মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে ‘সিন্ডিকেট’ সংশ্লিষ্টদের দায়মুক্তিতে ২৩ সংগঠনের উদ্বেগ

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে 'সিন্ডিকেট' সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া এবং তদন্ত স্থগিতের খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অভিবাসন-সংক্রান্ত ২৩টি সংগঠনের জোট বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্র্যান্টস (বিসিএসএম)।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিসিএসএম-এর চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী এবং কো-চেয়ার সৈয়দ সাইফুল হক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, অতীত সিন্ডিকেটে জড়িতদের দায়মুক্তি দিলে ভবিষ্যতে একই ধরনের দুর্নীতি ও শোষণের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
২৩টি সংগঠনের এই জোটের মধ্যে রয়েছে: রামরু, ব্র্যাক, ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ওকাপ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ আরও কয়েকটি সংগঠন।
১১ আগস্ট দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে উল্লেখ করা হয়, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টতা থেকে সাবেক সংসদ সদস্য লোটাস কামালের পরিবারের সদস্যসহ আরও কয়েকজন সাবেক এমপিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি জানায়, বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার অনুরোধে ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিকে 'গভীর উদ্বেগজনক' আখ্যা দিয়ে বিসিএসএম বলেছে, অতীতে সিন্ডিকেটের কারণে যে অনিয়ম হয়েছিল এবং যার ফলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়, সেসব যেন পুনরায় না ঘটে। তারা পূর্বের দুর্নীতির অভিযোগে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্ত ও বিচারিক তদন্তের দাবি জানায়, যাতে দায়মুক্তির সুযোগ না থাকে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে বাংলাদেশি কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি'র পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি অর্থ আদায় করা হয়েছে। এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে সরকারের অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র, গণমাধ্যম প্রতিবেদন ও দুদকের অভিযোগ থেকে জানা গেছে। কিন্তু এসব দুর্নীতির এখনও সুষ্ঠু বিচার হয়নি।
বিসিএসএম'এর আশঙ্কা, অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেওয়া হলে পুরনো সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তারা বলেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার উদ্যোগকে যেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বাইরে রাখা না হয়।
জোটের দাবি, প্রধান উপদেষ্টার ১১-১৩ আগস্টের মালয়েশিয়া সফরে এই ইস্যুটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সিন্ডিকেট নির্মূলে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ ও ২০১৮ সালেও দশজনের একটি সিন্ডিকেট গঠিত হয়, যা শ্রমবাজারে ব্যাপক অনিয়মের জন্ম দেয়। তখনও এসব অভিযোগে কেউ শাস্তি পায়নি বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।