সেন্টমার্টিনের পর্যটন শিল্পের বিকাশে চালু হলো ওয়েবসাইট, মিলবে সব তথ্য
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পর্যটন শিল্পের বিকাশে এবার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে চালু করা হয়েছে mysaintmartinbd.com নামের একটি ওয়েবসাইট।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চালু হওয়া সাইটটিতে এখন সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সব তথ্য ও প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যারা নিজেদের ঘর পর্যটকদের জন্য ভাড়া প্রদান করেন তাদের নাম, ফোন নম্বর ও ভাড়া মূল্য দেখা যাবে। পাশাপাশি আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টের তথ্যও পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইটে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দ্বীপটিতে রাত্রিযাপনের সুযোগ রয়েছে। পর্যটন ব্যতীত সারা বছর সেন্টমার্টিনে সরকারি, বেসরকারি, গবেষণাসহ নানা কাজে মানুষের যাতায়াত থাকে। কিন্তু অনুমতি নেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতায় পড়তে হতো। এখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই অনুমতি নেওয়া যাবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন করা যাবে না। পূর্বের বছরের মতো ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে কক্সবাজার থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ যাতায়াত করবে এবং রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকবে। দুই মাসের পর্যটনে স্থানীয় জনগণের আয়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় সরকার জলবায়ু কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ব্র্যাক কর্তৃক যাচাই করা ৫০০ পরিবারকে ৫৭ লক্ষ টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করেছে। এ অবস্থায় স্থানীয় জনগণ বাড়ি-ঘরের ভাড়া কমে যাওয়াসহ নানা অসুবিধার কথা জানান। ফলে কমিউনিটি পর্যটনের ধারণা থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাইটটি তৈরি করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'দুই মাসের সীমিত পর্যটনে বিলাসবহুল হোটেল রিসোর্টের চাকচিক্যে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে স্থানীয় মানুষের ছোট ছোট হোটেল ও বাসাগুলো। এ বিষয়টিকে মাথায় এনে সেন্টমার্টিনের জনগণকে সীমিত ট্যুরিজমের মাঝেও আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন শতাধিক স্থানীয় মানুষের ঘর-বাড়ি ও ছোট হোটেলকে ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে পর্যটকগণ সরাসরি স্থানীয় মানুষের বাসা বা গেস্টরুম বুক করতে পারবেন। এতে কম খরচে স্থানীয় জনজীবন উপভোগ করা যাবে এবং সেই সাথে সেন্টমার্টিনবাসীর সাথে সরাসরি যোগাযোগের একটি মাধ্যম খুঁজে পাবেন পর্যটকরা।'
তিনি আরও বলেন, ''আমরা কমিউনিটি ট্যুরিজমের ধারণা থেকে এর নাম দিয়েছি 'হোম স্টে'। আমরা সবাই এটি প্রচারের মাধ্যমে সেন্টমার্টিনবাসীর জীবন জীবিকায় ভূমিকা রাখতে পারি। এছাড়া সারাবছর সেন্টমার্টিনে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে মানুষ চলাচল করে (ট্যুরিজম ব্যতীত)। অনেক সময় এই অ্যাপ্রুভাল নিতে অনেক শ্রম ও সময়ের প্রয়োজন হয়। আমরা নিচের ওয়েবসাইটে অনলাইন অ্যাপ্রুভালের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অনলাইনে যাত্রার কারণসহ আবেদন সাবমিট করলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনি মোবাইল থেকেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন অ্যাপ্রুভাল। তবে এ অ্যাপ্রুভাল পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য নয়।''
তিনি আরও জানান, পর্যটককে অবশ্যই সরকারের প্রজ্ঞাপন মেনে সেন্টমার্টিন যেতে হবে। একইসঙ্গে এ ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যাবে সেন্টমার্টিন সম্পর্কিত সকল তথ্য, জাহাজের টিকিট লিংক, সকল দর্শনীয় স্থানের তালিকা, সময়সূচি, ভাড়া, গুরুত্বপূর্ণ নম্বরসমূহ, সরকারের নির্দেশনা ও 'হোম স্টে' এর দুই শতাধিক আবাসন সম্পর্কিত তথ্য।
সাইটটিতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, হাসপাতাল, ইউপি চেয়ারম্যানের ফোন নম্বরের পাশাপাশি দ্বীপে এলাকা ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের নিয়োগ করা বিচকর্মীদের নাম ও ফোন নম্বরও সংযুক্ত রয়েছে।
