নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে সেনাবাহিনী মাঠে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো সদস্যের অবহেলা প্রমাণিত হলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "নির্বাচনের সময় বন্ধ (সেনা মোতায়েন) হবে কেন? আমরা কি তা বন্ধ করছি? নির্বাচন আসুক, তখন আবার জিজ্ঞেস করবেন।"
বিএনপি সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পূর্ব থানার ওসি 'আলহামদুলিল্লাহ, নাটোর-১' লিখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন, যা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "পুলিশের কেউ যদি কোনো প্রার্থীকে বিশেষ সুবিধা দিতে যায় বা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা আশা করছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।"
বিগত সরকারের সময় লুট হওয়া সব অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনের পর সাতটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও আলোচনায় এসেছে। এমন স্পর্শকাতর স্থান থেকে কীভাবে অস্ত্র চুরি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অস্ত্র আদৌ চুরি হয়েছে কি না, তদন্ত শেষে জানা যাবে। চুরি হয়ে থাকলে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি ঠিক কতটি অস্ত্র নিখোঁজ।"
কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ে মামলা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, "প্রত্যেক দুর্ঘটনার পর একটি জিডি করা হয়।"
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়া নিয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় এসব তথ্যের সত্যতা থাকে না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আপনারা সত্য সংবাদ দিলে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রতিহত করা সহজ হবে। সন্দেহ থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।"
উপদেষ্টা বলেন, "উসকানিমূলক বক্তব্য দেশের বাইরে থেকে বেশি আসে। দেশে বসেও যে কেউ করে না তাও নয়। দু-একজন যারা করছে, তাদের পুলিশ আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।"
রাউজানে অভিযানে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও একজন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "রাউজান ও ফটিকছড়ি এলাকা তুলনামূলক কঠিন। এসব এলাকায় অপরাধীরা পাহাড়ে পালিয়ে যায়।"
পুলিশ কমিশন গঠনের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়নি, তবে আল্লাহ চাইলে পুলিশ কমিশন হবে।"
যে-ই হোক—নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কিংবা নাগরিক—হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে কাউকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
তিনি আরও জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট চালু করা হয়েছে এবং ছোটখাটো সমস্যা সমাধান করা হবে।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, আইজিপি বাহারুল আলমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
