আরপিও সংশোধনী: নির্বাচনে ভুয়া খবর ছড়ালে জরিমানাসহ সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড
ডিজিটাল যোগাযোগের যুগে নির্বাচনের সময়ে ভুয়া খবর বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়া এখন বড় হুমকি। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের প্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) অধ্যাদেশ–এ (আরপিও) ভুয়া তথ্য প্রচার রোধে কঠোর আইন সংযোজন করেছে।
সংশোধিত আরপিওতে নতুন করে ৭৩(ক) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে:
যে কেউ ১১ অনুচ্ছেদের অধীনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের আগে, জেনে-বুঝে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সুনাম ক্ষুণ্ণ করার বা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার বা অন্য কোনোভাবে নির্বাচনী সততা ও পরিবেশকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে ম্যানুয়ালি অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সরঞ্জাম দ্বারা তৈরি হোক, এমন কোনো মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য, ছবি, ভিডিও, অডিও বা অন্য কোনো বিষয়বস্তু তৈরি করে, প্রকাশ করে, বিতরণ করে বা প্রচার করে, অথবা বিরোধী প্রার্থী, রাজনৈতিক দল বা কমিশনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াতে স্বয়ংক্রিয় বট, ভুয়া অ্যাকাউন্ট বা সিনথেটিক মিডিয়া ব্যবহার করে, তবে সে ৭৩ অনুচ্ছেদের অধীনে দুর্নীতিমূলক আচরণের জন্য দোষী বলে গণ্য হবে এবং সে অনুসারে শাস্তি পাবে।'
এই অপরাধের শাস্তি আরপিও ১৯৭২-এর ৭৩ ধারার আওতায় নির্ধারিত; যেখানে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যক্তি প্রার্থীকে লক্ষ্য করে হোক বা নির্বাচন প্রক্রিয়া ও জনমত প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে হোক; সব ক্ষেত্রেই এই আইন প্রযোজ্য হবে।
তবে, দায় শুধু ভুয়া তথ্য সৃষ্টিকারীর নয়; এমন তথ্য প্রচার বা বিস্তারে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল, প্রচার সংগঠন ও গণমাধ্যমও যৌথভাবে দায়ী থাকবে। এর ফলে বিভ্রান্তিকর তথ্যের উৎস ও প্রচারক; উভয়কেই আইনের আওতায় আনা হবে।
ভুয়া খবরকে 'দুর্নীতিপূর্ণ কাজের' অন্তর্ভুক্ত করা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এর গুরুতর প্রভাব ও গণতন্ত্রের প্রতি হুমকির বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
