খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে তালা: ওএমএস ডিলারশিপ না পাওয়ার অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী নেতার

খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রির (ওএমএস) ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আন্দোলনকারীদের দাবি, লটারি ছাড়াই অনৈতিকভাবে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে উপজেলার বাগমারা (দক্ষিণ) ইউনিয়নে ডিলার পদে আবেদনকারী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমাই শাখার আহ্বায়ক নোমান হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি এবং ডিলার হতে ব্যর্থ আবেদনকারীরা উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর আগে তারা কার্যালয়ের আগের তালা ভেঙে ফেলেন। ঘটনার পর থেকে ওই কার্যালয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তালা ঝুলতে দেখা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমাই উপজেলা শাখার আহ্বায়ক নোমান হোসেন নিজেও উপজেলার বাগমারা (দক্ষিণ) ইউনিয়নে ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি বাদ পড়েছেন।
নোমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, 'সব কাগজপত্র ঠিকঠাক জমা দিলেও আমাকে কিছু না জানিয়ে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে বিনা লটারিতে ডিলার করা হয়েছে। একইভাবে উপজেলার আরও দুটি ইউনিয়নেও অনিয়ম করে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।'
এ সময় তিনি দাবি করেন, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজিব কুমার দে নীতিমালা উপেক্ষা করে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে এসব নিয়োগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নোমানসহ কয়েকজন আবেদনকারী। নোমান বলেন, 'ডিলার নিয়োগ বাতিল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে তালা দেওয়া হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে তালা খোলা হবে না।'
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রাজিব কুমার দে। তিনি বলেন, 'পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমাদের অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বিষয়টি ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'পত্রিকায় ওএমএস ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর বাগমারা বাজারের জন্য তিনজন আবেদন করলেও একজনের আবেদন অসম্পূর্ণ ছিল। বাকি দুজনের মধ্যে নোমান হোসেন আর্থিকভাবে সচ্ছল নয় এবং তার বিক্রয় এরিয়া বাগমারা বাজারের বাইরে (চেঙ্গাহাটা) হওয়ায় তার আবেদনটা বাদ পড়ছে।'
লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওএমএস ডিলার নিয়োগ কমিটির সভাপতি হিমাদ্রী খীসা জানান, 'তিনটি ইউনিয়নে যথাযথ নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাগমারা (দক্ষিণ) ও ভুলইন (দক্ষিণ) ইউনিয়নে বিকল্প বৈধ প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়োগ দেওয়া হয়। পেরুল (উত্তর) ইউনিয়নে চার বৈধ প্রার্থীর মধ্যে লটারির মাধ্যমে একজনকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে বসে বিষয়টি আপাতত সমাধান করে দিয়েছি। খাদ্য অফিসের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ অফিস সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তালা খোলা হয়নি। বুধবার সকাল থেকে অফিসের কার্যক্রম চলবে।'