যেভাবে মগবাজারে এলো মগেরা, এখন যেমন আছেন তাদের বংশধরেরা
মগবাজারে কি এখনো মগদের বংশধরেরা আছেন?
২০১০ সালে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেন ঢাকার ইতিহাস গবেষক ও সাংবাদিক আপেল মাহমুদ। অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি বিস্মিত হন—মগবাজার, মধুবাগ, নয়াটোলা, দিলু রোড ও ইস্কাটন রোড এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার নিজেদের মগ রাজবংশের উত্তরসূরি বলে দাবি করে এবং এ পরিচয়ে গর্ববোধও করে।
সাধারণ মানুষের ধারণায় মগরা ছিল দস্যু জাতি—যারা লুটতরাজ ও অরাজকতা সৃষ্টি করত। 'মগের মুল্লুক' প্রবাদটির উৎপত্তিও সেই ইতিহাস থেকেই। মগ জনগোষ্ঠীর বসতি স্থাপনের কারণেই আজ ঢাকার এই ব্যস্ত এলাকার নাম হয়েছে মগবাজার।
পান্ডুর তীরে পুনর্বাসন
এবার চলুন ইতিহাসের পাতা উল্টানো যাক। সোনারগাঁওয়ের মতো সমৃদ্ধ জনপদ ছেড়ে মোগলরা কেন রাজধানী হিসেবে ঢাকাকে বেছে নিয়েছিল? কারণগুলোর একটি ছিল মগ ও পর্তুগিজদের দৌরাত্ম্য ঠেকানো। মগরা তখন দাপিয়ে বেড়াত বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা আর মেঘনা নদীতে।
১৬২০ সালে মগরা প্রথম মোগলদের হাতে পরাজিত হয়। যুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে ৪,০০০ নৌকার বিশাল বহর নিয়ে তারা পশ্চাদপসরণ করে। এরপর ১৬৩০ থেকে ১৬৩৫ সালের দিকে ইতিহাসে আসে আরেক অধ্যায়। ম্যাংগট রায় ওরফে মুকুট রায়—মগ রাজার ভাতিজা ও চট্টগ্রামের গভর্নর—আত্মসমর্পণ করে ধর্মান্তরিত হন। তার সঙ্গে থাকা দলবলকেও তৎকালীন মোগল সুবাদার ঢাকার উত্তর দিকে পান্ডু নদীর তীরে পুনর্বাসন দেন। পরে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর আমলেও কিছু মগ পরিবার এখানে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে।
তখন পান্ডু নদী প্রবাহিত হতো আজকের বাসাবো, খিলগাঁও, মাদারটেক হয়ে; কারওয়ান ছিল তার একটি শাখা। নদীর তীরে তখন ছিল শত শত একর পতিত জমি, চারপাশ ঘন জঙ্গলে ঢাকা। মগরা ছিল পরিশ্রমী ও কর্মঠ জাতি—তারা জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ শুরু করে, ঘরবাড়ি তোলে। যদিও পুরো অঞ্চল তখনও অরণ্যেই ঘেরা ছিল। ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসির মামুন তার স্মৃতি-বিস্মৃতির নগরী গ্রন্থে লিখেছেন, 'একশো-সোয়াশো বছর আগেও মগবাজার ছিল নিবিড় অরণ্য, সেখানে ঘুরে বেড়াত হিংস্র প্রাণী।'
১৮৫৬ সালে ঢাকার এক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়—'ঢাকা অন্ত:পাতি মগবাজারে কয়েকজন অল্পবয়স্ক লোক সমবেত হইয়া তিনটি ব্যাঘ্র শাবক ধরিয়া আনিয়াছে। শুনিলাম শাবক তিনটির এখনও চক্ষু বিকশিত হয় নাই। তাহারা গো-দুগ্ধ পান করিয়া জীবন ধারণ করিতেছে।'
বাগানবাড়ি ছিল সিদ্ধেশ্বরীতে
ঢাকার ইতিহাসবিদ যতীন্দ্র মোহন রায় মগবাজারের মগদের ইতিহাস ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার বর্ণনা অনুযায়ী, সুবেদার ইসলাম খাঁর আমলে আরাকান রাজের মৃত্যু হলে চক্রান্তের মাধ্যমে রাজার এক কর্মচারীর ছেলে সিংহাসন দখল করে।
রাজার ভাই ধরমসা প্রায় পাঁচশত অনুচর নিয়ে ভুলুয়ার ফৌজদারের শরণাপন্ন হন, যিনি তাদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। ইসলাম খাঁ তাঁদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে পান্ডু নদীর তীরে একটি তালুক দান করেন, পাশাপাশি রাজকোষ থেকে অর্থ সহায়তাও দেন। তাদের উদ্যোগেই স্থাপিত হয় বসতবাড়ি, মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা।
জনশ্রুতি আছে, ১৬২৪ সালে শাহজাদা খুররম (পরবর্তীতে সম্রাট শাহজাহান) ঢাকায় এলে মগ নেতারা নানা উপঢৌকন নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক শরীফউদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেছেন, মগদের সঙ্গে আরাকান রাজবংশের সম্পর্ক ছিল গভীর। একসময় তারা ঢাকা আক্রমণ করে লুটতরাজ চালালেও সুবেদার ইসলাম খাঁর কঠোর পদক্ষেপে দমন হয়। পরে মগ রাজবংশের একাংশ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ঢাকায় আশ্রয় নেয়। সুবেদার তাদের ঢাকায় বসবাসের সুযোগ দেন, আর সেই বসতিই সময়ের পরিক্রমায় মগবাজার নামে পরিচিত হয়।
আপেল মাহমুদের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিদ্ধেশ্বরীতে ছিল সরদার পরিবারের একটি বাগানবাড়ি। সিদ্ধেশ্বরী ও মগবাজারের মাঝামাঝি, যেখানে এখন রমনা থানা, তার কাছাকাছি একটি প্রাচীন মসজিদ গড়ে তুলেছিল মগ সম্প্রদায়। মগ রাজার ভ্রাতুষ্পুত্র মুকুট রায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তার অনুগামীরাও মুসলিম হন। তাদের নামাজের জন্যই নির্মিত হয়েছিল সেই মসজিদ।
বাগানবাড়িটি আজ আর নেই, তবে মসজিদটি নতুন রূপে টিকে আছে। কোম্পানি আমলে চার্লস ডয়লি (১৮০৮–১৮১১) যখন ঢাকার কালেক্টর ছিলেন, তিনি বিভিন্ন মোগল স্থাপনার চিত্র আঁকেন—তার মধ্যে মগবাজার মসজিদের ছবিও ছিল। সেটি ছিল এক গম্বুজবিশিষ্ট ছোট পাকা মসজিদ, দরজায় প্রস্তরলিপি খোদাই করা ছিল।
ইতিহাসবিদ হাশেম সূফীর বর্ণনা অনুযায়ী, মসজিদের প্রবেশপথের ওপরে একটি কালো পাথরের শিলালিপি ছিল, যেখানে ফারসিতে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস লিপিবদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময় পর্যন্তও শিলালিপিটি মসজিদের গায়ে বিদ্যমান ছিল।
মগদের বেগুন, লাউয়ের সুখ্যাতি ছিল
মগবাজার চৌহদ্দির মধ্যে ছিল নয়াটোলা, মধুবাগ, মীরবাগ, মীরের টেক, ইস্কাটন, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী ও ওয়্যারলেস এলাকা। ঢাকার ইতিহাস গবেষক আপেল মাহমুদের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়—মগবাজার মোড়ের সরদার বাড়ির পরিবার, দিলু রোডের শেখ দিলু পরিবার, নয়াটোলার শেখ জুম্মন বক্স ও আব্বাস শেখের পরিবার, মধুবাগের আলী বক্সের পরিবার, মীরবাগের মোহাম্মদ আলীর পরিবার, ইস্কাটনের ইউসুফ ও জুলফু বেপারির বংশধর, আর নিউ ইস্কাটনের শামসুদ্দিন শেখের পরিবার—সবাই নিজেদের আদি মগ রাজবংশের উত্তরসূরি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে।
আলী বক্স খানের (১৮৫০–১৯১০) নাতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল হোসেন খান আপেল মাহমুদকে জানান, "এখানে এখনো কিছু আদি পরিবার আছে। এক সময় যাদের একশ-দেড়শ বিঘা জমি ছিল, আজ তাদের অনেকেই নিঃস্ব। সহজ-সরল এসব মানুষ আধুনিক নগরায়নের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি।"
তিনি আরও বলেন, "আমি ছোটবেলায় দেখেছি তারা নয়াটোলা ঝিলে গোসল করতেন, ধান চাষ করতেন, মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। দেশভাগের আগে মগবাজার, বেগুনবাড়ি, নয়াটোলা, মধুবাগ—সব জায়গায় লোকসংখ্যা ছিল অল্প। তারা মূলত কৃষিজীবী ছিলেন। মগবাজারের বেগুন আর লাউ পুরান ঢাকার রইসদের কাছে ছিল বেশ জনপ্রিয়।"
নবাব গনি পাগড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন
মগবাজার মোড়ের সরদার পরিবার ঢাকাজুড়ে ছিল খ্যাতনামা। পরিবারের প্রথম সরদার ছিলেন রহিম বক্সের ছেলে হানিফ বক্স, যাকে নিজ হাতে পাগড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন নবাব আব্দুল গনি। পরবর্তী প্রজন্মে তার উত্তরসূরি ওসমান গনি (১৯০৬–১৯৭৬) ছিলেন বাইশ পঞ্চায়েতের সরদার। মগবাজার মোড় থেকে তেজগাঁওয়ের দিকে যে রাস্তা এফডিসির দিকে বেঁকে গেছে, সেটির নামকরণ হয়েছে তার নামেই—ওসমান গনি সড়ক।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন স্থাপিত নামফলকে লেখা আছে—ব্রিটিশ আমল থেকেই তিনি ছিলেন খ্যাতনামা সমাজসেবক, উদার মনের অধিকারী ও দানবীর। মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠায় তিনি নিজস্ব জমি ও অর্থ দান করেছিলেন। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
গবেষক আপেল মাহমুদ বলেন, "বাইশ পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ সরদার ছিলেন মুসলিম লীগের সমর্থক। তবে কাদের সরদারের নেতৃত্বে ছোট একটি অংশ ছিল তুলনামূলক প্রগতিশীল। ওসমান গনি সরদার সেই অংশের অন্যতম প্রতিনিধি, যিনি ইতিহাসে নিজের নাম রেখে গেছেন।"
ওসমান গনির ছেলে আকতার সরদারকে বলা হতো ঢাকার জীবিত শেষ সরদার। পঁচাশি বছর বয়সে মৃত্যুর আগে তিনি আপেল মাহমুদকে বলেছিলেন, "প্রায় চারশ বছর ধরে আমরা এখানে বসবাস করছি। মোগল, কোম্পানি, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান—সব আমলেই আমরা সরদারের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন তো আর সেই ঢাকা নেই। ইস্কাটনে পঁচাত্তর টাকায় এক বিঘা জমি বিক্রি হয়েছিল। দুই মণ চালের পোলাও রান্না করলে মগবাজার, ইস্কাটন আর সিদ্ধেশ্বরীর সব মানুষকে খাওয়ানো যেত।"
ঢাকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সম্পর্কে ইতিহাসবিদ নাজির হোসেন তার কিংবদন্তির ঢাকা গ্রন্থে লিখেছেন—'মুঘল আমল থেকেই ঢাকায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু ছিল। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তিন এসেছে বার বার। নতুন নতুন আইন কানুন চালু হয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় তেমন পরিবর্তন হয়নি।'
শংকর কোম্পানির সাদা লুঙ্গি
মগবাজার মোড়ে পারটেক্স বোর্ডের দোকান চালান শেখতার, ওরফে গনি সরদার—আকতার সরদারের ছেলে। দোকানের নিচতলায় তার সাথে দেখা হলো, গল্পও হলো দীর্ঘক্ষণ। বয়স ৪৬, গড়নে লম্বা ও সুঠাম।
হাসতে হাসতে বললেন, "আমার দাদাও (ওসমান গনি সরদার) ছিলেন ছয় ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা, চওড়া বুকের মানুষ। ছিলেন উদার, মুক্তহস্ত, অতিথিপরায়ণ। বাবা তার সেই সিলসিলাই পেয়েছিলেন—খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে ছিলেন ভীষণ আন্তরিক। সবসময় শংকর কোম্পানির লাল পাড় সাদা লুঙ্গি আর বেপারি পাঞ্জাবি পরতেন। হিন্দি আর উর্দুতে দারুণ সাবলীল ছিলেন। বিচার বসার আগে বাদী-বিবাদী দুই পক্ষকেই ভালো করে খাওয়াতেন, যেন সহজে সমাধান হয়।"
"দাদার লাল রঙের তুর্কি ফেজ টুপি বাবা খুব ভালোবাসতেন। রেলগেটের পাশে জাফরান হোটেলের পর ছিল একটি আমগাছ, বিকেলে সমবয়সীদের নিয়ে সেখানে বাদাম আর চিড়াভাজা খেতে খেতে গল্প করতেন," বললেন তিনি।
সরদার পরিবারের পুরোনো বাড়িটি ছিল চুন-সুড়কির একতলা ঘর। উঠোনে ছিল আম ও কাঠাল গাছ, পেছনে গোয়ালঘর। সংলগ্ন খালি জায়গায় চাষ হতো পোলাওয়ের চাল।
গনির খালাতো ভাই মো. খোকনের বয়স এখন ৫৪, ছোটবেলা কাটিয়েছেন সরদার বাড়িতেই। তিনি বলেন, "বাড়ির পেছনে বাগানবাড়ির একটা পুকুর ছিল—ওখানেই এখন সেঞ্চুরি আর্কেড শপিং মল। আমরা সেই পুকুরে গোসল করতাম। পরে জায়গাটা পরিচিত হয় ইস্পাহানি পুকুর নামে।"
তখন রামপুরা খাল ছিল সচল। বেরাইদ, সাঁতারকুল থেকে নৌকা ভর্তি কাঠাল আর মাটির তৈজসপত্র আসত মগবাজারে। সরদার পরিবারের লোকজন বিকেলে অবসর কাটাতে নৌকায় করে বেরাইদে বেড়াতে যেতেন। মেয়েরা আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যেতেন চারদিক ঘেরা ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে; এটিই ছিল তখনকার ঢাকার এক ভিন্ন সৌন্দর্য।
বেরাইদের বেহালাবাদক
আকতার সরদারের ভাই শাহাবুদ্দিন সরদারের মেয়ে আসমা জেরিন ঝুমু—যিনি নিজেকে ভালোবেসে বলেন 'মগ রাজকন্যা'—একসময় সংসদ সদস্যও ছিলেন। আপেল মাহমুদকে তিনি বলেন, "ইতিহাসে যে প্রাচীন মসজিদটির কথা বলা হয়, সেটি ছিল আমাদের পারিবারিক মসজিদ। মগবাজার মোড়ে আমরা প্রথম শনেরঘরে যে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, সেটিই এখনকার মগবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন সাহসী, অদম্য, কিন্তু একই সঙ্গে ছিলেন সহজ-সরল ও উদার হৃদয়ের মানুষ। বিলাসী জীবনের টানে শত শত একর জমি হারিয়ে ফেলেছেন তারা। বাগানবাড়ির বিশাল পুকুরে মাছ শিকার, বাইজিদের নাচ দেখা আর বিচার-সালিস—এসবেই কাটত তাদের সময়। তখন ঢাকায় কোনো ডেকরেটর ছিল না। অনুষ্ঠানের সামগ্রী যেমন শতরঞ্জি, সামিয়ানা বা তৈজসপত্র—সবই এলাকাবাসী নিত আমাদের বাড়ি থেকে। ঢাকার নবাব ও ভাওয়াল রাজারা আমাদের বাড়িতে এসে সময় কাটাতেন।"
নয়াটোলার শেখ জুম্মন বক্সের বংশধর সাদেক বক্সের ছেলে, সাংবাদিক সায়েদুল ইসলাম বাদল জানান, "আমাদের পূর্বপুরুষরা চট্টগ্রাম থেকে এসে এখানে বসতি গড়েন। মগবাজারের পীর শাহ নূরীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন তারা। তখন জমি-জমার মালিকানা ও কর্তৃত্বও ছিল আমাদের পরিবারের হাতে। কিন্তু বিলাসী জীবনে মগ্ন হয়ে অনেকেই সেই সম্পদ হারিয়ে ফেলেন। আমার বাবা সাদেক বক্স গান-বাজনায় আসক্ত ছিলেন—একজন দক্ষ বেহালাবাদক হিসেবে বেরাইদ ও সাঁতারকুল এলাকায় তার বেশ নাম ছিল তার।"
মগবাজারের আরাকানি মগদের বর্তমান বংশধরদের প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, "আজ যারা নিজেদের আদি মগদের উত্তরসূরি দাবি করছেন, তাদের বক্তব্য পুরোপুরি ভিত্তিহীন নয়। তবে এই বিষয়ে আরও গভীর গবেষণা প্রয়োজন।"
