ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ, প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
অসুস্থ এক শ্রমিককে ছুটি না দেওয়া ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর অংশে অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে চট্টগ্রামমুখী লেনে প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মহাসড়কের মদনপুর অংশে তারা অবরোধ শুরু করেন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেলা ১২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।
জানা যায়, বন্দর উপজেলার 'লারিস ফ্যাশন' নামে একটি গার্মেন্টসের এক নারী শ্রমিক অসুস্থ অবস্থায় ডিউটি করছিলেন। গতকাল তিনি ছুটির আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুর করেনি এবং তাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়। পরে তিনি অতিরিক্ত অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন। সহকর্মীরা তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও ছুটি না দেওয়া ও চিকিৎসা না পাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। মালিকপক্ষের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা সড়ক অবরোধে নামেন।
এ বিষয়ে 'লারিস ফ্যাশন'-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল বলেন, 'গতকাল আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওইখানে মৃত্যু হয়। এটা তো আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এবং মৃত্যুর পর দাফন সম্পন্ন করতে যত কার্যক্রম ছিল সবই আমাদের কোম্পানি থেকে করানো হয়েছে। মৃত্যুর পেছনে তো কারো হাত থাকে না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা ওই শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা তাদেরকে কথা দিয়েছি যে সকল প্রকার সাহায্য করবো। আমাদের কোম্পানি থেকে তাদের জন্য অর্থনৈতিক একটা ব্যবস্থাও করা হবে। তবে আমাদের কোম্পানির শ্রমিকদের দাবি যে ওই ফ্লোরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা লাগবে। আমরা তাতেও রাজি হয়েছি। কিন্তু তারা তবুও সড়ক অবরোধ করেছে।'
বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী— এমন অভিযোগে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
