বাংলাদেশে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ড. ইউনূসের ‘অসাধারণ অগ্রগতির’ প্রশংসা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অধ্যাপক ইউনূসের 'অসাধারণ অগ্রগতির' প্রশংসা করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
আজ (মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় পুত্রজায়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ইউনূস এখন মালয়েশিয়ার সঙ্গে বিনিয়োগ, বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত করছেন।'
'বাংলাদেশকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করেছি, কারণ আপনাদের শ্রমিকরাও মালয়েশিয়ার উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সাথে মালয়েশিয়ার জাতীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি 'পেট্রোনাসের' জ্বালানি খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে এবং টেলিযোগাযোগ খাতে 'এক্সিয়াটার' সঙ্গেও কাজ চলছে। এবার মালয়েশিয়া হালাল পণ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, গবেষণা ও সেমি-কন্ডাক্টার শিল্পে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়।
শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মানবসম্পদ মন্ত্রী বাংলাদেশিদের জন্য 'মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা' সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছেন। এর মূল উদ্দেশ্য শ্রমিকরা যাতে তাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে পারে এবং নিজেদের চাকরিতে সুরক্ষিত বোধ করে।
তিনি বলেন, 'আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে আটকে পড়া কর্মীদের সহায়তার জন্য।'
আনোয়ার ইব্রাহিম তার গত বছরের ঢাকা সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সফরের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে এটা বোঝানো যে মালয়েশিয়া সবসময় তাদের পাশে আছে। তিনি চান, 'মালয়েশিয়ার সম্ভাবনাময় ও ভালো বন্ধু বাংলাদেশ' যেন নিজের জনগণের জন্য শান্তি ও উন্নতি আনতে পারে।
তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ায় সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্রদের জন্য তার অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য পরিচিত, যার মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ এবং কেদাহ প্রদেশের আলবুখারি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুযোগও অন্তর্ভুক্ত।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর আজ শুরু হয় সফরের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সকাল ১০টায় পুত্রাযায়ায় আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহীম। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই এবং তিনটি নোট বিনিময় হয়।