নাটোরে চাঁদা না দেওয়ায় ১০ দোকানে তালা, জামায়াত নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

চাঁদা না দেওয়ায় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানে তালা লাগিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে আদালতে হাজিরের পর তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, "চাঁদাবাজির মামলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, বেদখল হওয়া দোকানঘরগুলো উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—জোয়াড়ী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি ও আহম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন, তার ভাই জামায়াত কর্মী আজিমুদ্দিন, স্থানীয় বিএনপি কর্মী হায়দার আলী ও তার বাবা মুজিবর রহমান।
বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নওপাড়া গ্রামের কোরবান আলী, শাহ আলম ও মোতালেব হোসেন আহম্মদপুর বাজারে জমি কিনে ১০টি দোকানঘর নির্মাণ করেন। এসএ ও আরএস খতিয়ানে তাদের নাম রয়েছে এবং প্রায় ৭০ বছর ধরে তারা জমিটি ভোগদখলে আছেন ও নিয়মিত খাজনাও দিয়ে আসছেন।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে রুহুল আমিন, আজিমুদ্দিন, হায়দার আলী, মুজিবর রহমানসহ ৪০-৫০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে বাজারে গিয়ে দোকানপ্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কোরবান আলীরা রাজি না হলে অভিযুক্তরা দোকানগুলোতে তালা লাগিয়ে দখলে নেন। দোকান না ছাড়লে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সেনা ক্যাম্প ও বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা যৌথভাবে সন্ধ্যায় অভিযান চালান। এ সময় দোকানগুলোর তালা খুলে সেগুলো মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অভিযুক্ত চারজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মোতালেব হোসেন জানান, "জোয়াড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আবদুল মালেক দোকানপ্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তারা রাজি না হওয়ায় দোকানে তালা দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় দোকানগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।"
তবে গ্রেপ্তারের আগে জামায়াত নেতা রুহুল আমিন চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "দোকানের জমির মালিক আমরা এবং দীর্ঘদিন এই জমি বেহাত ছিল। এখন দখল করে ভাড়া দাবি করায় চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।"
তবে দোকানে তালা দেওয়ার বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।