রোহিঙ্গা বিষয়ে সম্মেলনে অংশ নিতে কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার একটি প্রধান বিষয় হিসেবে ফিরিয়ে আনতে ও মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী রোববার (২৪ আগস্ট) থেকে কক্সবাজারে তিন দিনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২৫ আগস্ট সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং সম্মেলনটি ২৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে নিউইয়র্ক এবং দোহায় আরও দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সম্মেলনটি আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে।
কক্সবাজার সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। ২৪ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
তিন দিনের এই সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও তহবিলের জন্য একটি বিস্তৃত রোডম্যাপের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
রাখাইন রাজ্যে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নিপীড়ন এবং মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
মিয়ানমার থেকে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই আগমন ২০১৭ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা তাদের আবাসভূমি রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ সহিংসতার কারণে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে, জুনের শেষ নাগাদ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনকে বায়োমেট্রিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যেই জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরে অনানুষ্ঠানিকভাবে বসবাস করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
তাদের জন্য জরুরিভাবে আরও মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। কারণ, নবাগত রোহিঙ্গারা মূলত ক্যাম্পে বসবাসকারীদের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল, যা ব্যাপকভাবে কমছে।