আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক মহল একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে 'ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, 'নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিতে নতুন নতুন তত্ত্ব সামনে আনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য নানা দর্শনের আড়ালে আন্তর্জাতিক দরজা উন্মুক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।'
গোলাম পরওয়ার বলেন, আমি বলছি না, আমাদের কোনো ভুল নেই, আমরা নিখুঁত—তা না। আমাদের সবার মধ্যেই ভুল-ত্রুটি রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ না থাকলেই যদি আমরা ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ি, তাহলে এই রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্য দিয়ে আবার ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোনো দল বিতর্ক করলেই সেটা মানে নয় যে তারা নির্বাচন চায় না কিংবা নির্বাচন পেছাতে চায়। আলোচনার সময় মতপার্থক্য হতেই পারে, নতুন যুক্তি আসতেই পারে।
আওয়ামী লীগের শাসন শেষ হলেও দেশে ফ্যাসিবাদী অবকাঠামো এখনো বহাল রয়েছে বলে মন্তব্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, হাসিনা চলে গেছেন—এ নিয়ে আত্মতৃপ্তির কিছু নেই। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয় রয়েছে। ফলে একজন ফ্যাসিস্ট বিদায় নিলেও ফ্যাসিবাদ এখনও পুরোপুরি বিদায় হয়নি।
ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা ঘাপটি মেরে আছে। দিল্লির আধিপত্যবাদের কালো থাবা সবদিক থেকে চেপে বসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক নীতি, কূটনীতি—সবকিছুর ওপর এর ছায়া বিস্তৃত হয়েছে। এমনকি আসন্ন নির্বাচন নিয়েও জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে সরকার পরিবর্তনের সময় এলেই পরাশক্তিদের খেলা শুরু হয়। আমরা সেই খেলা দেখতে পাচ্ছি। এজন্য জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
গণ-অভ্যুত্থানের পর নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম করার সুযোগ থাকলেও একটি অপশক্তি সেটিতে বারবার বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এখনই সচেতন হওয়ার সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ।