বাড়তি মূল্যে স্থিতিশীল চাল, বেড়েছে মুরগি-সবজির দাম

ঈদের পর রাজধানীর বাজারে চালের দাম আগের মতো বাড়তি অবস্থানেই স্থিতিশীল রয়েছে। এর সঙ্গে নতুন করে বেড়েছে সবজি ও মুরগির দাম।
ঈদের পর থেকে প্রতি কেজি চালে ৪ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে বাড়ার পর এখন এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। একই সঙ্গে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে দামে।
শুক্রবার রাজধানীর শাহজাদপুর, নতুনবাজার, বাড্ডা ও রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বরবটি, কাকরোল, উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকায়।
পেঁপে, পটল, শসা ও ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। ঝিঙা ও চিচিঙ্গার দাম কেজিপ্রতি ৬০-৮০ টাকা।
শাহজাদপুরের ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা তাইজুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "আড়তে দাম বেশি যাচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব সবজির দামই ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেকে সময়মতো সবজি তুলতে পারেন না, আবার কারও কারও সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এজন্যই দাম বাড়ছে।"
রাজধানীর খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৭২-৭৪ টাকা। একই চাল মোজাম্মেল ব্র্যান্ডে ৭৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৮-৯০ টাকায়।
মাঝারি মানের চালের মধ্যে ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও পাইজাম চাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৪ টাকায়। মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণার দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে এখন ৫৭-৫৮ টাকা।
কৃষি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নিয়ে পরে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে একদিকে কৃষক লোকসান গুনছেন, অন্যদিকে ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে উচ্চমূল্যে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, "কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এখন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা শুরুতেই কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে নেয়। পরে দাম বাড়িয়ে বাজারে চাল ছাড়ে।"
"গত কয়েক মৌসুম ধরেই তারা এভাবে বাজার প্রভাবিত করছে জানিয়ে নাজের হোসেন আরও বলেন, "প্রতিদিন এক লাখ টনের মতো চালের চাহিদা রয়েছে। তাহলে এক কেজিতে ২ টাকা করে বাড়িয়ে নিলে কত টাকা তারা ভোক্তার পকেট থেকে নিচ্ছে, তা সহজেই বোঝা যায়।"
ঢাকার ব্যবসায়ীরাও বলছেন, ভরা মৌসুমে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গত এক থেকে দেড় মাস ধরে তারা কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে মজুত করেছেন। এখন নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
এদিকে, ঈদের পর ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ১৬০-১৭০ টাকা হয়েছে। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা বলছেন, একের পর এক পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পারিবারিক বাজেট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে।