সংসদীয় আসন সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরে ২ মহাসড়ক অবরোধ, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

ফরিদপুরে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে গিয়ে ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়নকে অন্য উপজেলায় যুক্ত করার প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক গাছ কেটে ও ট্রায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে রাজধানী ঢাকার সাথে ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সম্প্রতি প্রকাশিত গেজেটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়ন ও হামিরদী ইউনিয়ন দুটি নগরকান্দা উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে এবং সীমানা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করছেন তারা।

আজ সকাল আটটা থেকে দুটি ইউনিয়নের সীমানাবর্তী সুয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও হামিরদী বাসস্ট্যান্ডসহ কয়েকটি জায়গায় গাছ কেটে ও ট্রায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। এ সময় দুটি মহাসড়কের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো ছাড়া কোন কিছুই যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
অবরোধকারীরা জানান, '১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে আমরা ভাঙ্গা উপজেলাবাসী এক আত্মার বন্ধনে এক পরিবার। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আমরা মানি না।'

তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি অতি দ্রুত দুটি ইউনিয়নকে পূণরায় ভাঙ্গার সাথে যুক্ত করার দাবি জানান। আর যতক্ষণ পর্যন্ত এই দাবি বাস্তবায়ন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হবে বলেও তারা হুশিয়ার দেন।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান বলেন, 'দুটি মহাসড়কে গাছ কেটে ও ট্রায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন স্থানীয়রা।' তিনি জানান, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে দুটি ইউনিয়ন ভাঙ্গা থেকে নগরকান্দায় যুক্ত হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে প্রতিবাদ করতে এসে হাবিবুর রহমান হবি(৫৫) নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও তার সঠিক মৃত্যু নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তীব্র রোদে অজ্ঞান হয়ে হিট স্ট্রোকে তিনি মারা যান বলে স্বজনরা দাবি করেন। নিহত হাবিবুর ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের চরকান্দা গ্রামের মৃত আজিজ শেখের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নিহতের স্বজন আবু সাইদ মুন্সি। তিনি দাবি করে বলেন, 'তিনি আন্দোলনে অংশ নেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রখর রোদ্রের তাপে হিট স্ট্রোক করেন তিনি। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।'
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানসিভ জুবায়ের নাদিম বলেন, 'স্ট্রোক করে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।'
তবে রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা জানান, তিনি একজন মুদি দোকানি। দোকানে তিনি স্ট্রোক করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার প্রায় সাত ঘন্টা ঢাকার সাথে দক্ষিণবঙ্গের পুরোপুরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন অবরোধকারীরা। পরে তিন দিনের আলটিমেটামের আশ্বাসে ওই দিন সন্ধ্যায় অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।