‘সিন্ধু নদীর একফোঁটাও পানি পাকিস্তানকে দেব না’: ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার পর, শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সিন্ধু নদীর পানি ব্যবহারের নানা পরিকল্পনা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে ভারত।
ভারতীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাতিল বলেছেন, 'সিন্ধু নদীর একফোঁটাও পানি পাকিস্তানে যেতে দেব না।'
শুক্রবার দিল্লিতে এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাতিল ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী মনোহর লালের কাছে চুক্তি স্থগিতের পর সিন্দু নদীর পানির ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন কর্মকর্তারা। স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে সিন্ধু অববাহিকার পানি ব্যবহার করা যেতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন উপস্থাপনা তুলে ধরেন তারা।
ভারত সরকার এখন সিন্ধু নদীর পানি ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আইনি ও কারিগরি দিকগুলো খতিয়ে দেখছে।
যদিও বৈঠকের পর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাতিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লেখেন, 'সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে মোদি সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক ও জাতীয় স্বার্থে। আমরা নিশ্চিত করব, সিন্ধু নদীর একফোঁটাও পানি যেন পাকিস্তানে না যায়।'
সিন্ধু পানি চুক্তি ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে সই হয়। নয় বছর আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান এই চুক্তিতে পৌঁছায়। চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদী ব্যবস্থার তিনটি পূর্ব দিকের নদী—সুতলজ, বেয়াস ও রবির সব পানি ভারতের জন্য 'নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত ব্যবহারযোগ্য' হিসেবে নির্ধারিত হয়। আর পশ্চিম দিকের নদী—সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব থেকে পাকিস্তান পানি পায়।
এই চুক্তি স্থগিত করার ফলে সিন্ধু নদীর পানি কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে ভারতের সামনে নতুন বিকল্প তৈরি হয়েছে।
পহেলগাঁও হামলার পরদিন বুধবার ভারতের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস) চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার ভারত পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয়, তারা এই চুক্তি স্থগিত করছে।
এদিকে, পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী সরদার আওয়াইস লেঘারি বৃহস্পতিবার ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত 'তাড়াহুড়ো করে' নেওয়া হয়েছে এবং এর পরিণতি 'জলযুদ্ধের' সমান।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে লেঘারি বলেছেন, 'ভারতের এই অবিবেচক সিদ্ধান্ত জলযুদ্ধের মতো। এটি কাপুরুষোচিত ও অবৈধ কাজ। প্রতিটি ফোঁটা পানি আমাদের অধিকার। আমরা আইনি, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিকভাবে এর পূর্ণ প্রতিরক্ষা করব।'