ভাল্লুকের কামড়ে গুরুতর আহত দুই জনকে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম আনলো সেনাবাহিনী

বান্দরবানের দূর্গম চিম্বুকপাড়া এলাকায় পাহাড়ী জঙ্গলে বন্য ভাল্লুকের আক্রমণে গুরুতর আহত শিশুসহ দুই মুরং উপজাতিকে- চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আহতরা হলো শিশু মঙ্গোলীও মুরং (৬) এবং ইয়াং ওয়াই মুরং(৪৮)।
আজ শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দুর্গম বান্দরবান সদর উপজেলার চিম্বুকপাড়া গ্রাম থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন- এর উদ্যোগে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে তাদেরকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসা হয়।
বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত মঙ্গোলীও মুরং- এর বাবা রিং রাং রাও মুরং বলেন, সে চিম্বুক পাড়া জঙ্গলের পাশে খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ একটি হিংস্র ভাল্লুক আক্রমণ করে তাকে। ভাল্লুকের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তার দাদা ইয়ং ওয়াই মুরং । ভাল্লুকটি দুজনকেই মারাত্মকভাবে আহত করে। তাদের দুজনকে উদ্ধার করে বান্দরবান রিজিয়নের আওতায় নিকটস্থ সেনাক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা গুরুতরভাবে মাথায় আঘাত পেয়েছিল।

২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন, তৎক্ষণাৎ আহত দুজনকে যেকোনো ভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পেয়েই দুপুর আড়াইটার দিকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসা হয় তাদের ।
রিং রাং রাও মুরং বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমার সন্তান এবং পিতাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এ ধরনের সহায়তায় আমরা নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি।
রিং রাং রাও মুরং আরো বলেন, আমরা যেই গ্রামে বসবাস করি, সেখান থেকে সড়কে যেতে হলে টানা ৫ ঘন্টা পায়ে হেঁটে যেতে হয়। নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝিরি-ঝরণা, খাল ও গিরিপথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আমাদের । জীবিকার তাগিদে ওই পাহাড়ী জনপদে বসবাস করছি আমরা। হেলিকপ্টার করে আজ এখানে নিয়ে আসা না হলে, আমার পিতা ও সন্তানের সঠিক চিকিৎসা ও তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো না।
উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বেও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও বিজিবির যৌথ প্রচেষ্টায়, গত ৩১ এপ্রিল ২০২০ সোনাপতি চাকমা এবং ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ জতনী তঞ্চংগ্যা নামে দুইজন মৃত্যুপথযাত্রী উপজাতি প্রসূতি নারীকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। পরে তারা ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। বেঁচে যায় ২ নবজাতক ও মায়ের জীবন।