আলীকদম বাজার থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভালুকছানা উদ্ধার
বান্দরবানের আলীকদম বাজারের একটি গলি থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আট থেকে নয় মাস বয়সী একটি কালো ভালুকছানা উদ্ধার করেছে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বন অধিদপ্তরের ঢাকা অফিসের এ ইউনিটের চার সদস্যের একটি দল অভিযান চালিয়ে ভালুকছানাটি উদ্ধার করে।
লামা বিভাগীয় বন বিভাগের অধীন আলীকদম উপজেলার তৈন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার আরিফুল ইসলাম জানান, উদ্ধারের পর ভালুকছানাটিকে চিকিৎসা ও পরিচর্যার জন্য কক্সবাজারের দুলাহাজরা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পাওয়া যায় যে আলীকদম বাজারের একটি গলিতে একটি ভালুকছানা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন করে প্রাণীটিকে দুলাহাজরা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়।
তিনি বলেন, 'সোমবার ছিল আলীকদম বাজারের সাপ্তাহিক হাটের দিন। ধারণা করা হচ্ছে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে একটি বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্র ভালুকছানাটিকে বাজারে এনে বিক্রির চেষ্টা করছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'পাচারচক্রের বিষয়ে গোপন সংবাদ পেয়ে ইউনিটের সদস্যরা আগেই আলীকদমে পৌঁছে অবস্থান নেন। সম্ভবত তাদের উপস্থিতির খবর পেয়ে পাচারকারীরা ভালুকছানাটিকে বাজারের একটি নির্জন গলিতে ফেলে পালিয়ে যায়।'
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ইন্সপেক্টর অসিম মল্লিক বলেন, 'একটি পাচারকারী চক্র বিলুপ্তপ্রায় একটি কালো ভালুকছানাকে অবৈধভাবে সংগ্রহ করে বিক্রির চেষ্টা করছে আমাদের কাছে এমন গোপন সংবাদ ছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আব্দুল্লাহ আল সাদিকসহ আমরা চারজন ঢাকা থেকে আলীকদমে গিয়ে অবস্থান নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'পরে দুপুরের দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাই যে পানবাজার এলাকায় একটি ভালুকছানা পড়ে আছে। পরে সেখান থেকে ভালুক ছানাটিকে জীবিত উদ্ধার করি।'
ইন্সপেক্টর অসিম মল্লিক আরও জানান, ভালুকছানাটিকে উদ্ধারের পর লামা বন বিভাগের সহায়তায় নিরাপদে স্থানান্তর করা হয় এবং পরে চিকিৎসার জন্য সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। পাচারকারী চক্রকে শনাক্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া প্রাণীটির বয়স ৮–৯ মাস। এটি আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষণশীল তালিকায় থাকা একটি প্রজাতি।
তিনি আরও জানান, প্রাণীটিকে কোথা থেকে আনা হয়েছে এবং পাচারচক্রে কারা জড়িত তা জানার জন্য তদন্ত চলছে।
বনবিভাগ ও বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, পাহাড়ি অঞ্চলে বন্যপ্রাণী পাচারের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে গেছে। এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে আলীকদম–লামা এলাকায় বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
