প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য: সেই সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম চাকরিচ্যুত

অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার ঘটনায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুমকে চাকরিচ্যুত করেছে সরকার।
আজ বুধবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে তাপসী তাবাসসুম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন, 'সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটন পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটন ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে আপনার, মহাশয়! তবে একটা বিষয়ে আপনাকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। তুমি কে আমি কে? রাজাকার–রাজাকার। আপনাদের এ স্লোগানটা যে অক্ষরে অক্ষরে সত্য ছিল এটা এত অল্প সময়ে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার করে দিয়েছেন, এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।'
এ ঘটনায় গত ৬ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুমকে ওএসডি করা হয়। পরদিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। আদালতেও তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদকে নিয়েও বিতর্কিত স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তাপসী তাবাসসুম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৬ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা মোতাবেক অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তাপসী তাবাসসুম নিরাপত্তার কারণে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ না নিয়ে লিখিত জবাব দেন। তার জবাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাপসী তাবাসসুমকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা যথোপযুক্ত গুরুদণ্ড দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন, দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব, পারিপার্শ্বিকতা এবং বিভাগীয় মামলার নথি পর্যালোচনা করে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন একমত পোষণ করে এবং রাষ্ট্রপতি তাকে চাকরিচ্যুতির গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করায় তাকে ওই সাজা দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।