হুইলচেয়ার থেকে উঠে হেঁটেই বাসায় ঢুকলেন খালেদা জিয়া

দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ (৬ মে) দেশে ফিরে নিজে হেঁটেই বাসায় ঢুকলেন। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে এর আগে জনসম্মুখে প্রায়শই হুইলচেয়ারে দেখা গেলেও আজ তাকে গাড়ি থেকে নেমে সহকারীদের সহায়তায় হেঁটে বাসায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনাটি তার স্বাস্থ্যের উন্নতির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আজ সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে কাতারি একটি রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বড় পুত্র তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান এবং চিকিৎসকসহ একটি প্রতিনিধি দল।

বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, সকাল ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে প্রায় দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের নিজ বাসা 'ফিরোজা'য় পৌঁছান খালেদা জিয়া। এসময় গাড়ির সামনের সিটে বসেছিলেন খালেদা, পেছনের সিটে ছিলেন তার দুই পুত্রবধূ।
খালেদার আগমন উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মী সকাল থেকেই প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে রাস্তার দু'পাশে ভিড় করেন। তারা জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান এবং গাড়িবহরের সঙ্গে রওনা দেন।
এর আগে সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেছিলেন, 'ম্যাডামকে স্বাগত জানাতে কেউ যেন রাস্তায় না দাঁড়ান। সবাই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পতাকা নিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন।'

বিমানবন্দরে খালেদাকে স্বাগত জানান মির্জা ফখরুলসহ দলের সিনিয়র নেতারা। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও অগ্রগতির পথকে সুগম করবে বলে আমরা আশাবাদী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনে ভুগে চিকিৎসার সুযোগ পাননি। ফ্যাসিবাদের পতনের পর অবশেষে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পেরেছেন। দীর্ঘ প্রায় চার মাস পর আজ তিনি দেশে ফিরলেন—এটা আমাদের ও জনগণের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।'
গতকাল (৫ মে) তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাসা থেকেই লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে তিনি চিকিৎসা দেন।
উল্লেখ্য, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বার বার চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি সেই অনুমতি পাননি।