জুলাই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার মাত্র ০.৬৯ শতাংশ

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস- জুলাইয়ে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে মাত্র ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করছে; যা মোট এডিপি বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ । এর আগের অর্থবছরে জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনের কারণে বাস্তবায়ন স্থবির থাকার সময়েও—এর চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছিল।
ওই সময় অর্থাৎ গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছিল ২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা, যা ওই অর্থবছরের এডিপি বরদ্দের ১ দশমিক ০৫ শতাংশ। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
সংস্থার নিজস্ব তহবিলে অর্থায়নসহ এডিপির আকার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।
এডিপি বাস্তবায়ন বিষয়ে গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, জুলাই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার ১ শতাংশের কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এটা কম। এটা ভালো লক্ষণ নয়। কারণ গত অর্থবছরের (২০২৪ সালের জুলাই) একই সময় এডিপি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ ছিল। তখন আন্দোলনের কারণে সবকিছু স্থবির ছিল। কিন্তু, এখনতো এডিপি বাস্তবায়নে গতি আসার কথা।
তিনি বলেন, এখনো শোনা যাচ্ছে অনেক প্রকল্পে ঠিকাদার এখনো যুক্ত হয়নি। আবার প্রকল্প পরিচালকরা স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে গেছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরো বলেন, এবার এডিবি বাস্তবায়ন স্বাভাবিক গতিতে হবে—এটা ভাবা হয়েছিল। এবারের আকারও বাস্তবসম্মত হয়েছে। একারণে পূর্ণ এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে আমরা সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাগাদা দেব। যাতে সব বরাদ্দ খরচ করতে পারে। এ অর্থবছরে কোনো অজুহাত মানা হবে না।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি তহবিল থেকে জুলাই মাসে ব্যয় হয়েছে ৭২৮ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান খাতের বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছে ৮৩৮ কোটি টাকা, যা বৈদেশিক তহবিলের বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ৭৮ কোটি টাকা।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ১১টি জুলাই মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে আছে—স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
জুলাই মাসে ১ শতাংশের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে মাত্র ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয় । তারা বরাদ্দের ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে। এছড়া বড় আকারের বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বরাদ্দের ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে।
এছাড়া এ তালিকায় আছে– শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় (৩.৫১ শতাংশ) , কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ (৩.৪৬ শতাংশ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ (১.৪৩ শতাংশ), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (১.৪৯ শতাংশ), মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় (১.৩৮ শতাংশ), ভূমি মন্ত্রণালয় (২.০১ শতাংশ), নির্বাচন কমিশন (১.৪৯ শতাংশ), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (৭ শতাংশ), অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (২.৭২ শতাংশ), লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ (২.৩৪ শতাংশ)।