বিক্ষোভের মাঝেই দায়িত্ব নিলেন ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নু দায়িত্ব নেওয়ার দিনই ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে। এ সময় নতুন প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, বাজেট ঘাটতি কমাতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সহযোগিতার পথ খুঁজে বের করবেন এবং একইসঙ্গে নতুন নীতি প্রণয়নের দিকেও নজর দেবেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সেবাস্তিয়েন লেকর্নু দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এমন মন্তব্য করেন।
এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা লেকর্নু দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, 'বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে সরকারকে আরও সৃজনশীল, কখনো আরও কৌশলী, আরও সিরিয়াস হতে হবে। তবে এক্ষত্রে ভাঙন বা পরিবর্তন প্রয়োজন পড়বে।'
সংসদে ২০২৬ সালের বাজেট পাস করানো এখন লেকর্নুর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশটির সংসদ তিনটি মতাদর্শিক দলে বিভক্ত। উল্লেখ্য, ইউরোজোনের মধ্যে ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি সবচেয়ে বেশি। দেশটির সবাই ঘাটতি কমানো জরুরি বলে মনে করে কিন্তু কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে ঐকমত্য নেই।
আগামী অক্টোবরের ৭ তারিখের মধ্যে বাজেটের পূর্ণাঙ্গ খসড়া সংসদে জমা দিতে হবে লেকর্নুকে, যদিও এই সময় ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো যায়। কিন্তু এরপর আর বছরের মধ্যে বাজেট পাস করার সুযোগ থাকবে না।
লেকর্নুর নিয়োগকে ঘিরে রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত নেই। সংসদে বামপন্থীরা তৎক্ষণাৎ অনাস্থা প্রস্তাব আনার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে চরম ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) শর্তসাপেক্ষে বাজেট নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছে।
আরএন বর্তমানে ফ্রান্সের সংসদে সবচেয়ে বড় দল, তাই অনাস্থা প্রস্তাব টিকবে কি না, সে ক্ষেত্রে দলটির ভূমিকা হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। লেকর্নুকে ম্যাক্রোঁর দলের মধ্যে আরএনের প্রতি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মনে করা হয়। গত বছর তিনি আরএন নেতা জর্দান বার্দেলার সঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছিলেন।
বাজেট পাস করানোর ক্ষেত্রে লেকর্নুকে জটিল পথ পাড়ি দিতে হবে। কারণ দেশটির সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে তাকে সমঝোতা করতে হবে। এ দলটি বাজেট কাটছাঁট করতে ও ধনীদের ওপর কর বাড়াতে চায়। অন্যদিকে লেকর্নুর সাবেক দল রিপাবলিকানরা কর বৃদ্ধির ঘোর বিরোধী।
এদিকে ফ্রান্সজুড়ে হাজারো মানুষ 'ব্লক এভরিথিং' বা 'সবকিছু অচল' শিরোনামে বিক্ষোভে নামে। এ আন্দোলন মূলত ম্যাক্রোঁ সরকার, প্রস্তাবিত বাজেট কাটছাঁট এবং গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে করা হচ্ছে।