাদি প্রসঙ্গে। ইউরোপ অঞ্চলেই তাদের প্রায় হাজারখানেক প্রজাতির সন্ধান এখন অবধি পাওয়া গেছে। তাদের দৈর্ঘ্য ০.০৪ ইঞ্চি, এবং দেখতে অতিক্ষুদ্র পা-সম্পন্ন মাকড়সার মতো। তাদের শরীরে দুই ধরনের বাদামি বর্ণ বিদ্যমান, ফলে তারা তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ তথা মাটির সাথে ভালোই মিলে যায়।

মাইটের সঙ্গে আবার মিল রয়েছে হাউজহোল্ড ডাস্ট মাইটের, যারা আমাদের শরীর থেকে ঝরে পড়া ত্বক বা চামড়ার কণা এবং অন্যান্য আবর্জনা খেয়ে বেঁচে থাকে; কিছু কিছু মানুষের অ্যালার্জিরও কারণ হয়। অন্তত কিছু কিছু বিটল মাইট গাছপালার আশেপাশেও একই ধরনের ভূমিকা পালন করে। তারা যদি খেয়ে সাবাড় না করত, তবে প্রতিটি গাছের চারপাশে ঝরে পড়া পাতা ও ছাল-বাকলের উঁচু স্তূপ তৈরি হয়ে যেত। এ কাজ করার জন্য তারা ঝরে পড়া গাছের পাতার জঞ্জালের মাঝে বাস করে, এবং খাদ্য হিসেবে সেগুলোকে গ্রাস করে।

কিছু কিছু বিটল মাইট গাছপালার আশেপাশেও একই ধরনের ভূমিকা পালন করে। তারা যদি খেয়ে সাবাড় না করত, তবে প্রতিটি গাছের চারপাশে ঝরে পড়া পাতা ও ছাল-বাকলের উঁচু স্তূপ তৈরি হয়ে যেত

কিছু কিছু প্রজাতির প্রিয় খাবার আবার ছত্রাক। তারা মাটির অভ্যন্তরে খুদে সুড়ঙ্গের ভেতর টহল দেয়, এবং ছত্রাকের সাদা আঁশ থেকে রস শুষে নেয়। এছাড়া বিটল মাইটরা তাদের ছত্রাকখোর সঙ্গীদের সাথে গাছ থেকে প্রাপ্ত শর্করাও ভাগ করে নেয়। পচা কাঠই হোক কিংবা মৃত শামুক, বিটল মাইটের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ যায় না কিছুই। জীবন ও মৃত্যুর মধ্যকার প্রতিটি সংযোগস্থলেই আবির্ভূত হয় তারা। এজন্য এদেরকে বাস্তুতন্ত্রের মহাগুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে গণ্য করতেই হয়।

কিছু কিছু প্রজাতির প্রিয় খাবার আবার ছত্রাক। তারা মাটির অভ্যন্তরে খুদে সুড়ঙ্গের ভেতর টহল দেয়, এবং ছত্রাকের সাদা আঁশ থেকে রস শুষে নেয়।

এরপর আবার আছে উইভিল (শক্ত খোলযুক্ত গুবরে পোকা)। তারা দেখতে ছোট হাতির মতো, যে হাতি তার বিশালাকার কান হারিয়ে ফেলেছে। এবং বিশ্বব্যাপী এই পোকারই সর্বাধিক প্রজাতি রয়েছে। কেবল ইউরোপেই রয়েছে তাদের প্রায় ১,৪০০ ধরনের প্রজাতি।  

উইভিলদের কাছে অবশ্য ভোজনের চেয়ে বংশবৃদ্ধিই অগ্রাধিকার পায়। নিজেদের লম্বা নাকের সাহায্যে তারা গাছের পাতা ও কাণ্ডে ছোট ছোট গর্ত তৈরি করে, এবং সেখানে ডিম পাড়ে। অন্যান্য শিকারী প্রাণীর কবল থেকে সুরক্ষিত অবস্থায় লার্ভাগুলো উদ্ভিদ শরীরের মাঝে ক্ষুদ্রাকৃতির যাতায়াত পথ তৈরি করে সুখে-শান্তিতে বাস করতে থাকে।  

উইভিলের কিছু প্রজাতি, বিশেষত যারা বনভূমির মাটির পৃষ্ঠদেশে বাস করে, আর উড়তে পারে না। তারা বনভূমির ধীরগতির ছন্দের সাথেই অভ্যস্ত হয়ে যায়। গোটা এক বছরে তারা হয়তো সর্বোচ্চ ৩০ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। তাছাড়া এর বেশি দূরত্ব অতিক্রমের কোনো প্রয়োজনও তো তাদের নেই। একটি গাছের মৃত্যুর ফলে যদি সেই গাছের চারপাশের পরিবেশে পরিবর্তন আসে, তাহলে উইভিলদের একটু কষ্ট করে পরবর্তী গাছের পাশে গিয়ে ঘাঁটি গাড়লেই চলে। 

আপনি যদি কোনো বনভূমিতে উইভিলের দেখা পান, তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে ওই বনভূমির একটি দীর্ঘ ও নিরবচ্ছিন্ন ইতিহাস রয়েছে। যদি কোনো বনভূমিকে মধ্যযুগে কেটে সাফ করা হতো, এবং পরবর্তীতে কোনো সময় আবারো সেখানে নতুন বনভূমি গড়ে তোলা হতো, তাহলে সেই বনভূমিতে আপনি উইভিলের দেখা পেতেন না। কেননা এক বনভূমি থেকে আরেক বনভূমিতে গিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার মতো চলৎশক্তি তাদের নেই। 

এখন পর্যন্ত যেসব প্রাণীর কথা আমি বললাম, তাদের সবার মাঝেই একটি নির্দিষ্ট মিল রয়েছে : তারা সকলেই অতিক্ষুদ্র, এবং সে কারণে, তাদের প্রভাব বিস্তারের বৃত্তটি খুবই সীমিত। কেন্দ্রীয় ইউরোপের প্রাচীন বনভূমিগুলোতে অবশ্য এসব ব্যাপারে খুব একটা কিছু যেত আসত না। কিন্তু এখন মানুষ প্রায় পৃথিবীর সকল বনভূমির রূপই পালটে দিয়েছে। বীচ গাছের বদলে এখন দেখা যায় স্প্রুস গাছ, ওক গাছের বদলে দেবদারু গাছ, প্রবীণ গাছের বদলে নবীন গাছ। এই নতুন ধরনের বনভূমির সঙ্গে অনেক প্রাণীরই রুচি মেলেনি। ফলে সেসব প্রাণীকে দিনের পর দিন অভুক্ত থাকতে হয়েছে, এবং এক পর্যায়ে তাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। 

তবে, এখনো হাতেগোনা অল্প কিছু প্রাচীন পর্ণমোচী বনভূমি রয়েছে, যারা সুদূর অতীতের প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলের ভূমিকা পালন করে, এবং সেসব প্রজাতির প্রকৃত জীববৈচিত্র্যকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। ইউরোপের কোনো কোনো দেশে, যেমন জার্মানী জুড়ে সে দেশের বনবিভাগ চেষ্টা করছে চিরহরিতের জায়গায় বেশি পরিমাণে পর্ণমোচী বনভূমি গড়ে তোলার। 

বনভূমি যদি নতুন গাছে জায়গা করে নেয় সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে অতি ক্ষুদ্র প্রাণীকুল যাদের কথা বললাম, তারা কিভাবে স্থান পরিবর্তন করবে? কারণ গোটা জীবনেই তারা মাত্র ৩ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করে। 

তাহলে, এমন কোনো আশা কি আদৌ রয়েছে যে এখন পর্যন্ত টিকে থাকা প্রাচীন বনভূমিগুলো তাদের স্বরূপ ধরে রাখতে পারবে?

সম্ভব, খুবই সম্ভব।

শিক্ষার্থীরা গবেষণা করে বের করেছে যে আণুবীক্ষণিক জীবেরা — অন্তত যারা চিরহরিৎ বনভূমির সাথে যুক্ত — অবিশ্বাস্য দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম। 

এ ধরনের বনায়ন সংগঠিত হয়েছে মাত্র শতবছর পূর্বে। চিরহরিৎ-নির্ভর বণের গাছের বীজ পাখির পালকের মধ্যে সেটে গিয়ে হাজির হয়েছে অন্য বনে।

পাখিরা বনের মৃত পাতায় ধূলিস্নান করতে চায় তাদের পালক পরিষ্কারের উদ্দেশ্যে। আর সেটি করতে গিয়েই হয়তো তারা তাদের পালকে বহন করেছে ওইসব পাতায় বসবাসরত বীজ, পোকাদের। এবং পরবর্তী কোনো বনভূমিতে ফের ধূলিস্নান করার সময় তারা ঝরিয়ে দিয়েছে পালকে লেগে থাকা ওই ক্ষ্রদ্রাতিক্ষুদ্র জীবদের।

ভবিষ্যতে আরো পরিণত পর্ণমোচী বনভূমিকে বিনা বাধায় বেড়ে উঠতে দেয়া হয়, তাহলে পাখিরাও বরাবরের মতোই তাদেরকে সাহায্য করবে। 

পাখিরা বনের মৃত পাতায় ধূলিস্নান করতে চায় তাদের পালক পরিষ্কারের উদ্দেশ্যে

কিন্তু কার্যকারণ বা প্রভাবক যা-ই হোক না কেন, এই খুদে প্রাণীগুলোর প্রত্যাবর্তনে হয়তো অনেক, অনেক লম্বা সময় লাগবে — এমনটিই জানিয়েছে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার ফলাফল। 

আদিম বনভূমিগুলোতে মানুষের অনুপ্রবেশ ও যথেচ্ছ কর্মকাণ্ড রোধ করা প্রয়োজন। কেবল তখনই প্রাচীন বনভূমিগুলোতেই মাটির জীবসমষ্টি তাদের বৈচিত্র্যকে টিকিয়ে রাখতে পারবে। এবং এই বনভূমিগুলো তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার প্রভাবে হয়তো নিকটবর্তী অন্যান্য স্থানের মাটিও পূর্বাবস্থায় ফেরার পথে কিঞ্চিৎ পা বাড়াতে পারবে। 

এ কথাও মনে রাখুন, এই সমস্ত কিছু সম্ভব করতে কিন্তু মানুষকে কোনো সত্যিকারের ত্যাগই করতে হচ্ছে না। এই একবিংশ শতকে পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন জায়গাতেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বনভূমি সংরক্ষণ কিংবা সংস্কারের খরচকে কমিয়ে আনার। 

কেউ কেউ কর্মসংস্থান ও শিক্ষাকে একীভূত করছে। যেমন : গুয়াতেমালার মায়া বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের পর্যটকরা নিয়োগ দেয় সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের। তা না হলে তো ওই অধিবাসীরা বনভূমি উজাড় করে দিত; কাঠ বিক্রি করত বাজারে, আর বনভূমির শূন্যস্থানে শুরু করত চাষাবাদ। 

এদিকে কোনো কোনো জায়গায়, সংরক্ষণের সাথে যে সম্মান ও ঐতিহ্য জড়িত, সে ব্যাপারেও জোর দেয়া হচ্ছে। যেমন : স্কটল্যান্ডে আপনার সামনে সুযোগ রয়েছে প্রাক্তন জমিদারদের কাছ থেকে ক্যালেডোনিয়ান ফরেস্টের একখণ্ড জমি কিনে নেয়ার, যেন কাঠ বিক্রির প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে হানা দিতে না পারে। 

কোথাও কোথাও আবার এমন দুটি পক্ষও জোট বাঁধছে, যা হয়তো সাধারণ মানুষের চিন্তারও অতীত। যেমন: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশনকে সাহায্য করছে প্রতিরক্ষা বিভাগ, যেন আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিগুলোর আশেপাশের পাইন বনে বাস্তুতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। 

এমন কতভাবেই না বনভূমিকে নিরুপদ্রব অথচ উৎপাদনক্ষম রাখা যায়!আমাদের বনভূমিগুলোও আরও মসযোগ দাবি করে। বন উজাড় সবার আগে প্রতিহত করতে হবে।

  • সূত্র: ইন দ্য রিয়েল্ম অফ ডার্কনেস

 

Related Topics

প্রাণিজগৎ / প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান / বনভূমি / বন উজাড়

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কেন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করতে পারবে না
  • উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ
  • ভারতের রাফাল ধ্বংস করেছে পাকিস্তান, নিশ্চিত করলেন উচ্চপদস্থ ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা
  • ২০২৪ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৩,৩০০ কোটি টাকার মুনাফা, ব্যাংকিং ইতিহাসের সর্বোচ্চ
  • পাকিস্তানে হামলার একদিন পর এখন বিজেপি বলছে, ‘কেউ যুদ্ধ চায় না’
  • ভারতের রাফাল ভূপাতিত করেছে চীনের তৈরি জে-১০সি, দাবি পাকিস্তানের

Related News

  • জলবায়ু সম্মেলনের জন্য রাস্তা বানাতে আমাজনে ১০ হাজার একর বন উজাড় ব্রাজিলের
  • কক্সবাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের দখল থেকে ১ হেক্টর বনভূমি উদ্ধার
  • আলতাদীঘি: কীভাবে একটি সংরক্ষণ প্রকল্প জাতীয় উদ্যানের সর্বনাশ ঘটাল
  • ৬৫ মিলিয়ন বছরের পুরোনো আমাজন বন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে: গবেষণা
  • ৮ বছরে মধ্য ঢাকায় সবুজ, ফাঁকা জায়গা কমেছে ১৬ শতাংশ: গবেষণা

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কেন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করতে পারবে না

2
আন্তর্জাতিক

উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ভারত, গোপন বার্তা, পাকিস্তান-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ

3
আন্তর্জাতিক

ভারতের রাফাল ধ্বংস করেছে পাকিস্তান, নিশ্চিত করলেন উচ্চপদস্থ ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা

4
অর্থনীতি

২০২৪ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৩,৩০০ কোটি টাকার মুনাফা, ব্যাংকিং ইতিহাসের সর্বোচ্চ

5
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে হামলার একদিন পর এখন বিজেপি বলছে, ‘কেউ যুদ্ধ চায় না’

6
আন্তর্জাতিক

ভারতের রাফাল ভূপাতিত করেছে চীনের তৈরি জে-১০সি, দাবি পাকিস্তানের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net